পাহাড়ের জনপ্রিয় সবজি ‘ বাঁশ কোড়ল’
বাঁশ দিয়ে সাধারণত ঘরবাড়ি, আসবাবপত্রসহ নানা ধরনের পণ্য তৈরি করা হয়। এই বাঁশ আবার পাহাড়ের জনপ্রিয় একটি সবজি। মূলত বাঁশের গোড়ার কচি অংশকে বলা হয় ‘বাঁশ কোড়ল’। এটিই পাহাড়ে জনপ্রিয় সবজিতে রুপান্তরিত হয়েছে।
শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাঙামাটি সদরের বনরুপা , তবলছড়ি এবং রির্জাব বাজার ঘুরে দেখা যায়- অধিকারশই মহিলা বিক্রেতা পাহাড়ে নানা ধরনের সবজি বিক্রি করছেন। শামুক,ব্যাঙ, বেগুন, ঢেড়শ, বরবটি, পুঁইশাক, লাউ, মিষ্টি কুমড়ার লটি, বাঁশকোড়ল সহ নানা পাহাড়ি পদের সবজি। প্রায় সবকটিই জুমে উৎপাদিত। বাঁশ কোড়ল খোসা ছাড়া ৬০- ৭০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
শান্তিবালা চাকমা নামে এক বিক্রেতা জানান, আগের মতো বাঁশ কোড়ল পাওয়া যায় না। এখন বন জঙল খুব একটা দেখা যায় না। এখন প্রায় বাগান থেকে সংগ্রহ করা হয় বাঁশ কোড়ল। এটি বিভিন্ন ভাবে খাওয়া যায়।
সোনালী নামে আরেক বিক্রেতা জানান, বর্ষাকালে এই সবজিটি ঘরে ঘরে পাওয়া যায়। চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা নাপ্পি দিয়ে খায়।
জানা গেছে, পাহাড়ের স্থানীয় বাজারে আগষ্ট থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এই বাঁশ কোড়ল পাওয়া যায়। তখন হাঁট বাজারসহ জেলার বিভিন্ন বাজারে পাওয়া যায় এটি।
চাকমা ভাষায় এটিকে বলা হয় ‘বাচ্চুরি’।
মারমা ভাষায় এটিকে বলে মেহ্যাং, ত্রিপুরাদের কাছে মেওয়া এবং তঞ্চঙ্গ্যা ভাষায় বাচ্ছুই। দিন দিন বাঙালীদের কাছেও এই ভিন্ন ধরনের সবজিটি
জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। মুলি বাঁশ, ডলু, মিতিঙ্গ্যা, ফারুয়া, বাজ্জে, কালিছুরি বাঁশসহ বেশ কয়েক প্রজাতির বাঁশ কোড়ল খাওয়া হয়। তবে গত কয়েক বছর ধরে পাহাড়ের আঞ্চলিক সংগঠনগুলো বিক্রি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। পাহাড়ের প্রকৃতি থেকে বাঁশ বিলপ্তি ঠেকাতে এমন সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়।
খাওয়ার পদ্ধতি
প্রথমে কচি কচি বাঁশ গুলো সংগ্রহ করার পর খোসা সারাতে হয়। এরপর বাঁশ থেকে নরম অংশটুকু নিয়ে শক্ত অংশটা ফেলে দিতে হয়। সাধারণত বাঁশের যেখানে গিরা থাকে সেটা ফেলে দিতে হয়। কারণ সেটা অনেক শক্ত থাকে। কচি অংশ নেওয়ার পরই রান্না করা যায় না। কচি অংশগুলোকে ভালো ভাবে ধুয়ে ১০-১২ মিনিট সিদ্ধ করে নিতে হয়। পরে এটি বিভিন্ন মাংস , ডাল, ভাজি এবং সবজি মিশিয়েও রান্না করা যায়।
দাম
বাঁশ কোড়ল প্রথম বাজারে এলে দাম বেশি থাকে। কেজি ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হয়। তবে ধীরে ধীরে দাম কমতে থাকে। সাধারণ খোসাসহ বাঁশ গ্রামের হাট বাজারে ২০-২৫ টাকা দরে বিক্রি হয়। খোসা ছাড়া বিক্রি হয় ৪০- ৫০ টাকা করা হয়।
চখ/এআর