chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ এর ‘স্মার্ট বন্দর’ হবে চট্টগ্রাম

আগে ম্যানুয়েলে অনেক কাজ করতাম, এখন অধিকাংশ কাজ ডিজিটালাইজেশন পদ্ধতিতে করছি। নতুন নতুন টেকনোলজি যুক্ত হচ্ছে, স্বয়ংক্রিয় সিস্টেমে বা ‘অটোমেশন’ যাচ্ছি। সর্বোপরি ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ এর ‘স্মার্ট বন্দর’ হবে চট্টগ্রাম বন্দর এমন মন্তব্য করেন নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল।

মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হওয়ার পর সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় এ মন্তব্য করেন ।

পেপারলেস বন্দরে রুপান্তর করতে ওয়ান স্টপ সার্ভিস সেন্টার চালু হয়েছে।সিএন্ডএফ এজেন্টদের মাশুল পরিশোধ, অর্ডার সাবমিট, পোর্ট রিলিজ অর্ডার ও কার্ট টিকেট ইস্যু সহ পুরা প্রক্রিয়া দ্রুত সময়ে করা যাবে। ব্যাংকের যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করা যাচ্ছে।

আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ওয়ান স্টপ সার্ভিস ভবনটি র্নিমাণ সম্পন্ন হবে আশা করছি।এ ফলে কম সময়ে এক ছাদের নিচে সব সেবা দিতে পারব বন্দর ব্যবহারকারীদের।আমদানিকারক ও সিএন্ডএফ এজেন্টরা কম সময়ে পন্য খালাস করতে পারছেন। এ ফলে সময় এবং অর্থ দুটি সাশ্রয় হবে।

১০ বছর আগের বন্দর এখন আর নেই।সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে, নতুন নতুন ইকুইপমেন্ট সংযোজন হচ্ছে, কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের অত্যাধুনিক কী সাইড গ্যান্ট্রি ক্রেন সংযোজন, পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণ সহ ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।

তিনি জানান, দেশের ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য চাহিদা, আঞ্চলিক যোগাযোগের ভৌগোলিক অবস্থানগত গুরুত্ব এবং বন্দর কেন্দ্রিক উন্নয়ন চিন্তা চট্টগ্রাম বন্দরের গুরুত্ব বাড়াচ্ছে প্রতিনিয়ত। চট্টগ্রাম বন্দর বিশ্ববাণিজ্যে বাংলাদেশের প্রধান গেটওয়ে হিসেবে কাজ করছে।

আগামী বছরের মধ্যে সাড়ে ১১ মিটার ড্রাফট ও ২৩০ মিটার দৈর্ঘ্যের জাহাজ ভেড়ানো আশা ব্যক্ত করে চেয়ারম্যান বলেন, কর্ণফুলী চ্যানেলটি প্রাকৃতিক চ্যানেল। চ্যানেলের নিজস্ব একটা গতি আছে। ২০১৮ সালে ক্যাপিটাল ড্রেজিং  যার ফলে চ্যানেলে নাব্যতা আরো বেড়েছে। আগামী বছরের মধ্যে আরো  বড় বড় জাহাজ ভেড়ানো সম্ভব হবে।

বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, কোভিড অতিমারি ও রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতির প্রত্যাশিত গতিকে মন্থর করলেও চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে তেমন প্রভাব ফেলেনি বরং কার্গো হ্যান্ডলিং এবং আয় বেড়েছে। জুন মাসে এ বন্দর দিয়ে ৫০ শতাংশ রপ্তানি বেড়েছে, যার ৮৪ শতাংশ তৈরি পোশাক।

বন্দরের সীমানা বৃদ্ধির কথা জানিয়ে বলেন, আগে সদরঘাট এলাকাতে সীমাবদ্ধ ছিল, এখন মাতারবাড়ি পর্যন্ত সীমানা বৃদ্ধি পেয়েছে।বর্হিনোঙর ৭ নটিক্যাল মাইল থেকে ৬২ নটিক্যাল মাইলে উন্নীত হয়েছে। সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রয়েছে অত্যাধুনিক ভেসেল ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট ইনঢরমেশন সিস্টেম বা ভিটিএমআইএস সিস্টেম। পাশাপাশি বন্দরের লজিস্টিক সক্ষমতাও বৃদ্ধি করা হয়েছে।

তিনি বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী দিকনির্দেশনায়, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সার্বিক সমন্বয়ের মাধ্যমে বন্দর কর্তৃপক্ষ দেশের সমুদ্রপথে বহির্বাণিজ্য সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

বন্দরের কাজ সেবা দেওয়া। চট্টগ্রাম বন্দরে দিন নেই, রাত নেই, শুক্রবার ছুটির দিন নেই। ২৪ ঘণ্টা সাত দিন সচল থাকে। আমাদের বন্দর সারা বিশ্বে সমাদৃত। বিভিন্ন দেশ ব্যাপক বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করছে। আগামী তিন বছরে ৫-৭ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হবে আশাকরি। একই সঙ্গে নতুন প্রযুক্তি আসবে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো।

তিনি জানান, ডিসেম্বরে বন্দরের নতুন কেমিক্যাল শেড চালু করা সম্ভব হবে। পিসিটি পরীক্ষামূলক চলছে। বে টার্মিনাল ও ব্রেক ওয়াটারের ডিজাইনের কাজ চলছে। প্রশস্ত চ্যানেলে ১২-১৩ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ২৪ ঘণ্টা অপারেশন করা সম্ভব হবে। মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দরের প্রথম জেটি নির্মাণের কাজ শুরু হবে। ১০-১২ হাজার কনটেইনার নিয়ে জাহাজ ভিড়তে পারবে। বড় জাহাজে পণ্য আনা হলে ভোক্তা পর্যায়ে সুবিধা পাবে।

সভায় বন্দরের সদস্য মো. শহীদুল আলম, পরিচালক মো. মমিনুর রশিদ, সচিব মো. ওমর ফারুক উপস্থিত ছিলেন।

চখ/এআর

এই বিভাগের আরও খবর