chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

রাঙ্গামাটিতে ডায়রিয়ায় নারীর মৃত্যু, অসুস্থ আরো অর্ধশতাধিক

রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।

আজ বুধবার (৭ জুন) ভোররাতে উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের ৭নং ওয়াডের দুর্গম লংথিয়ান পাড়ায় এ ঘটনা ঘটেছে।

এছাড়া লংথিয়ান পাড়া ও আশপাশের বিভিন্ন গ্রামে নারী-শিশু ও বৃদ্ধসহ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে আরও অর্ধশতাধিক মানুষ মুমূর্ষু অবস্থায় রয়েছে।

মৃত গবতি বালা ত্রিপুরা (৫০) ওই এলাকার বাসিন্দা।

সাজেক ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার বনবিহারী চাকমা গবতি বালা ত্রিপুরার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

তিনি জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে সাজেকের লংথিয়ান পাড়া, অরুণ পাড়া, কাইজা পাড়া, রায়না পাড়া ও শিয়ালদহ এলাকাসহ আশপাশের বেশকিছু এলাকায় ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এলাকায় আশপাশে কোনো হাসপাতাল বা কমিউনিটি ক্লিনিক না থাকায় স্থানীয়রা তান্ত্রিকের থেকে চিকিৎসা নিয়ে থাকেন।

তিনি আরও বলেন, এলাকায় যাতায়াতের কোনো সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায়, পায়ে হেঁটে এতদূর থেকে মাচালং ও উপজেলা সদর হাসপাতালে রোগী পাঠানোও সম্ভব নয়। হেলিকপ্টারে সেনাবাহিনীর সহযোগীতায় যদি মেডিকেল টিম পাঠানো যায় তাহলে দ্রুত চিকিৎসা সেবা দেওয়া সম্ভব হবে, না হয় মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

সাজেক ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার জোপুইথাং ত্রিপুরা জানান, শিয়ালদহ এলাকায় ১০ থেকে ১২ জন ডায়রিয়া রোগী রয়েছে। মূলত ছড়ার পানি থেকে এই রোগ ছড়িয়েছে। ২০১৬ সালে এখানে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, পরে সেনাবাহিনীর মেডিকেল টিমের দীর্ঘ এক মাসের চিকিৎসায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এবারও দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে রোগীর সংখ্যা ও মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে।

বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা আক্তার ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাবের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এলাকটি খুবই দুর্গম। পায়ে হাঁটা পথ ছাড়া বিকল্প নেই। মূলত খাবার পানি থেকে এই রোগ ছড়াচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা সংবাদ পাওয়ার পরপরই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার (ইউএইচএফপিও) ডা. অরবিন্দু চাকমার সঙ্গে যোগাযোগ করে একটি মেডিকেল টিম পাঠানোর জন্য নির্দেশ দিয়েছি। প্রাথমিকভাবে পাশের বিজিবি বিওপি থেকেও স্যালাইন সরবরাহ করা হয়েছে, তবে তা খুবই সীমিত।

বাঘাইছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. অরবিন্দু চাকমা বলেন, ইতোমধ্যে আমাদের চার সদস্যদের একটি মেডিকেল টিম প্রয়োজনীয় ওষুধ, স্যালাইন ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটসহ সাজেকের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। সাজেকের কংলাক পাড়া থেকে পায়ে হেঁটে ঘটনাস্থলে পৌঁছতে একদিন লাগবে।

এদিকে রাঙ্গামাটি সির্ভিল সার্জন ডা. বিপাশ খীসার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, গতকাল মঙ্গলবার রাতেই ডায়রিয়ায় আক্রান্তের তথ্য আমাদের কাছে এসে পৌঁছেছে। খুব ভোরেই আমরা একজনকে কিছু ওষুধপত্র দিয়ে ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে দিয়েছি। দুর্গম হওয়ায় তিনি কাল সকাল নাগাদ ওই এলাকায় পৌঁছাতে পারবেন।

তিনি আরও বলেন, এছাড়া প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে কলেরার স্যালাইনসহ বিভিন্ন ওষুধপত্র দিয়ে আরও একটি টিম আমরা ডায়রিয়া আক্রান্ত এলাকায় পাঠাবো।

সূত্র- উএনবি

এই বিভাগের আরও খবর