দুই মাসে চমেক হাসপাতাল এলো নতুন ৬ মেশিন
দেশের সরকারি ১৭টি হাসপাতালগুলোর মধ্যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল(চমেক) অন্যতম। কম বরাদ্ধেও বাড়তি রোগীর চাপ, জনবল, পর্যাপ্ত চিকিৎসা সরঞ্জামের সংকটের সাথে মোকাবিলা করে চিকিৎসেবা দিয়ে যাচ্ছে হাসপাতালটি। বিগত ২ মাসে সেন্ট্রাল মেডিকেল হাসপাতাল স্টোরস ডিপো(সিএমএসডি) থেকে পেলো গুরুত্বপূর্ণ ৬ মেশিন। প্রাপ্ত মেশিন দিয়ে বাড়তি রোগীকে চিকিৎসা সেবা প্রদানে বিরাট ভুমিকা পালনে করবে দাবী সংশ্লিষ্টদের।
জানাগেছে, চলতি বছরের মার্চ -এপ্রিল মাসে চমেক হাসপাতালের স্টোর যোগ হয়েছে গুরুত্বপূর্র্ণ ৭ মেশিন। যেগুলো বেশিরভাগ নিউরোসাজার্রী, হদরোগ বিভাগ এবং ক্যান্সার বিভাগের মেশিন। প্রতিটি মেশিনের দাম লক্ষ টাকার উপরে। মেশিনগুলো এখনো স্টোরে জমা পড়ে আছে। সবগুলোই সেন্ট্রাল মেডিকেল হাসপাতাল স্টোরস ডিপো(সিএমএসডি) থেকে এসেছে।
যেসব মেশিন এলো
ইলেকট্রিল ড্রিল উয়িট ক্র্যানিওটম সিস্টেম: এটি নিউরোসাজার্রীর একটি চিকিৎসা সরঞ্জাম। মসিÍষ্কে টিউমার,মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধলে , মসিÍষ্কে যেকোনো অংশে আঘাত লাগলে , মাথার খুলির শিলাতে চাপ পড়লে এই মেশিন সরঞ্জাম ব্যবহার করা হয়। এটির এপ্রিলে চমেক হাসপাতালে ১টি মেশিন এসেছে। মেশিনটির দাম ২৪ লাখ ৫০ হাজার ৬৬৬ টাকা।
টিস্যু প্রসেসর: এপ্রিলে এই মেশিনটি চমেক হাসপাতালে এসেছে। রোগীর অস্ত্রোপচারের (সার্জারির) পর শরীরে ক্যান্সার আছে কী না, তা নিশ্চিত হতে এই মেশিনের ব্যবহার হয়। রোগীর শরীরের টিস্যু সংগ্রহ করে হিস্টোপ্যাথলজি নামে ওই পরীক্ষাা করানো হয়ে থাকে। পরীক্ষার আগে রোগীর শরীর থেকে সংগ্রহ করা টিস্যুটি প্রক্রিয়াকরণ করতে হয়। মূলত টিস্যু প্রক্রিয়াকরণের কাজে এই মেশিনটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ২৭ লক্ষ ৬৯ হাজার এটির দাম। এই মেশিনটি চমেক হাসপাতালে আগে ছিলোনা। এবর প্রথমবার হাসপাতালে যোগ হয়েছে।
হল্টার মনিটর : হৃদ বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ মেশিন হলো হল্টার মনিটর। এটি দিয়ে বুকে ব্যথা, হৃদস্পন্দনে ঝাঁকুনি, পেসমেকার সাড়া জানাসহ বিভিন্ন কারণে এই মেশিন ব্যবহার করা হয়। এপ্রিলে চমেক হাসপাতালকে ২টি হল্টার মনিটর দিয়েছে সিএমএসডি। প্রতিটির মূল্য প্রায় ১১ লক্ষ ৯০ হাজার।
ইকোকার্ডিওগ্রাম: এটি হৃদরোগ বিভাগের চিকিৎসা সরঞ্জাম। হার্টের রোগ নির্ণয়ের আধুনিক পদ্ধতির নাম ইকোকার্ডিওগ্রাম । এটি আল্ট্রাসনোগ্রামের মতো মতো একটি পরীক্ষা। এটির সাহায্য হৃৎপিÐের ভাল্বের রোগ, হৃৎপিÐের মাংসপেশির রোগ, হৃৎপিÐের বাইরের পর্দা, পেরিকার্ডিয়ামের রোগ, হৃৎপিÐের বাইরের পানি ও ধমনির রোগ নির্ণয় করা হয়। এটি মার্চে চমেক হাসপাতালের স্টোরে যোগ হয়েছে। মেশিনটির দাম পড়েছে ৩৫ লক্ষ ১৯ হাজার।
ইটিটি: এটিও চমেক হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের মেশিন। যাদের বুকে ব্যথা হয় পরিশ্রম করলে অথবা যাদের ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, রক্তে উচ্চমাত্রা কোলেস্টরেল, ধূমপায়ী রোগীদের ক্ষেত্রে ইটিটি পরীক্ষা করা হয়। এছাড়া হার্ট অ্যাটাকের পর ইটিটি করা হয়। মেশিনটি চমেক হাসপাতালে আসে এপ্রিলে। ২৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা দিয়ে মেশিনটি কেনা হয়েছে। এটিও সিএমএসডি) থেকে এসেছে।
চমেক হাসপাতালের হৃদবিভাগে ৩ মেশিন পাওয়া নিয়ে বিভাগীয় প্রধান ডা. আশীষ দে ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেন নি। এই প্রসঙ্গে একই বিভাগের সহোযোগী অধ্যাপক ডা. রিজোয়ান রেহান বলেন, এই তিনটি মেশিন আামদের আগে থেকে ছিলো। তবে মাঝে মাঝে অচল হয়ে পড়ে থাকে। আবার বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ার এনে ঠিক করা হয়। এই মেশিন বিভাগে এলে রোগীদের উপকার হবে। তবে সবচেয়ে বেশি দরকার ক্যাথল্যাব সচল করা । কেননা এই ক্যাথল্যাবের পরীক্ষা করতে না পেরে প্রতিদিন ৪-৫ জন রোগী বেসরকারী হাসপাতালে চলে যায়। এটি বেসরকারীতে অত্যন্ত দামী একটি পরীক্ষা। চমেক হাসপাতালে ২ -৫ হাজারের মধ্যে করা যেত। এখন মাত্র একটি ক্যাথল্যাব সচল। যেটি দিয়ে প্রতিদিন মাত্র ১০ থেকে ১৫ জনকে এনজিওগ্রাম করানো যায়। এটি অচল হলে সেবা প্রায় বন্ধ হওয়ার উক্রম হবে। তাই দ্রত ক্যাথল্যাবটি সচলে করা জরূরী। এতে গরীব রোগীরা উপকৃত হবেন।
এ দিকে ক্যান্সার বিভাগের নাম প্রকাশে অনিশ্চুক এক চিকিৎসক বলেন, প্রায় সময় মেশিন আসে চমেক সহাসপাতালে। কিন্ত কিছু কিছু মেশিন বছরের পর বছর পরে থাকে স্টোরে। আনুষাঙ্গিক কার্যক্রম সারতে চলে যায় দীর্ঘ বছর। শুধু মেশিন আসলে চলবে না, সেগুলো দ্রত সময়ের মধ্যে স্ব স্ব বিভাগে স্থাপন করতে হবে। এগুলো মেশিন, অচল হয়ে পড়ে থাকবে। তার জন্য চমেক হাসপাতালে বায়োমেডিকেল ইঞ্জিয়ার নেয়োগ প্রয়োজন। যাতে করে প্রয়োজনীয় মেশিন বছেরর পর বছর অচল হয়ে পড়ে না থাকে।
এ বিষয়ে চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসানকে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
নচ/মআ/চখ