চট্টগ্রামে আদা রসুন পেঁয়াজের দাম লাগামহীন
কোরবানির ঈদের এখনও এক মাসের বেশি সময় বাকি রয়েছে। এর আগেই প্রতিদিন প্রতিযোগিতা দিয়ে বেড়েছে চলেছে আদা, রসুন ও পেঁয়াজের দাম। অনেকটা সিন্ডিকেটের কবলে এসব পণ্য। ফলে কৃত্রিম সংকটের অজুহাতে তুলে বাজার অস্থিতিশীল করছেন তারা।
দেশের অন্যতম ভোগ্যপণ্যের বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে দিন দিন লাগামহীনভাবে বাড়ছে মসলা জাতীয় পণ্যের দাম। এদিকে বাজার থেকে অনেকটা উধাও হয়ে গেছে চায়না আদা। দেশিও আদা নাই বললে চলে। এর সুযোগে গেল ছয় দিন ধরে বাড়ছে সব ধরনের আদার দাম। একই সঙ্গে আমদানির সিদ্ধান্তের খবরেও পেঁয়াজের ঝাউ কমছে না।
দাম বেড়ে যাওয়ার পেছেনে পাইকারী ব্যবসায়ীরা দুষলেন কৃত্রিম সংকটকে। তারা জানান, খুচরা ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত মুনাফার লাভের আশায় ক্রেতাদের মাঝে পণ্য বিক্রি করছে। অপরদিকে খুচরা ব্যবসায়ীরা দাম বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে আমদানিকারক ও মধ্যস্বত্বভোগীদের দিকে আঙ্গুল তুলেছেন। এমনকি অনেক খুচরা দোকানি আদা বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন। এভাবে দাম বেড়ে যাওয়ায় ভোক্তাদের বিপাকে পড়তে হচ্ছে।
খাতুনগঞ্জের পাইকারী ব্যবসায়ীদের দেওয়া তথ্য মতে, মঙ্গলবার (২৩ মে) আমদানি করা মিয়ানমারের আদা ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, আকারভেদে ভারতীয় কেরালা আদা ২৩০ থেকে ২৩৫ টাকা এবং থাইল্যান্ডের আদা ২৪৫ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে দেশি আদা বাজারে নেই বলে জানালেন তারা। চায়না আদায়ের আমদানি কম। যা প্রতি কেজি ৩০০ টাকায় দরে কেনাবেচা হচ্ছে।
তবে নগরের কাজীর দেউড়ি ও দুই নম্বর গেট কর্ণফুলী মার্কেটের কয়েকটি মুদি দোকানে দেশি আদা পাওয়া গেছে। সেখানে কেজিতে ৪০০ টাকায় এসব আদা বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া আমদানি করা পেঁয়াজ আকারভেদে ৭৫ থেকে ৮২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে রসুনের দাম ৬ থেকে ৭ টাকায় বেড়ে দেশি রসুন ৯০ থেকে ৯৫ টাকায় এবং আমদানি করা চায়না ১০৫ টাকায় দরে কেনাবেচা হচ্ছে।
জানতে চাইলে খাতুনগঞ্জের মেসার্স মোহাম্মদীয়া বাণিজ্যালয়ের স্বত্তাধিকারী মোহাম্মদ মিন্টু সওদাগর বলেন, গেল এক সপ্তাহ ধরে সব মসলার দাম বেড়েছে। পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করা সম্ভব না হলে সামনে দাম আরও বাড়বে। এভাবে চলতে থাকলে পাইকারীতে সব ধরেনর আদা ৩০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হবেও বলেও জানান তিনি।
এক প্রশ্নে এই পাইকারী ব্যবসায়ী বলেন, দেশে চায়না আদার চাহিদা সর্বাধিক। তবে ডলার সংকটসহ এলসি খোলার জটিলতায় আদা,রসুনসহ অনেক পণ্যেও আমদানি কমে গেছে। স্থানীয়ভাবে এসব পণ্য আবাদ হলেও উৎপাদন তেমন বাড়েনি। দাম বেড়ে যাওয়ার পেছনে সব সময় সময় আমাদের দোষারোপ করা হয়। কিন্তু খুচরা ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত মুনাফার লোভে অধিক দামে আদা, রসুন বিক্রি করছে।
অথচ খুচরা বাজারে গিয়ে এসব মসলা দাম অস্বাভাবিকহারে বেড়েই চলছে। খুচরায় গতকাল চায়না আদা ৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। এছাড়া মিয়ানমার, ভারতের কেরালা ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা এবং থাইল্যান্ডের আদা মিলছে ৪০০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া চায়না আদা নেওয়া ৫০০ টাকা পর্যন্ত।
এদিকে দাম বেড়ে যাওয়ায় নগরের দু নম্বর গেটের অনেক দোকানি আদা বিক্রি করে দিয়েছেন। এছাড়া আকারভেদে রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮৫ টাকায় কেনাবেচা হচ্ছে।
নগরের কাজীর দেউড়ি কাঁচাবাজারের এক খুচরা ব্যবসায়ী বলেন, আমদানিকারকরা জাহাজ থেকে মাল খালাসের আগে সিন্ডিকেট করে দাম বাড়িয়ে দেয়। তাদের বেঁধে দেওয়া দামের কারণে পাইকারী ব্যবসায়ীরা পণ্য বিক্রি করছে। অনেক সময় কৃত্রিম সংকটকে পুঁজি করে দাম বাড়ানো হয়।দাম বেড় যাওয়ায় ক্রেতাদের পাশাপাশি এই ব্যবসায়ী বাজার মনিটরিয়ের দাবি জানিয়েছেন।