chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

খাতুনগঞ্জে একদিনেই পেঁয়াজের দাম বাড়ল ৫ টাকা

আব্দুর রহিম পেশায় একজন প্রাইমারী স্কুলের সহকারী শিক্ষক। গেল রোজার মাসে তিনি বাজার থেকে কেজিতে ৪৫ টাকায় পেঁয়াজ কেনেন। এর মাঝে নতুন করে বাড়ে চিনি, ভোজ্যতেলের দাম। তিনি বাড়তি দামে এসব সদাই কেনে বাসায় ফেরেন।

গেল এক মাস আগের ৪৫ টাকার পেঁয়াজ এখন আব্দুর রহিমকে কিনতে হচ্ছে ৯৫ টাকায়। এর পাশাপাশি বাড়তি দামে কেনা আদা, রসুনসহ অন্যান মসলা জাতীয় পণ্যে রয়েছে। প্রাথমিক স্কুলের এই শিক্ষক বেতনের সঙ্গে খরচের হিসাব মিলাতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন।

বুধবার (১৭ মে) দুপুরে নগরের দেওয়ানহাট এলাকায় বাসার সদাই কেনার সময় কথা এই শিক্ষকের সঙ্গে।

তিনি বলেন, তেল চিনি থেকে শুরু করে সব কিছুর দাম বাড়তি। কুরবানির এখনও এক মাস বাকি। এর আগে পেঁয়াজসহ সব মসলার দাম বেড়ে গেছে। ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় পেঁয়াজ এখন একশোর কাছাকাছি দাম। আমরা কি খেয়ে থাকবো?

আব্দুর রহিমের বক্তব্যের সত্যতার খোঁজ নিতে যোগাযোগ করা হলো দেশের বৃহৎ ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে। সেখানে ব্যবসায়ীরা দাম নিয়ে এক প্রকার নিশ্চুপ। কেউ কেউ কথা বলতে চাইলেও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের চাপের মুখে নাম প্রকাশ থেকে বিরত ছিলেন।

তারা জানান, একদিনের ব্যবধানে আজ পাইকারিতে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ৫ থেকে ৬ ছয় টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আমদানির সিদ্ধান্ত না আসলে সামনে দাম আরও বাড়বে।

ব্যবসায়ীদের তথ্যমতে, স্থানীয়ভাবে উৎপাদন হওয়া পণ্যর ন্যায্যমূল্যে নিশ্চিতে গেল এক মাসে আগে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এরপর থেকে বাজারে বিক্রি হয়ে আসছে দেশিয় পেঁয়াজ। আমদানি করা পণ্যের টান পড়ায় পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। পাইকারীতে দাম বাড়ায়, এর প্রভাব পড়ে খুচরা বাজারে।

ব্যবসায়ীরা আরও জানান, গতকাল বাণিজ্যমন্ত্রীর পেঁয়াজ আমদানির ইঙ্গিত দিয়েছেন। এরপর থেকে পণ্যটির আমদানি ঋণপত্র নিয়ে (এলসি) খোলার চেষ্টা করবেন তারা। আগামী দু তিন দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে মনে করেন আমদানিকাররা।

এদিন খাতুনগঞ্জে বড় আকারের দেশি পেঁয়াজ ৭৬ থেকে ৮২ টাকায় বিক্রি হয়েছে। যা গতকাল ছিল ৬৮ থেকে ৭০ টাকা। গতকাল বিক্রি হওয়া ৬২ থেকে ৬৭ টাকার মাঝারি আকারের পেঁয়াজ আজ মিলছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়। তবে অপরিবর্তিত থেকে ছোট আকারের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়।

জানতে চাইলে খাতুনগঞ্জের মেসার্স মোহাম্মদীয়া বাণিজ্যালয়ের স্বত্তাধিকারী মোহাম্মদ মিন্টু সওদাগর বলেন, এই মুহূর্তে বাজারে দেশি পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। স্থানীয়ভাবে আমাদের উৎপাদন বাড়লেও চাহিদার কারণে দাম বেড়েই চলেছে। আজ প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ৫ থেকে ৬ টাকা পর্যন্ত বাড়ছে। আমদানি না হলে দাম বাড়বে। আমরা সীমান্তে কিছু পেঁয়াজ আসার খবর পেয়েছি। কিন্তু দেশে ঢুকতে পারেনি। দাম বেড়ে যাওয়ার পেছনে আমাদের কোনো হাত নেই।

এদিকে অল্প সময়ের মধ্যে বাজার নিম্মমুখী হবে বলে জানালেন খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিছ। তিনি বলেন, আমরা বরাবরই বলে এসেছি আমদানি বন্ধের পর থেকে পেঁয়াজের দাম বাড়তি। বাণিজ্যমন্ত্রী আমদানির ইঙ্গিত দিয়েছেন। আশা করছি দু থেকে তিনদিনের মধ্যে এরকম একটি সিদ্ধান্ত আসবে। ওই সময় বাজার স্থিতিশীল হয়ে যাবে। আমরা সেদিকে নজর রাখছি।

আরকে/

এই বিভাগের আরও খবর