chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

খেটে খাওয়া মানুষদের সুদিন ফেরেনি

দ্রব্যমূল্যের বাড়তি দামের সঙ্গে হিসাব মিলাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় দিনমজুর মো. নোমান উদ্দীনের। এর সঙ্গে মাস শেষে বাড়ি ভাড়ার চাপ। ঘরে স্ত্রী আর দুই ছেলে সন্তান। তাদের ভাতের বন্দোবস্ত আর নিত্যদিনের খরচ মেলাতে বাদ বাকি চিন্তা তার।

টানাটানির সংসারে চালাতে গিয়ে নোমানকে নিরুপায় হয়ে মানুষের কাছ হাত পাততে হয়। প্রথম সপ্তাহ কোনোভাবে চললেও, দ্বিতীয় সপ্তাহ হাত খালি। পুরো মাসের খরচের পাগলা ঘোড়ার হিসেব মিলাতে গিয়ে তার চোখে-মুখে উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা।

নগরের জামালখান এলাকায় একটি নির্মাণাধীন ভবনে কাজ করেন নোমান। সেখানে কথা হয় তার সঙ্গে। সেখানে কাজ শেষে পাওয়া টাকা দিয়ে সন্তানদের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করেন। নোমানের বাড়ি কুমিল্লায় হলেও, কয়েক বছর আগে জীবিকার টানে চট্টগ্রামে আসেন।

তবে মজুরির চেয়ে জিনিসপত্র দাম লাগামহীনভাবে বাড়তে থাকায় নিদারুণ কষ্টে আছেন নোমানের মতো খেটে খাওয়া মানুষদের। গেল কয়েক মাস ধরে যে হারে মূল্যস্ফীতি দেখা দিয়েছে, সে হারে তাদের মজুরি বাড়েনি। কিন্তু পালাক্রমে বেড়েছে সব জিনিসপত্রের দুই থেকে তিন গুণ দাম।

ফলে আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের মিলাতে এরকম হিমশিম খেতে হচ্ছে শ্রমজীবী মানুষকে। নানান কায়দায় কম আয়ে মাস পার করার কৌশল নিচ্ছেন। কেউ সঞ্চয় ভেঙে মাসের খরচ মেটাচ্ছেন। কেউ ধারদেনা করেছেন। কেউ কম খেয়ে চাহিদার সঙ্গে আপস করছেন। আবার এ তিন ধরনের ঘটনাই একইসঙ্গে  করে চলছে কোনো কোনো শ্রমিকের দিনযাপন। কেউবা আর্থিক অনটনের মুখে অনেকেই ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ করে দিয়েছেন।

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের পর বৈশ্বিক পেক্ষাপটের এমন পরিস্থতিতে সারাবিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশে পালিত হচ্ছে মহান ‘মে’ দিবস। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক-মালিক ঐক্য গড়ি, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলি’।

বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন, মালিকপক্ষে অর্থনীতিবিদের দাবি, করোনা সংকটের পর স্থবিরতা কাটিয়ে অনেকটা ঘুরে দাঁড়িয়েছিল দেশের ব্যবসা- বাণিজ্যের প্রসার। বেকারত্ব কমে এসেছে। শ্রমিকরা কাজে ফিরতে শুরু করেছেন। শিল্প-কারখানায় বিনিয়োগ ও কাজের পরিধি বেড়েছে। তবে নতুন করে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে কিছুটা অর্থনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হয়ে গেছে। ডলার সংকটের মুখে রপ্তানি কমে গেছে।

এরপরও বাণিজ্যের দ্বার উন্মোচনের মধ্যে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে সরকার। কিন্তু সামগ্রিকভাবে শ্রমিকদের আর্থিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটেনি। যার কারণে কর্মসংস্থান বাড়লেও মজুরি না বাড়ায় সুফল পাচ্ছেন না কর্মজীবী মানুষরা।

মআ/চখ

 

এই বিভাগের আরও খবর