চট্টগ্রামে কলার দামে আগুন
হঠাৎ বেড়েছে কলার দাম। কলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। রমজানের শুরুতেই এতো বেশি দাম বাড়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন সাধারণ ক্রেতারা। চড়া দামে বিক্রি হওয়ায় দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে এ প্রিয় ফলটি।
মানবদেহের জন্য পুষ্টিগুণ সম্পন্ন ফল কলা। ফলটি
বছরজুড়ে হাতের নাগালে পাওয়া যায়। সেই সঙ্গে এই
ফলটির দামও থাকে তুলনামূলক অনেকটাই কম। সবারই কাছে কলা খুবই প্রিয় হওয়ায় কম বেশি সবাই কিনে থাকেন। ইফতার এবং সেহরিতে কলা অন্যতম হওয়ায় রমজানের শুরুতেই সর্বত্র হাট বাজারে কলার চাহিদা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই সঙ্গে বৃদ্ধি পেয়েছে দামও। রমজানের আগে যেখানে প্রতি হালি ২০-৩০ টাকা বিক্রি হয়েছে এখন সেখানে তা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। ভালো মানের কলা ডজনে বিক্রি হচ্ছে দেড়শ থেকে ২০০ টাকা।
বিক্রেতারা জানায়, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় সব ধরনের কলা হালি প্রতি ১০-১২ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। সরবরাহ বৃদ্ধি পেলে দাম কমে আসবে।
চট্টগ্রাম অঞ্চলে পর্যাপ্ত কলার আমদানি হচ্ছে এমনটি
জানা গেলেও কলার দাম আগের তুলনায় দ্বিগুণ প্রায়। এখন ছোট কলার দাম ৮ টাকার নিচে নেই। এদিকে কলার দাম এত বৃদ্ধি পাওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করছেন ক্রেতারা। আর বিশেষ করে বেশ বেকায়দায় পড়েছে নিন্ম আয়ের মানুষেরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, চট্টগ্রাম নগরের ফলমণ্ডি, রিয়াজুদ্দিন বাজার, বহদ্দারহাট, ষোলশহর, পতেঙ্গার আড়তগুলোতে প্রতিদিন অসংখ্য কলার ট্রাক আসছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ও দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে। তারপর ও ব্যবসায়িদের দাবি কলার সরবরাহ কম।
এ বিষয়ে কলার ব্যাপারী জয়নাল আবেদিন বলেন, আমি বান্দরবান থেকে কলা আনি। আমার কাছ থেকে পাইকারী ব্যাবসায়িরা কলা নিয়ে যায়। এ বছর রমজানে কলা চাষিরা আগের তুলনায় একটু বেশি দাম দাবি করছে। এছাড়া তেলের দামের কারণে ভাড়া বৃদ্ধি পেয়েছে এরও একটি প্রভাব আছে।
চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন বাজার, পাড়া মহল্লায় চায়ের দোকানের থেকে শুরু ভ্রাম্যমাণ ভ্যানগাড়ীতে করে অলিতে গলিতে কলা বিক্রি করছেন হকারা।
বাকলিয়ার কালা মিয়া বাজারের দোকানী আলী আব্বাস বলেন, মোকামে গিয়েছিলাম কলা ক্রয় করতে, সেখানে দাম অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। আর গেল দুদিন যাবৎ মোকামেও কলা সরবরাহ অনেক কম।
ক্রেতা শহীদ নাসিম বলেন, রোজায় ইফতারী বা
সেহরীতে কলা ছাড়া খেতে ভাল লাগে না। বিশেষ করে সেহরী সময়ে কলা খেলে সারাদিন পেটে ভিতর ঠান্ডা অনুভব হয়। যে কারণে রোজায় কলার চাহিদা ব্যাপক। তবে এ বছর যেন আগের তুলনায় কলার দাম রেকর্ড ছাড়িয়েছে। বাজারে এসেছিলাম একটু কাঁচা দেখে কলা ক্রয় করতে, এসে দেখি মাঝারী আকৃতির কলা দাম ১৫০ টাকা ডজন বলছে দোকানী। মানে একটি কলার দাম সাড়ে ১২ টাকা। প্রতি বছর রোজায় সব কিছুর দাম বাড়ে কলার বাজারও সিন্ডিকেট করেছে ব্যবসায়িরা। তিনি জানান, এখন অতিরিক্ত দামের কারণে ৬টি কলা ক্রয় করছি।
বহদ্দরহাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ফুটপাতে বসে কলা বিক্রি করছেন ব্যবসায়িরা। পাশাপাশি বাজারের আড়ৎ এবং দোকানগুলোতেও কলা বিক্রি হচ্ছে। রমজানের আগে যেখানে কলা বিক্রি হয়েছে প্রতি হালি ২০ থেকে ২৪ টাকা এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। স্থানীয় বাজারে চম্পা, বাংলা কলা বেশি বিক্রি হচ্ছে।