বাংলাদেশের কাছে পাত্তাই পেল না আয়ারল্যান্ড
সিলেট স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে স্বাগতিক বাংলাদেশের কাছে পাত্তাই পেল না সফরকারী আয়ারল্যান্ড ক্রিকেট দল। ঐতিহাসিক এক দিন কাটালো বাংলাদেশ দলের।
সাকিবের ৯৩ এবং হৃদয়ের ৯২ রানের কল্যাণে প্রথম ওয়ানডেতেই বাজিমাৎ করে শুভ সূচনা করে টাইগাররা।
শনিবার (১৮ মার্চ) সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে টসে হেরে ব্যাটিং করে নিজেদের ইতিহাসে দলীয় সর্বোচ্চ ৩৩৮ রান সংগ্র করে বাংলাদেশ।
শেষ পর্যন্ত এই রানের পাহাড় ধাওয়া করতে নেমে ১৫৫ রানেই অলআউট হয় আয়ারল্যান্ড। তাতে নিজেদের ইতিহাসের সর্বোচ্চ ১৮৩ রানের ব্যবধানে জয় তুলে নিয়েছে তামিম ইকবালের দল।
এদিন টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ১৫ রানে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরেন তামিম ইকবাল। মার্ক অ্যাডায়ারের অফ স্টাম্পের বাইরের বল ড্রাইভ করতে চেয়েছিলেন তামিম। তবে সুইং করে বেরিয়ে যাওয়ায় মাঝ ব্যাটে খেলতে পারেননি তিনি। বাইরের কানায় লেগে ক্যাচ যায় স্লিপে। সঙ্গে সঙ্গে সেই বল তালুবন্ধি করেন পল স্টার্লিং। ফলে ৩ রান করে ড্রেসিং রুমের পথ ধরতে হয় বাংলাদেশ অধিনায়কের।
এরপর দশম ওভারে কার্টিস ক্যাম্ফারের বলে কাভারে ক্যাচ দিয়ে আউট লিটন দাস। ৩১ বলে ২৬ রান করা লিটন বড় ইনিংসের আশা দেখাচ্ছিলেন। তবে ক্যাম্ফারের লেংথ বলটি পুশ করতে গিয়ে স্টার্লিংয়ের হাতে ক্যাচ তুলে দেন এই ডানহাতি ব্যাটার।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে নাজমুল হোসেন শান্ত কিছুটা আশা দেখালেও বেশিক্ষণ টিকতে পারেনি। ২৫ রান করে অ্যান্ডি ম্যাকব্রেইনের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। তবে চতুর্থ উইকেট জুটিতে ধুঁকতে থাকা বাংলাদেশকে পথ দেখিয়েছেন সাকিব আল হাসান ও অভিষিক্ত তৌহিদ হৃদয়।
এই দুই ব্যাটারের ১৩৫ রানের জুটিতে বড় সংগ্রহের ভীত পেয়ে যায়। এদিন ওয়ানডে ক্রিকেটে ৭০০০ রানের ক্লাবের মাইলফলক ছুঁয়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। ক্যারিয়ারের ২২৮তম ওয়ানডে ম্যাচে এই কীর্তি গড়লেন সাকিব। তবে ৭ রানের আক্ষেপ নিয়ে সাজঘরে ফিরেন তিনি। ব্যক্তিগত ৯৩ রানে হুমের শিকার হন টাইগার ক্রিকেটের পোস্টারবয়।
সিলেটে আরেকটি মাইলফলক ছুঁয়েছেন অভিষিক্ত তৌহিদ হৃদয়। বাংলাদেশ জাতীয় দলের ওয়ানডে জার্সিতে ১৪০তম ক্রিকেটার হিসেবে অভিষিক্ত হয়েছেন হৃদয়। নিজের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম ম্যাচ রাঙাতে ভুল করেননি এই তরুণ। প্রথম ম্যাচেই পেয়ে গেছেন ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডে অর্ধশতক।
কিন্তু অনেকটা আক্ষেপই থাকবে এই তরুণ ক্রিকেটারের। কেননা ইতিহাসের পাতায় নিজেকে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল হৃদয়ের। অভিষেকে শতক হাঁকানোর হাতছানি থেকেও তা পারেননি এই ডানহাতি ব্যাটার। ব্যক্তিগত ৯২ রানে থামে হৃদয়ের ইনিংস।
শেষ দিকে মুশফিকুর রহিমের ঝড়ো ২৩ বলে ৪৪ রানের ইনিংসে ৩৩৮ রানের সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। আইরিশ বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ছিলে গ্রাহা হুম। তিনি ১০ ওভারে ৬০ রান দিয়ে নিয়েছেন চারটি উইকেট।
পাহাড়সম এই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মাত্র ১৫৫ রানেই গুটিয়ে যায় আইরিশরা। দুই ওপেনার সাবধানে শুরু করলেও পাওয়ার প্লের পর ১২তম ওভারে স্টেফেন দোহেনিকে মুশফিকুর রহিমের তালুবন্দি করেন সাকিব। এর পর ১৩তম ওভার বল করতে এসে আঘাত হানেন এবাদত। এবার তার শিকার মারকুটে ওপেনার পল স্টার্লিং।
১৫তম ওভারে বল করতে এসে আবারও আঘাত হানেন এই ডানহাতি পেসার। এবার প্যাভিলিয়নের রাস্তা দেখান হ্যারি টেক্টরকে। সতীর্থ এবাদতের এমন বোলিংয়ে নিজের নামের পাশেও উইকেট লেখান তাসকিন আহমেদ। আইরিশ অধিনায়ককে বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান।
দলীয় ৭৬ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়া আয়ারল্যান্ড আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। মিডেল ওভারে নাসুম আহমেদের ঘূর্ণিতে ভেঙে পড়ে আইরিশদের ব্যাটিং অর্ডার। শেষ পর্যন্ত ৩০.৫ ওভারে মাত্র ১৫৫ রানে অলআউট হয় পল স্টার্লিংরা।
বাংলাদেশ পায় ১৮৩ রানের বড় জয়। এবাদত ৪ উইকেট, নাসুম আহমেদ ৩ উইকেট, ২ উইেকেট ও সাকিব নেন একটি উইকেট।
চখ/আর এস