চুক্তি স্বাক্ষরের ২২ মাসের মধ্যে হবে স্বপ্নপূরণ
চমেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিট
চীনের অর্থায়নে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ(চমেক) হাসপাতালে বার্ন ইউনিট। সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষের দিকে। আগামীকাল প্রকল্প নিয়ে দুই পক্ষের মাঝে চুড়ান্ত চুক্তি সম্পন্ন হবে। চুক্তি স্বাক্ষরের ২২ মাসের মধ্যে চট্টগ্রামের লালিত স্বপ্ন বার্ন ইউনিটের কাজ সম্পন্ন হবে।

জানা গেছে, চমেক হাসপাতালে পেছনে গোঁয়াছি বাগান এলাকায় প্রায় এক একর জায়গায় নির্মাণ হবে বার্ন ইউনিট। প্রকল্পটিতে ১৫০টি শয্যা থাকবে। তার মধ্যে ২০টি আইসিইউ, শিশুদের জন্য ৫টি আইসিইউ, এইচডিইউ ২৫টি, অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটার করা হবে ২টি। প্রকল্পের বাজেট ধরা হয়েছে ১৮০ কোটি টাকা। রোগী আনা নেওয়ার সুবিধার জন্য তিনটি রাস্তা বানানো হবে। চট্টেশ^রী রোডের দিক থেকে একটি রাস্তা হবে। সেটি হবে বার্ন হাসপাতালের প্রধান রাস্তা। চমেক হাসপাতালের পেছনে ছাত্র হোস্টেলের দিক থেকে আসবে আরও একটি রাস্তা। সর্বশেষ রাস্তাটি হবে মিজান হোস্টেলের দিক দিয়ে। সেখানে মাঝখানে পাহাড় থাকায় তা ঘুরিয়ে ওয়ার সিমেট্রি হয়ে আনা হবে।

হাসপাতালটি ৬তলা ভবনের করা হবে। প্রথম তলায় থাকবে ইর্মাজেন্সি ওর্য়াড এবং ওপিডি, দ্বিতীয় তলায় তিনটি ওটি (অপারেশন থিয়েটার) এবং তলায় নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ), তৃতীয় তলায় পুরোটা হাই ডিপেন্সি ইউনিট (এইচডিইউ), ৪র্থ এবং ৫ম ওর্য়াড, ৬ষ্ঠ তলায় ওয়ার্ড এবং অফিস।
এদিকে গোঁয়াছি বাগান এলাকায় অবৈধ স্থাপনা সরাতে ইতোমধ্যে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে- মার্চের ২০ তারিখের মধ্যে জায়গা খালি করে দিতে হবে স্টাফদের।
সারাদেশে বার্ন চিকিৎসা সম্প্রসারণে সমন্বয়কের দায়িত্ব পাওয়া ডা. সামন্ত লাল চট্টলার খবরকে বলেন, বার্ন হাসপাতাল চট্টগ্রামের দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন। আমি নিজেও চমেকে প্রাক্তন ছাত্র। ১০ বছর ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি আধুনিক বার্ন ইউনিট গড়ে তোলার। অবশেষে চীনের অর্থায়নে হাসপাতালে হচ্ছে। আগুনে পুড়ে যাওয়া রোগী আধুনিক চিকিৎসা সেবা পারেন। এতে করে ঢাকায়ও রোগীর চাপ কমবে। আমরা চাই দ্রত কাজ শেষ হোক।
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান চট্টলার খবরকে বলেন, চট্টগ্রামে দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন একটা বার্ন ইউনিট প্রতিষ্ঠা। মানুষ আগুনে পুড়ে মারা যাওয়ার ঘটনা অত্যন্ত করুণ। ক্যান্সারের রোগী আস্তে আস্তে মারা যায়। অন্যান্য রোগীদেরও চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ থাকে। কিন্ত একজন আগুনে পুড়ে যাওয়া রোগীর জন্য প্রথম ২৪ ঘণ্টা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এতদিন চট্টগ্রামে আগুনে পুড়ে যাওয়া জটিল রোগীদের ঢাকায় পাঠানো হতো। সেখানে পৌঁছাতে গিয়ে অনেক রোগীকে বাঁচানো যেত না। এখন চট্টগ্রামেই এ চিকিৎসা হবে। এতে আগুনে পুড়ে যাওয়া মৃত্যুর সংখ্যাটা অন্তত কমিয়ে আনা যাবে। এছাড়া গোয়াছিতে একটি আলাদা ট্রমা সেন্টার করার প্রস্তাবনা সরকারের কাছে দেওয়া হয়েছে। যেখানে সড়ক দুর্ঘটনা , কাটা ছেড়া রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হবে। এটি বাস্তবায়ন হলে চট্টগ্রামে চিকিৎসা সেবায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন হবে।
এর আগে, চমেক হাসপাতালে বিশেষায়িত এই বার্ন ইউনিট স্থাপনের লক্ষ্যে ৫ সদস্যের চীনা টিম ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় আসে। ২৮ ফেব্রুয়ারি তারা চট্টগ্রামে আসে। ১২ দিনের কর্মযজ্ঞ শেষে গতকাল তারা ঢাকায় ফিরে গেছেন। বিশেষায়িত এই বার্ন ইউনিট স্থাপনে আগামীকাল(১৩ মার্চ) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও ইআরডির সাথে চীনা কতৃ পক্ষের আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষর হবে।
রচ/চখ