chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

চট্টগ্রামে আগাম তরমুজের দামে আগুন

চৈত্রের আগেই গরমের হাঁসফাঁসে নগর জীবন।রমজান মাস এলেই ইফতারিতে রসালো ফলের কদর বেড়ে যায় বহুগুণ। তাই আগাম ফলনে বাজার ভরে গেছে রসালো ফল তরমুজে।বিশেষ করে তরমুজের দামে দেখা যাচ্ছে বড় রকমের অসংগতি।

নগর জুড়ে ফলের দোকানগুলোর পাশাপাশি পাড়া মহল্লায়, অলি গলিতে, ভ্যানেও বিক্রি হচ্ছে  গরমের প্রশান্তির তরমুজ। তবে দাম তুলনামূলক বেশি হওয়ায় কিছুটা অস্বস্তিতে সাধারণ ক্রেতা।

ক্রেতারা বলছেন, বাজারে প্রচুর আগাম  তরমুজের আমদানি হয়েছে। দাম তুলনামূলক বেশি হওয়ার পরও থেমে নেই বিক্রি। মৌসুমি ফল ও গরমের প্রশান্তি পাওয়ায় তরমুজ কিনছেন অনেকেই। দাম বেশি হলেও বেশির ভাগ ক্রেতারা এই মৌসুমি ফল তরমুজ কিনছেন অনেকটা শখের বসেই।

এদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগাম ফলন তরমুজ বাজারে এসেছে। এর চাহিদা কিছুটা কম থাকলেও আগামী ২ সাপ্তাহের মধ্যে বাড়বে বিক্রি, তবে কি কারণে দাম বেশি তার সদউত্তর দিতে পারেনি খুচরা ব্যবসায়িরা। তবে কিছুদিনের মধ্যে এই দাম কিছুটা কমে আসবে বলে ধারণা ক্রেতাদের।

শনিবার চট্টগ্রামের  ফলমন্ডি মার্কেট ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য জানা গেছে। বাজারগুলোতে সাদা ও কালো (তরমুজ) দুই প্রকারের তরমুজ বেশি বিক্রি হতে দেখা গেছে।

কাজীর দৈউড়ী ফল বিক্রির দোকানগুলোতে চলতি সিজেনে সিংহভাগ দোকানি অন্য ফল বাদ দিয়ে শুধুই তরমুজ বিক্রি করছেন। বাজারঘুরে কথা হয় এসব দোকানির সঙ্গে। এমনই একজন দোকানি তারিক হোসেন বলেন, তরমুজের বাজার শুরু হওয়ায় প্রথম দিকে ভালো লাভ থাকে, যত গরম পড়বে তত বিক্রি হবে তরমুজ। বর্তমানে একটু বেশি দাম যাচ্ছে তবে খুব শিগগিরই এ দাম কমে আসবে। প্রথম দিকে কিছুটা লাভ বেশি হওয়ায় সব ফল দোকানিই এখন তরমুজ বিক্রি করছেন প্রচুর পরিমাণে।

দরদাম সম্পর্কে আরেক দোকানি মাহবুব বলেন, নগরীর ফল মন্ডি থেকে আমারা বেশি তরমুজ আনি। সেখানে থেকে মাঝারি সাইজের ৪/৫ কেজি ওজনের তরমুজ প্রতি ১শ’র দাম সাড়ে ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকায় কেনা পড়ে। এছাড়া সাইজ ভেদে এসবের দাম নির্ভর করে। ১০/১২ কেজি ওজনের তরমুজ প্রতি শ’ বিক্রি হয় ২০ হাজার থেকে ২৬ হাজার টাকায়।

তিনি বলেন, বাজারে আমরা মাঝারি সাইজের তরমুজ বিক্রি করছি ২৫০- ৩০০ টাকায়, আর বড় তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫০-৫৫০ টাকায়। প্রথম দিকে তুলনামূলক বেশি দামে বিক্রি হয় জানিয়ে তিনি বলেন, গরম বাড়লেই তরমুজের দাম বাড়ে, আবার একদিন বৃষ্টি হলেই সেই তরমুজের দাম অনেক কমে যায়। এছাড়া ১০০ তরমুজের মধ্যে ১০ পিস পচা-নষ্ট বের হয়, অন্যদিকে দোকান ভাড়া কর্মচারী বিল সব মিলিয়ে একটু বেশি দাম না নিলে লাভ হয় না।

কাজীর দৈউড়ী থেকে একটি মাঝারি সাইজের তরমুজ ৪শ‘ টাকায় কিনেছেন শাহরিয়ার হোসেন নামের একজন বেসরকারি চাকরিজীবী। তিনি বলেন, বাজারে এত তরমুজ তবু অনেক দাম, সাধারণ নিম্ন আয়ের মানুষেরা এই দামে তরমুজ খেতে পারে না। তবুও বাধ্য হয়ে কিনেছি, কারণ আমার ছোট ছেলে তরমুজ খাওয়ার বায়না ধরেছে। এ সিজনে যখন দাম কমবে সে সময় থেকে নিয়মিত কিনবো। দাম না কমার আগ পর্যন্ত আর কেনা হবে না ,কারণ বর্তমানের এগুলোর বেশি দাম। যখন দাম কমবে তখন নিয়মিত কিনবো। কারণ তরমুজ খুবই উপকারী ফল তাই ছেলে-মেয়েদের খাওয়ানোর জন্য কিনবো।

আরেক ক্রেতা সবুজ মিয়া তরমুজের দরদাম করে বনিবনা না হওয়ায় ফিরে যাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, বাজারে এত তরমুজ তবুও দাম কমে না। এত দামে কি আর আমরা কিনতে পারি? একটা তরমুজের দাম সাড়ে ৩শ’ টাকা চায়। মৌসুমি ফল বাজারে এসেছে শখ করলাম একটা কিনবো কিন্তু দাম বেশির জন্য কিনতে পারলাম না। তবে পাশে থাকা আরেক ক্রেতা বললেন, দাম বেশি তবে শখের বশে কিনেছি বাজারে আসা নতুন এই মৌসুমি ফলটি। আজ পরিবার নিয়ে এটি খেয়ে শখ মিটাবো। তবে যখন দাম কমবে তখন প্রতিদিনই কিনবো।

পুষ্টি বিশেষজ্ঞ ডা.মুনজারিন বলেন,তরমুজ আমাদের দেহের জন্য উপকারি। তবে তিনি সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, অসাধু ব্যবসায়ীরা বর্তমানে তরমুজে নানা রকমের রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করে থাকে যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক। তাই তরমুজ কেনার সময় সচেতন থাকা প্রয়োজন।

মআ/চখ

এই বিভাগের আরও খবর