chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

১৬ মার্চ বোয়ালখালী-নাজিরহাটে নির্বাচন: যা বললেন ডিসি

আগামী ১৬ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য বোয়ালখালী উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান ও নাজিরহাট পৌরসভা নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে সবধরনের প্রস্ততি নিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।

এ বিষয়ে আজ বুধবার (৮ মার্চ) সকালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সাথে নিয়ে প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময় করেছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান।

চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে মতবিনিময় ও আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক সভাটির আয়োজন করে সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিস। এতে সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক বলেছেন, চট্টগ্রামে কোন নির্বাচন বিতর্কিত হতে দেব না। ইভিএম পদ্বতিতে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করা হবে।

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতি ৩ ইউনিয়ন ও পৌরসভা নির্বাচনে প্রতি ৩ ওয়ার্ডে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্বে নিয়োজিত থাকবে।

ভোট কেন্দ্রগুলোর পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিজিবি, পুলিশ ও র‌্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পর্যাপ্ত সংখ্যক ফোর্স মোতায়েন থাকবে। কেন্দ্রে গিয়ে আধিপত্য ও প্রভাব বিস্তার, অযথা গোলযোগ সৃষ্টি, ভোট গ্রহনের শেষের দিকে লোক জড়ো করানো, ফেসবুক বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা গুজব রটানো, নির্বাচনী আচরণবিধি লংঘন কিংবা বিভ্রান্ত করলে দোষীদেরকে কঠোর হস্তে দমন করা হবে। যে কোন মূল্যে নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে সরকার বদ্ধপরিকর।

সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসের উদ্দ্যেগে আয়োজিত সভায় তিনি আরো বলেন, ইভিএম পদ্ধতিতে কিভাবে ভোট প্রদান করবেন সে বিষয়ে আগামী ১৩ ও ১৪ মার্চ নির্বাচনী এলাকার ভোটারদের উদ্বুদ্ধ করা হবে।

নির্বাচন কমিশনের অনুমোদিত স্টিকার ছাড়া কোন যান্ত্রিক যানবাহন নির্বাচনী এলাকায় চলবেনা। ভোটের ৩৬ ঘন্টা পূর্বে থেকে মোটসাইকেল চলাচল বন্ধ থাকবে। এসময়ে বৈধ অস্ত্র প্রদর্শন করা যাবেনা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও এসি-ল্যান্ডদের অযথা ফোন করে গুজব ছড়ানো যাবেনা। ভোট গ্রহণের দিন প্রার্থীসহ নির্বাচনের কাজে সম্পৃক্ত কেউ মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেনা। নির্বাচন কমিশনের অনুমোদিত ব্যক্তি ছাড়া কেউ ভোট কেন্দ্রে ও ভোটার ছাড়া কেউ বুথে প্রবেশ করতে পারবে না। এর ব্যত্যয় ঘটলে ছাড় নেই।

ডিসি বলেন, নির্বাচন ইস্যুতে কোন প্রার্থীর অভিযোগ থাকলে তা প্রমানসহ লিখিতভাবে জানালে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। বিতর্কিত ব্যক্তিকে নির্বাচনী এজেন্ট দেয়া যাবেনা। নির্বাচনী আচরণবিধি শতভাগ মেনে চলতে হবে।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মোঃ রাকিব হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় ও আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক সভায় বক্তব্য রাখেন জেলা পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ, সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন, অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ তারিফুজ্জামান, বোয়ালখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মামুন, ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাব্বির রহমান সানি, র‌্যাব প্রতিনিধি মোঃ খালিদ।

এসময় মিরসরাই উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফারুক হোসাইন, বোয়ালখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আবদুর রাজ্জাক, ফটিকছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মাসুদ রানা, ভূজপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ হেলাল উদ্দিন, বোয়ালখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মোঃ রেজাউল করিম রাজা, এস.এম মিজানুর রহমান, কাজী আয়েশা ফারজানা, নাজিরহাট পৌরসভার মেয়র পদপ্রার্থী এডভোকেট মোহাম্মদ ইসমাইল, জাহাঙ্গীর চৌধুরী, নাছির উদ্দিন, একে জাহিদ চৌধুরী, আনোয়ার পাশা, কাউন্সিলর পদপ্রার্থী মোঃ সোলেমান, মোঃ আমান উল্লাহ আমান, মোহাম্মদ হোসেন, সলিমা আকতার, আবদুল ওয়াহাব, মোঃ মঞ্জুর মিয়া প্রমূখ। নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা, প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পদস্থ কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

সভায় চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপরি (এসপি) এসএম শফিউল্লাহ বলেন, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন উপহার দেয়া আমাদের সকলের কাম্য। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসন থাকবে কঠোর অবস্থানে।

বোয়ালখালী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচন ও নাজিরহাট পৌরসভা সাধারণ নির্বাচনকে ঘিরে কেউ আইন-শৃঙ্খলা অবনতির চেষ্টা করলে রক্ষা নেই। প্রার্থীরা শান্তিপূর্ণ অবস্থানে থাকলে নির্বাচন বিতর্কিত হবেনা।

কোন প্রার্থী কর্তৃক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে ভোট কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাবে। জনগণের ভোটাধিকার নিয়ে নির্বাচন করতে হবে। ভোট নিয়ে ফেসবুকে কোন ধরণের গুজব ছড়ালে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তিনি বলেন, বোয়ালখালীর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে মোট ৮৬টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ সকল কেন্দ্রে ৫’শ পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় আনসার সদস্য নিয়োজিত থাকবে।

র‌্যাব ও বিজিবি টহলের পাশাপাশি ৩টি ইউনিয়ন মিলে স্ট্রাইকিং ফোর্স ও মোবাইল টিম কাজ করবে। একটি কেন্দ্রে ১৮ জনের সেটআপ থাকবেনির্বাচনী এলাকার আশপাশে গোয়েন্দা পুলিশের টিম ও চেক পয়েন্ট থাকবে।

এসপি আরও বলেন, ভোট কেন্দ্রে প্রিসাইডিং অফিসার, প্রয়োজনে সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার, পুলিশের ইনচার্জ ও আনসার ইনচার্জ ছাড়া আর কারও কাছে মোবাইল থাকতে পারবেনা। মিডিয়াকে সাক্ষাতকার দিতে হলে কেন্দ্রের বাইরে এসে দিতে হবে। কেন্দ্রের বুথে গোপন কক্ষে ভোটার ব্যতিত আর কেউ প্রবেশ করতে পারবেনা।

চখ/আর এস

এই বিভাগের আরও খবর