chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

শহিদ মিনারে ছাত্র ইউনিয়নের ওপর যুবলীগ-ছাত্রলীগের হামলা, আহত ১০

চট্টগ্রামে শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় ছাত্রলীগ ও দক্ষিণ জেলা যুবলীগের বিরুদ্ধে ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। 

এতে দলটির চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি ইমরান চৌধুরীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছে। তবে মারধরের বিষয়টি  অস্বীকার করেছেন ছাত্রলীগের নেতারা।

মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে নগরের মিউনিসিপ্যাল মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অস্থায়ী কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটেছে।

আহতদের মধ্যে ছাত্র ইউনিয়নের কোতোয়ালী থানার সাধারণ সম্পাদক এস এম নাবিল, পাহাড়তলী থানার সভাপতি ডেনি বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক বর্ষা দেবীর নাম পাওয়া গেছে।

জানতে চাইলে ছাত্র ইউনিয়নের চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি ইমরান চৌধুরী বলেন, শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য সকাল থেকে স্কুলের শিক্ষার্থীরা দাঁড়িয়ে ছিলেন। সারিবদ্ধভাবে সবাই শ্রদ্ধা শেষে বেরিয়ে আসছিলেন। কিন্তু দক্ষিণ জেলা যুবলীগের দিদারুল আলমসহ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সিরিয়াল ছাড়াই ফুল দিতে যায়। অনেকে জুতা নিয়ে শহিদ বেদিতে উঠে পড়েন। আমরা সিরিয়াল ছাড়া ফুল দেওয়া এবং জুতা নিয়ে উঠার প্রতিবাদ করি। এক পর্যায়ে তাদের সঙ্গে হাতাহাতি হয়। এরপর ছাত্রলীগের নেতারা  আমাদের ওপর চড়াও হয়। তারা আমাদের নারী সদস্যেদের নাজেহাল করেন। আমি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে আমাকে তলপেটে লাথি মারে। আমাকে আঘাত করে পাঞ্জাবি ছিঁড়ে ফেলে। পরে আমরা সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা নেই।

অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্যের জন্য  দক্ষিণ জেলা যুবলীগের দিদারুল আলমকে একাধিকার ফোন করেও পাওয়া যায়নি। তবে মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান আহমেদ ইমু বলেন, এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমরা ফুল দিয়ে চলে এসেছি। ছাত্রলীগ মারলে তো লিড নিউজ হবে। এতক্ষণে খবর হয়ে যাওয়ার কথা। ছাত্র ইউনিয়নের সঙ্গে আমাদের কোনো মারধরের ঘটনা ঘটেনি।

এসময় ঘটনাস্থলে দায়িত্বে ছিলন কোতোয়ালী থানা পুলিশ। জানতে চাইলে কোতোয়ালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আতিক আহমেদ বলেন, আমি সেখানে দায়িত্ব ছিলাম। সেখানে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।

এদিকে শহিদ মিনারে ছাত্র ইউনিয়নের উপর মারধরের প্রতিবাদে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন। বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি মো. শাহ আলম ও  সাধারণ সম্পাদক জাবেদ চৌধুরী  বিবৃতিতে বলেন,  ২১ ফেব্রুয়ারি, ২৬ মার্চ এবং ১৬ ডিসেম্বরের মত জাতীয় দিবসে শহীদের স্মরণে বিভিন্ন প্রগতিশীল সংগঠন শ্রদ্ধা জানাতে গেলে দেখা যায় যুবলীগ, ছাত্রলীগ, আওয়ামীলীগসহ বিভিন্ন সরকারদলীয় সংগঠন নিয়ম শৃঙ্খলার তোয়াক্কা না করে,  লাইন ভঙ্গ করে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়।

প্রতিবছরের ন্যায় এই বছরও যুবলীগ ও ছাত্রলীগ লাইন ভঙ্গ করায় ছাত্র ইউনিয়ন প্রতিবাদ জানালে এই হামলা করে। সরকার দলীয় সংগঠনগুলোর এমন স্বৈরাচারী আচরণের জবাব সাধারণ মানুষ দিবে। স্বৈরাচারী আচরণ করে কোনো সরকার বেশি দিন ঠিকে থাকতে পারে নাই। একুশের চেতনা স্বৈরাচারী রাষ্ট্র না, একুশ আমাদের শিখিয়েছে মাথা নত না করতে। তাই এসব স্বৈরাচার ও অগণতান্ত্রিকতা বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন সবসময় লড়াই জারি রাখবে।

 

আরকে/ সাআ / চখ