chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

৭০ শতাংশ দৃশ্যমান চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন

আসছে জুন থেকে অক্টোবরের মধ্যে যে কোন সময় চালু হবে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ট্রেন চলাচল। এর মধ্যে দিয়ে রেল যোগাযোগে যুক্ত হবে সৈকতের শহর।

কক্সবাজার সমুদ্র। আর সমুদ্রের অন্যতম প্রতীক হচ্ছে শামুক। তাই কক্সবাজারে রেলস্টেশন তৈরি হচ্ছে শামুকের আদলে।

চারতলা ভবনের নিচতলায় টিকিট কাউন্টার, অভ্যর্থনা, লকারসহ নানা সুবিধা। দ্বিতীয় ও চতুর্থ তলায় শপিংমল, রেস্তোরাঁ ও কর্মকর্তাদের আবাসন। তিন তলায় তারকা মানের হোটেল। এরই মধ্যে রেলস্টেশন তৈরির ৭০ ভাগ চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারী পর্যন্ত রেললাইন আছে আগে থেকেই। নতুন স্থাপন হচ্ছে দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার রেলপথ। এই পথে থাকছে বেশ কয়েকটি ফ্লাইওভার, হাইওয়ে ক্রসিং এবং হাতিসহ বন্যপ্রাণীর চলাচলের জন্য ওভারপাস ও আন্ডারপাস। এসবের নির্মাণ কাজ চলছে দ্রুত গতিতে।

বাস্তবায়নকারী সংস্থার কর্মকর্তা ও প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ আহমেদ শফি বলেন, ৭০ শতাংশ কাজ এখন দৃশ্যমান কক্সবাজারের পর্যটন ব্যবসায়ী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা মনে করছেন, শুধু পর্যটনই নয়,আন্তর্জাতিক করিডোরে পরিণত হবে এই রেলপথ। রেল চালু হলে স্বল্প সময়ে ও কম খরচে কৃষিপণ্য, মাছ, লবণ পরিবহন করা যাবে। এতে কক্সবাজারের পর্যটনসহ সামগ্রিক অর্থনীতিতে আসবে বৈপ্লবিক পরিবর্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রাধিকার প্রকল্প ১০২ কিলোমিটারের চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথের নির্মাণকাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। স্বপ্ন এখন চূড়ান্ত বাস্তবায়নের পথে।

প্রকল্পের অগ্রগতি ৭০ শতাংশ। আগামী জুনে প্রকল্পের শ্লট-১ (চকরিয়া- কক্সবাজার এবং শট-২ (দোহাজারী-চকরিয়া) এর কাজ শেষ হলে এ পথে সাধারণ ট্রেনের সঙ্গে ‘পর্যটন বিশেষ ট্রেন’ চলবে। এর ফলে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে আমূল পরিবর্তন আনবে রেল যোগাযোগ। ঢাকা থেকে সরাসরি ট্রেনে যাওয়া যাবে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত দর্শনে। মিটার গেজ লাইনে বসবে বিশেষ সুবিধা সম্বলিত আরামদায়ক ট্যুরিস্ট কোচ। পর্যটক ট্রেনে সর্বনিম্ন ৭০০ টাকায় ঢাকা থেকে যাওয়া যাবে কক্সবাজার। প্রতিদিন রাজধানী থেকে ছাড়বে ১০ জোড়া ট্রেন লাইন দিয়ে ১০০ কিলোমিটারের বেশি গতিতে চলতে পারবে ট্রেন। বছরে প্রায় ২ কোটি যাত্রী পরিবহনের সক্ষমতা নিয়ে।

পর্যটন নগরীতে নতুন বছর চালু হচ্ছে ঝিনুক আকৃতির রেলস্টেশন। এই স্টেশন চালু হলে ঢাকা থেকে মাত্র ৮ ঘণ্টায় সমদ্র নগরীতে পৌঁছানো যাবে। আর চট্টগ্রাম থেকে যেতে লাগবে আড়াই ঘণ্টা। রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, ঢাকা থেকে কক্সবাজার চলাচলে সর্বোচ্চ টিকিটের দাম হবে ১৫০০ টাকা। এশিয়ার একমাত্র পর্যটন স্টেশন চালু হলে এটি দেখতে অনেক মানুষ ছুটে আসবেন। আবার যাতায়াত সহজ হওয়ায় সমুদ্র নগরীতে বাড়বে কয়েকগুণ পর্যটক।

দেশের অন্যতম বন্যপ্রাণি বনাঞ্চলসহ কয়েকটি সবুজ বনাঞ্চলের ভেতর দিয়ে এই রেলপথ মিলিয়ে যাবে পাহাড়ি রাজ্যে। উইনডো স্ক্রিনে হয়তো ধরা পড়বে দূরের কোন বন্য হাতি, বানরের ঝাঁক অথবা কানে ভেসে আসবে পাখির মন ভোলানো ডাক। এমনই সব অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে দেখতে কখন দীর্ঘ রেল যাত্রা শেষে পৌঁছে যাবে সমুদ্রতীরে, তা হয়তো টেরই পাবে না।

পাশাপাশি দেশের উত্তর-দক্ষিণাঞ্চলের পর্যটকরা ট্রেনে সরাসরি কক্সবাজারে যেতে পারবেন। ট্রেনে পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে ৫৪টি অত্যাধুনিক ট্যুরিস্ট কোচ কেনা হচ্ছে। সুপ্রশস্ত এসব কোচে বসে পর্যটকরা পাহাড়ঘেরা পথের প্রাকৃতিক দৃশ্য অনায়াসে দেখতে পারবেন।

মআ/চখ

এই বিভাগের আরও খবর