chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

৮ নির্দয় পাষাণ্ডের কাণ্ড

ওরা দিনে ইট ভাটায় কাজ করাত, রাতে পায়ে শেকল বেঁধে খুঁটির সাথে তালা মেরে রাখত 

হাটহাজারির দুর্গম পাহাড়ি এলাকা উদালিয়ায় মধ্যযুগীয় বর্বর কায়দায় অপহরণ করে পায়ে শিকল বেঁধে ইট ভাটায় কাজ করানোর অভিযোগে ৮ জনকে আটক করা হয়েছে।  র‌্যাব বলছে, আটককৃতরা ” নির্দয় ও পাষাণ্ড”। তাদের জিন্মি দশা থেকে দুই অপহ্নতকে উদ্ধার করা হয়েছে।

র‌্যাবের দাবি,চক্রটি ভিকটিমদের পরিবারের কাছে মুক্তিপণ আদায় করার পরও ভিকটিমদের না ছেড়ে ব্লাংক স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিত। পরে তাদের মধ্যযুগীয় কায়দায় দূর্গম পাহাড়ী এলাকায় অবস্থিত ইটভাটায় দিনে জবর দস্তিমূলকভাবে কাজ করাত এবং রাতের বেলা পায়ে শেকল বেঁধে খুঁটির সাথে তালা মেরে রাখত।

আটককৃতরা হলেন-শাহাদাৎ হোসেন চৌধুরী প্রকাশ কালু চেয়ারম্যান (৬৮), মোঃ খোকন (৩২), মোঃ আলা উদ্দিন (৩৭), মোঃ ইউসুফ (৩৬), শহিদুল্লাহ রাজু (৩৩), মোঃ নাজিম (৩৬), মোঃ জহিরুল ইসলাম (৪৮) ও মোঃ সেলিম (৫১)।

র‌্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারি পরিচালক মো. আবছার উদ্দিন বলেন, নগরের উত্তর হালিশহর এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে পরিবারসহ বসবাস করতেন এক ব্যক্তি। তিনি রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন।  গত ২০ জানুয়ারি রাতে  ভিকটিম রিকশা নিয়ে বাড়ী থেকে বের হয়। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও ভিকটিম ফিরে না আসায় ভিকটিমের বাবা এবং তার পরিবারের লোকজন বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখোঁজি করেন। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও কোন সন্ধান না পেয়ে ভিকটিমের বাবা হালিশহর থানায় একটি হারানো জিডি করেন।   পরদিন ২১ জানুয়ারি ভিকটিমের বাবার মোবাইলে জনৈক অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি ফোন করে দেড় লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে এবং চাঁদার টাকা না দিলে ভিকটিমকে মেরে ফেলার ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করে। ভিকটিমের বাবা গরীব এবং চাঁদা দেয়ার মত সামর্থ না থাকায় ছেলের জীবন নিয়ে চিন্তিত হয়ে বিষয়টি র‌্যাব-৭, চট্টগ্রামকে অবহিত করেন।

র‌্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারি পরিচালক মো. আবছার উদ্দিন বলেন, এরপর  জড়িত আসামীদের গ্রেফতারে ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রাখে। এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল  ২৬ জানুয়ারি হাটহাজারী থানাধীন বারৈহাট এলাকার একটি ভাড়া ঘর হতে অপহৃত ভিকটিমসহ ২ জন ভিকটিমকে পায়ে লোহার শিকল এবং হাত বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করেন। এসময় অপহরণকারী চক্রের ৮ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা জানান, তারা পরস্পর যোগসাজশে দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন এলাকা থেকে শিশুসহ বিভিন্ন বয়সী লোকজনকে অপহরণ করে আটকে রাখত। পরে তাদের পায়ে শিকল বেঁধে মারধর করত এবং ভিকটিমদের পরিবারের কাছে মুক্তিপণ বাবদ বিভিন্ন অংকের চাঁদা আদায় করত।