chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়ছে ১০ মিটার গভীরতার জাহাজ

আজ ১৫ জানুয়ারি প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে চট্টগ্রাম  বন্দর জেটিতে নোঙর করছে ১০ মিটার গভীরতা ও ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের বড় জাহাজ । এ জাহাজে ৩ হাজার ৫০০ টিইইউএস কনটেইনার পরিবহন করা সম্ভব হবে। ফলে আমদানি খরচ অন্তত ৩০ ভাগ কমে যাবে।

সাগর ও নদীর সংযোগস্থলের কম গভীরতার কারণে চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে ১০ মিটার গভীরতা ও ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের বড় জাহাজ ভেড়াতে এতদিন বড় বাধা ছিল। পাশাপাশি বড় জাহাজ ভেড়াতে কর্ণফুলী নদীর মোহনায় গভীরতা বৃদ্ধি ও পাইলটদের প্রশিক্ষণসহ সব ধরনের প্রস্তুতিমূলক কাজও সম্পন্ন করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক চট্টলার খবরকে বলেন, বন্দর জেটিতে বড় জাহাজ ভেড়ানোর জন্য আজ রবিবার ট্রায়াল রান দেয়া হয়। চলতি মাসের শেষেই আমরা নতুন জাহাজ ভেড়ানোর ঘোষণা দেবো। ইতোমধ্যে জাহাজ হ্যান্ডলিংয়ের মালিকদের বলে দিয়েছি আমরা ২০০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভেড়াতে প্রস্তুত। পাশাপাশি পাইলট নির্বাচনের ক্ষেত্রেও আমরা দক্ষ পাইলট নিয়োগ দেবো।

বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, এতদিন চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে সাড়ে ৯ মিটার ড্রাফট এবং ১৯৫ মিটার লম্বা জাহাজ ভিড়তে পারতো। ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে বন্দরে উপর্যুক্ত ড্রাফট ও লেংথের জাহাজ নোঙর করে আসছে। এর আগে বন্দরে আরো ছোট জাহাজ ভিড়ত। দীর্ঘ সময় ধরে বড় জাহাজ ভেড়াতে বড় বাধা ছিল কর্ণফুলী নদীর প্রবেশমুখ অর্থাৎ সাগর ও নদীর সংযোগস্থলের কম গভীরতা। তবে লন্ডন ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘এইচআর ওয়েলিং ফোর্ড’-এর জরিপে ইতিবাচক সাড়া পেয়ে বড় জাহাজ ভেড়ানোর উদ্যোগ নেয় বন্দর। বড় জাহাজ ভিড়লে আমদানি-রফতানি খরচ কমার পাশাপাশি বন্দরে জাহাজজট কমে যাবে।

গত এপ্রিল মাসে পাঠানো ওই জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে বন্দরের যে অবকাঠামো রয়েছে তা ব্যবহার করে ১০ মিটার ড্রাফট ও ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের জাহাজ ভেড়ানো যাবে। তবে বহির্নোঙ্গর ও গুপ্তখালের সন্নিকটের বাঁকে কিছুটা কাজ করে নদীর দুয়েকটি পয়েন্টে ড্রেজিং করলে বন্দর চ্যানেলে ২২৫ মিটার দৈর্ঘ্যের ও ১১ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভেড়ানো সম্ভব হবে।

বন্দর কর্মকর্তারা জানান, ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ বার্থিং করা চালুর ফলে ৩ হাজার ৫শ টিইইউএস কনটেইনার পরিবহন করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি ৯ থেকে ১৩ নম্বর জেটি এবং পিসিটি ও এনসিটিতেও ভেড়ানো যাবে ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চিফ হাইড্রোগ্রাফার কমান্ডার আরিফুর রহমান বলেন, ‘গবেষণা প্রতিষ্ঠান যে রিপোর্ট দিয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে আজ রবিবার জাহাজের ট্রায়াল রান শুরু হবে। এই রানে সফল হলে বিদেশি শিপিং কোম্পানিগুলোকে বড় জাহাজ পাঠানোর জন্য সার্কুলার দেয়া হবে। তখন বড় জাহাজ এলে বার্থিং দেব। তিনি আরো বলেন, বন্দরের ১৮টি জেটিতে একই ড্রাফট থাকবে না।

শিপিং এজেন্ট এসোসিয়েশনের পরিচালক খায়রুল আলম সুজন চট্টলার খবরকে বলেন, ১০ মিটার গভীরতা ও ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের জাহাজ চলাচল শুরু হলে আমাদের আমদানি-রপ্তানিকারকরা আর্থিকভাবে লাভবান হবেন। পাশাপাশি বন্দরে জাহাজজটও কমে যাবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি খায়রুল আলম সুজন বলেন, ‘আগের চেয়ে বেশি ড্রাফট এবং বেশি দৈর্ঘ্যের জাহাজ ভিড়তে পারলে একই সময়ে একই জাহাজে কনটেইনার পরিবহন বাড়বে। এতে পণ্য আমদানি-রফতানিতে খরচ কমে আসবে।’

বিজিএমইএ’র প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, বন্দর জেটিতে ১০ মিটার গভীরতা ও ২০০ মিটার দৈর্ঘের বড় জাহাজ চলাচল শুরু হলে ৩ হাজার ৫০০ টিইইউএস কনটেইনার পরিবহন করা সম্ভব হবে। ফলে আমাদের আমদানি খরচ অন্তত ৩০ ভাগ কমে যাবে।

মআ/চখ

এই বিভাগের আরও খবর