chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

প্লাস্টিকের ব্যাগে রান্নার গ্যাস বিক্রি হচ্ছে পাকিস্তানে

কয়েক বছর ধরেই চরম অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান। সে সংকট এখন এতটাই ভয়াবহ হয়ে উঠেছে যে, দেশটির সাধারণ নাগরিক লম্বা বেলুনের মতো প্লাস্টিকের ব্যাগ ভরে নিয়ে যাচ্ছে রান্নার গ্যাস। সম্প্রতি এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ ভাইরাল হয়েছে।

ভিডিওটিতে দেখা যায়, দেশটির খাইবার পাখতুনখোয়া এলাকার বিক্রেতারা কম্প্রেসরের মাধ্যমে প্লাস্টিকের ব্যাগগুলোতে গ্যাস ভরছেন। এক একটি ব্যাগে প্রায় তিন থেকে চার কেজি গ্যাস ভরা যায়। এমনকি, এ গ্যাস ভরতে সময় লাগে এক ঘণ্টারও বেশি।

সিলিন্ডারসহ গ্যাসের দাম অনেক হওয়ায় পাকিস্তানের জনগণ এখন তাদের রান্নার গ্যাসের প্রয়োজনীয়তা মেটাতে প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার করছেন। তাছাড়া, গ্যাস সিলিন্ডারের মজুত কমে যাওয়ায় এর একটি অন্যতম কারণ।

পাকিস্তানের সচেতন নাগরিকরা বলছেন, এভাবে পলিথিনে ভরে গ্যাস বিক্রি মোটেই নিরাপদ নয়। গ্যাসভর্তি প্রতিটি পলিথিন মারাত্মক বোমার সমান। এগুলো ফেটে গেলে মুহূর্তের মধ্যে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

জানা গেছে, পাকিস্তান সরকার ২০০৭ সাল থেকে খাইবার পাখতুনখোয়ায় রান্না করা গ্যাসের সংযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। বিশেষ করে হাঙ্গু শহরের বাসিন্দারা গত দুই বছর পাইপলাইন খারাপ থাকায় গ্যাস পাচ্ছেন না।

২০২০ সালে খাইবার পাখতুনখোয়া ক্ষেত্র থেকে প্রায় ৮৫ ব্যারেল তেল ও ৬৪ হাজার ৯৬৭ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হয়েছিল। এর পরও মানুষ ৫০০ থেকে ৯০০ টাকায় প্লাস্টিকের ব্যাগে গ্যাস কিনতে বাধ্য হচ্ছে, কারণ একটি বাণিজ্যিক সিলিন্ডারসহ গ্যাস কিনতে গেলে দাম প্রায় ১০ হাজার পাকিস্তানি রুপি পড়ে যায়।

বিদেশি ঋণে জর্জরিত পাকিস্তানের অর্থনৈতিক অবস্থা নজিরবিহীন সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এমন গুঞ্জন বহুদিন ধরেই শোনা যাচ্ছে। শাহবাজ শরীফের সরকারের উত্থান আর ইমরান খানের সরকারের পতন, তারপর থেকেই পাকিস্তানে অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহ আর ঝামেলা লেগে রয়েছে।

একদিকে রাজনৈতিক অস্থিরতা, অন্যদিকে অর্থনৈতিক মন্দা। সবমিলিয়ে নিজেদের মৌলিক অধিকারগুলো থেকে চরমভাবে বঞ্চিত হচ্ছেন পাকিস্তানের জনগণ।

পলিথিনে করে গ্যাস বিক্রি করা কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, পুলিশি অভিযানের পর তাদের ব্যবসা নষ্ট হয়ে গেছে। জরিমানা ও গ্রেফতারের ভয়ে প্রকাশ্যে গ্যাসভর্তি পলিথিন ব্যাগ বিক্রি করেন না। শুধু সেসব গ্রাহকদের কাছেই বিক্রি করেন, যারা পুলিশে রিপোর্ট করবেন না বলে আশ্বাস দেন।

খাইবার পাখতুনখোয়ায় পাবলিক সেক্টর ইউটিলিটি সুই নর্দান গ্যাস পাইপলাইনস লিমিটেডের (এসএনজিপিএল) জ্যেষ্ঠ্য কর্মকর্তা ইয়াওয়ার আব্বাস বলেন, সব সমস্যার মূলে রয়েছে দারিদ্র্য ও উচ্চ মূল্যস্ফীতি।

সূত্র: ডয়েচে ভেলে

মআ/চখ

 

এই বিভাগের আরও খবর