ঠান্ডায় জবুথবু চট্টগ্রাম
গত সপ্তাহ ধরে বাড়ছে শীত। জবুথবু চট্টগ্রামবাসী। দিনভর ঝলমলে রোদে শীতের পোশাক পরে ঠকঠক করে কাঁপছে মানুষ। সকালে লেপ ছেড়ে বের হওয়াই দায় হয়ে পড়ছে।
এদিকে, মন উড়ুউড়ু ভ্রমণরসিকদের। শীত যত নামছে, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে চট্টগ্রাম বিভাগের
পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে ভিড়। কান ঢাকা টুপি পড়ে হাসি মুখে দোকান সামলাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
আবহাওয়া অফিস জানাচ্ছে, গত সোমবার থেকে আজ সোমবার পর্যন্ত ছিল চলতি মরসুমে জেলার শীতলতম সময়। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বাড়তে পারে শীতল হাওয়া। আজ সোমবার সকালে চট্টগ্রামের তাপমাত্রা নেমেছিল ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। আজ রাতে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামতে পারে বলে ধারণা করেছে আবহাওয়া দপ্তর।
আগামীকাল মঙ্গলবার তাপমাত্রার পারদ নিম্নমুখীই রয়েছে। আবহাওয়া অফিসের তথ্য জানান দিচ্ছে, গত সাত দিন ধরে পারদ ক্রমশ নামছে।
আপাতত শীত-আমুদে মানুষজনের জন্য রয়েছে আশার খবর। আবহাওয়া অফিস জানাচ্ছে, আগামী কয়েক দিনও পারদ অধোগামী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
চট্টগ্রাম নগরের চকবাজারের বাসিন্দা রবিউল হোসেন মিন্টু বলেন, “গত ১৫ ডিসেম্বর কক্সবাজার গিয়ে অস্বস্তি হচ্ছিল। শীত কই! দিনভর জ্যাকেটটা হাতে নিয়ে ঘুরেছি। চড়া রোদে দাঁড়িয়ে থাকাই মুশকিল হচ্ছিল। ভেবেছিলাম শীত হয়তো এই বছর আর পড়বেই না।”
গত সোমবার থেকে আক্ষেপ মিটেছে তাঁর। রবিউল হোসেন মিন্টু বলেন, “ পরিবার নিয়ে কক্সবাজার বেড়ানোর পরে শীত পড়ল। ভাবছি এক দিন ছুটি নিয়ে আবারও করে ঘুরে আসব। শীতে বেড়ানোর মজাটাই আলাদা।
হালিশহরের বাসিন্দা শাকিলা পারভীন বলেন, “তীব্র গরমের কারণে ভাবছিলাম এ বার আর বান্দরবানে
যাওয়াই হবে না। অমনি শীতটা বেড়ে গেল। আগামী শুক্রবার পরিবার নিয়ে যাচ্ছি বান্দরবানের নীলাচল।”
ঠান্ডা নামতে শুরু করার পরে জনজীবনেও শীতের চেনা ছবি ফিরে এসেছে। রোদে শীতের পোশাক পরে থরথর করে কাঁপছে মানুষ। সন্ধ্যের পরে উপজেলার গ্রামগুলোর অলিগলিতে আগুন জ্বেলে চলছে হাত-পা সেঁকা। রাত একটু গড়াতেই শহর কি গ্রামের রাস্তা ঘাট সুনসান। শীত বাড়ার সাথে বাড়ছে ছিনতাই, ডাকাতির মতো অপরাধও।
চন্দনাইশের মোহাম্মদ হোসাইন নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, “সকালে লেপ ছেড়ে বের হওয়াই দায় হয়ে পড়ছে। মোটরবাইক, সাইকেল চালালে হাত ঠান্ডায় হিম হয়ে যাচ্ছে। রাতে আগুন জ্বেলে বন্ধুরা মিলে আড্ডা দিচ্ছি।”
চট্টগ্রামে ঠান্ডা যত বাড়ছে হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ড ও ডায়রিয়া ওয়ার্ডে রোগীর ভিড় বেড়েছে। চট্টগ্রাম মেডিকেলে খবর নিয়ে জানা গেছে, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে প্রতিদিন অতিরিক্ত ১০০ এর অধিক রোগী ভর্তি হচ্ছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক গিয়াস উদ্দিন বলেন, সাধারণত শীতের সময়টাতে শিশুদের ব্রঙ্কিওলাইটিস, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ার প্রকোপ বেশি দেখা দেয়। এতে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই। এই সময়টাতে শিশুকে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো অব্যাহত রাখতে হবে। গোসল ও হাত–পা ধোয়ার ক্ষেত্রে গরম পানি ব্যবহার করতে হবে।