chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

শীত বাড়তেই নগরে লেগেছে পিঠা খাওয়ার ধূম

শীতকাল মানে পিঠা খাওয়ার উৎসব। শীত এলে নগরে ও গ্রামে পিঠা খাওয়ার ধূম পড়ে। শীত এলেই হরেক রকম মুখরোচক পিঠা বানানোর আয়োজন শুরু হয় চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন স্থানে। শীত পিঠার মধ্যে ভাপা পিঠা (ধুপি পিঠা) একটি অন্যতম পিঠা। ভাপা পিঠা আবার হরেক রকম পদ্ধতিতে তৈরি করা হয়। কখনো মিষ্টি ভাপা, কখনো ঝাল ভাপা। খেজুর রস দিয়ে ভাপা পিঠা খেতে বড়ই সুস্বাদু ও মুগ্ধকর।

বিশেষ করে ভাপা পিঠা, তেলের পিঠা ও চিতল পিঠা। এসব পিঠার সমাদর সবখানেই সমানভাবে রয়েছে। শীত বাড়ার সাথে সাথে নগরীর ফুটপাতে শীত পিঠার ব্যবসা জমে উঠেছে। এগুলোর মধ্যে কিছু ভালোমানের এবং কিছু নিম্নমানের রয়েছে। ফুটপাতে পিঠা তৈরির সময় অনেক সময় ধুলোবালি মিশে যায়। যা জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

শীতকালে চট্টগ্রাম মহানগরীর অলিগলিতে রাস্তার আশপাশে পিঠাপুলির দোকান বসে। এসব দোকানে কিশোর থেকে শুরু করে বয়ষ্ক লোকেরা পিঠা তৈরি করে ক্রেতার কাছে বিক্রি করে। তারা পিঠা বিক্রি করে সংসার চালায়।

নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিজাত দোকানে রকমারি পিঠা বিক্রি করা হচ্ছে। বড় লোক থেকে শুরু করে সব শ্রেণির মানুষ পিঠার দোকান থেকে পিঠা কিনে খাচ্ছেন। অনেকে পিঠা কিনে বাসাবাড়িতে পরিবারের সদস্যদের জন্য নিয়ে যান। বাসাবাড়িতে সকাল-বিকাল পিঠা দিয়ে নাস্তা করেন। পরিবারের সদস্যরা পিঠা নাস্তা হিসেবে খেতে পছন্দ করেন।

ভাপা পিঠাতে গুড় দিয়ে জমজমাট ব্যবসা চলছে। এতে ক্রেতাদের খাবার স্বাদ বাড়িয়ে দিচ্ছে। শহরে অভিজাত দোকানে কিংবা পিঠা ঘরে পিঠা খাওয়ার সুব্যবস্থা রয়েছে। শিল্পপতি, ব্যবসায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী, বিভিন্ন ক্লাব ও এনজিও কর্মীরা এসব পিঠা খেয়ে রসনা তৃপ্ত করেন।

নগরীর এনায়েত বাজার মোাড়ে প্রতিবছর শীত মওসুমে ভাপা পিঠা বিক্রি করেন বৃদ্ধ আলী আজম। ৮৫ বছর বয়সী লাকসামের বাসিন্দা আলী আজম জানান, তিনি এ জায়গায় ১৪ বছর ধরে পিঠা বিক্রি করে আসছেন। পিঠা বিক্রি করে বেশ লাভবান হচ্ছেন জানিয়ে আলী আজম বলেন, প্রতিবছর অপেক্ষা করি কখন শীত মওসুম আসবে।

শীতের পিঠার অন্যতম উপাদান খেজুর গুড়। চট্টগ্রাম অঞ্চলে খেজুরের রস এখন অনেকটা দুষ্প্রাপ্য। ইটভাটায় হজম হয়ে গেছে বেশির ভাগ খেজুর গাছ। এরপরও কয়েকটি উপজেলায় এখনো খেজুরের রস পাওয়া যায়। এর পাশাপাশি যশোর অঞ্চল থেকে খেজুরের গুড় ও রস (রাফ) আসছে ব্যাপকহারে। নগরীর হাটবাজারগুলোতে পাওয়া যাচ্ছে হরেক রকমের খেজুরের গুড়। অনেকে বাসাবাড়িতেও হরেক রকমের পিঠা তৈরি করছে। পিঠার আরেক উপাদান নারিকেলেরও চাহিদা বেড়ে গেছে। সেইসাথে বেড়েছে দামও। একটি নারিকেল বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা।

এ বিষয়ে দেওয়ান হাট ভ্রাম্যমাণ পিঠা বিক্রেতা নাছির উদ্দিন বলেন, ‘শীতকালে শ্রমজীবী, রিকশাচালক, ড্রাইভার, শ্রমিক, চাকরিজীবীসহ অন্যান্য লোকজনের কাছে মজাদার খাবার এ পিঠা তায় খায়।

যুগের পরিবর্তনে বর্তমানে গ্রাম থেকে হারিয়ে যাচ্ছে পিঠা উৎসব। আগে শীত বা নতুন ধান বাড়িতে উঠলেই গৃহবধূরা নতুন পিঠা তৈরিতে ব্যস্ত থাকতেন। এ দৃশ্য গ্রামে কমে গেলেও বাণিজ্যিকভাবে ভাপা পিঠা বিক্রি হচ্ছে হাট-বাজার ও রাস্তার মোড়গুলোতে। দামে কম হলেও অনেক সুস্বাদু খাবার এ পিঠা। তবে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার পরিবেশন হচ্ছে কি না সেদিকে কর্তৃপক্ষের সতর্ক দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন।

চখ/জুইম

 

এই বিভাগের আরও খবর