যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে বঙ্গবন্ধু সার্বভৌমত্বের রক্ষায় সশস্ত্রবাহিনীকে যুগোপযোগী করার পদক্ষেপ নেন
প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ নৌবাহিনী কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতে ইন্টারন্যাশনাল ফ্লিট রিভিউ আয়োজন করায় ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ যে পারে সেটাই আজ প্রমাণিত।
আজ বুধবার (৭ ডিসেম্বর) ২৮টি দেশের নৌবাহিনীর অংশগ্রহণে কক্সবাজারে ইন্টারন্যাশনাল ফ্লিট রিভিউ ২০২২-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বক্তব্য দেন।
প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ নৌবাহিনীর অংশগ্রহণে ইন্টারন্যাশনাল ফ্লিট রিভিউ-২০২২ অনুষ্ঠান আয়োজন করায় সবাইকে শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী। অংশগ্রহণকারী সব দেশ এবং বিভিন্ন দেশের নৌপ্রধানদের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ যে পারে সেটাই আজ প্রমাণিত হলো।
এ সময় মহান মুক্তিযুদ্ধের সব শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের শূন্য অর্থনীতিতে দাঁড়িয়েও বঙ্গবন্ধু দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য সশস্ত্র বাহিনীকে যুগোপযোগী করার পদক্ষেপ নেন। ওই সময় তিনি ঘোষণা করেছিলেন, সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব; কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়। আর তাই শান্তির জন্য শক্তিশালী নৌবাহিনী গড়ে তুলেছে বাংলাদেশ, যুদ্ধের জন্য নয়।
ভৌগোলিক সীমানা আলাদা হলেও সমুদ্র জলরাশি সব দেশকে যুক্ত করে রেখেছে। এ মিলনমেলায় সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব জোরদারের আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে প্রধানমন্ত্রী পৌঁছান কক্সবাজারে নয়নাভিরাম ইনানী সমুদ্রসৈকতে ইন্টারন্যাশনাল ফ্লিট রিভিউর মনোজ্ঞ আয়োজনে। তারপর বিশ্ব নৌবাহিনীর ঐতিহ্য অনুযায়ী ঘণ্টা বাজিয়ে মহড়ার উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা। তার আহ্বানে সাড়া দেন বিশ্বের ২৮টি দেশের নৌবাহিনীর প্রতিনিধিরা।
এ আয়োজনে যোগ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ভারতসহ ২৮ দেশের নৌবাহিনীর সদস্যরা। অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর চৌকস নৌ-সেনারা প্যারেডের মাধ্যমে সালাম জানান প্রধানমন্ত্রীকে।
এ আয়োজনের পাশাপাশি ইনানী সৈকতে স্থাপিত বাংলাদেশ নেভির স্থায়ী জেটিও উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ইতিবাচক সামরিক ভাবমূর্তি ও সক্ষমতার নতুন বার্তা দিতে এবার বাংলাদেশ আয়োজন করেছে ইন্টারন্যাশনাল ফ্লিট রিভিউ-২০২২। বিভিন্ন দেশ থেকে আসা যুদ্ধজাহাজ নিয়ে প্রথমবার এ আয়োজনে অংশ নিচ্ছেন তারা।
নীল জলরাশিতে সারিসারি যুদ্ধজাহাজ আর নীল দিগন্ত থেকে প্যারাস্যুটে জাম্প করেন নেভি সিলের চৌকস সদস্যরা। একদিকে একঝাঁক স্পিডবোটের উন্মত্ত টহল; অন্যদিকে ক্ষীপ্রগতির হেলিকপ্টার থেকে একে একে নামছেন নেভি সোয়াডসের সদস্যরা। এভাবেই প্রধানমন্ত্রীর সামনে নৌবাহিনীর সদস্যরা নিজেদের সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেন।
উন্মুক্ত নোনা জলরাশির এ আয়োজনে নিজস্ব সাংস্কৃতিক উপাদানসমৃদ্ধ ইভেন্টের পাশাপাশি উপস্থাপিত হয় ভিনদেশি শিল্পীদের পরিবেশনাও, যা এদিন বাস্তবে উপভোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
আন্তর্জাতিক এ ইভেন্ট আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের জন্য মঙ্গলবার শেষ করা হয় এর চূড়ান্ত মহড়া।
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেশ কয়েকটি আয়োজনে অংশ নিতে একদিনের সফরে কক্সবাজার আসেন প্রধানমন্ত্রী। চার দিনব্যাপী ইন্টারন্যাশনাল ফ্লিট রিভিউর উদ্বোধনীতে অংশ নেয়া ছাড়াও বিকেলে আওয়ামী লীগের জনসভায় ভাষণ দেন তিনি।