চট্টগ্রামে প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশ রেকর্ডের টার্গেট আওয়ামী লীগের
নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে অনড় অবস্থানের মুখে সারাদেশে জনসমাবেশ করছে বিএনপি। ব্যাপক ধর পাকড় আর পরিবহন ধর্মঘটের মধ্যেও ব্যাপক সংখ্যাক নেতাকর্মীদের জমায়েতের মাধ্যমে জানান দিচ্ছে নিজেদের সক্ষমতা। এর মধ্যেই ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগও পিছিয়ে নেই। দ্বাদশ সংসদীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে দলটি সাংগঠনিক কার্যক্রমের পাশাপাশি হাঁটছে জনসমাবেশের পথে।
স্বয়ং দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমাবেশে অংশ নিতে দেশজুড়ে চষে বেড়াবেন। কোথাও আবার দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অংশ নিচ্ছেন। সমাবশে অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন। একই সঙ্গে সরকারের নেওয়া উন্নয়ন প্রকল্পের কথা তুলে ধরছেন। সম্প্রতি তিনি বৈশ্বিক ও দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক দিক নিয়ে তুলনামূলক বিশ্লেষণ সামনে নিয়ে আসছেন। এসব সমাবেশে বিএনপির মতো আওয়ামী লীগ ব্যাপক সংখ্যাক নেতাকর্মী সমাবেশের টার্গেট নিয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হবে প্রতিদ্বন্দ্বীতামূলক। তবে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে টানাপোড়ন, দ্রব্যমূল্যের নাভিশ্বাস, অর্থনীতির টালমাটাল অবস্থায় পরিবেশ যেনো ক্রমই উত্তাপ ছড়াচ্ছে। এমন পরিরিস্থিতে আগামী ৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে জনসমাবেশে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নগরের পলোগ্রাউন্ড মাঠে তিনি দলীয় সমাবেশে বক্তব্য রাখার কথা রয়েছে। এর আগে সর্বশেষ ২০১২ সালে তিনি এই মাঠে সমাবশে অংশ নিয়েছিলেন। এই সমাবেশে রেকর্ড সংখ্যাক মানুষের গণজমায়েতের টার্গেট নিয়েছে এগোচ্ছে আওয়ামী লীগ।
দলীয় প্রধানের আগমনকে রাঙিয়ে তুলতে ইতিমধ্যে চট্টগ্রামে বইছে উৎসববের আমেজ। সমাবেশ সফল করার পাশাপাশি বিপুল সংখ্যাক নেতাকর্মীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে ব্যস্ত সময় পার করছে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা। চট্টগ্রাম উত্তর, দক্ষিণ ও মহানগরের সঙ্গে থানা-ওয়ার্ডে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি সভা। দফায় দফায় সমাবেশ স্থলের মাঠ পরিদর্শনে যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের জ্যৈষ্ঠ নেতারা। বিভিন্ন স্থানে পথসভা, মাইকিং করে জানান দেওয়া হচ্ছে বিশাল জনসমাবেশের। সংস্কার করা হয়েছে বিভিন্ন খানাখন্দ সড়ক।
অপরদিকে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে নগরের প্রধান প্রধান সড়ক ও অলিগলিতে ছেয়ে গেছে নেতাকর্মীদের ব্যানার-ফেস্টুনে। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ও সড়কে বসেছে রঙের প্রলেপ। নেতাকর্মীদের মাঝেও বিরাজ করছ চাঙ্গা ভাব। চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দলীয় প্রতীক নৌকার আদলে এবারের মঞ্চ প্রস্তুত করা হচ্ছে। ১৬০ ফুট দৈর্ঘ্যরে বিশাল মঞ্চে একসঙ্গে ২০০ অতিথি বসার সুযোগ পাবেন। তবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মঞ্চে অতিখি হিসেবে থাকবেন তা এখনও নির্ধারিত হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ সমাবশেস্থল ও আশেপাশের মানুষ শোনার জন্য আনা হচ্ছে ঐতিহাসিক কলরেডির ১৫০ টি মাইক। মঞ্চের মাঝে ৮০ ফুটের এলইডি দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ দেখানো হবে। এর বাইরে সমাবেশের আশেপাশেও সাতটি স্থানে বসানো হবে এলইডি। এছাড়া মঞ্চের সামনে অতিথি অনুযায়ী পৃথক প্যান্ডেল তৈরি করা হচ্ছে।
গেল ৯ নভেম্বর এক যৌথ সভায় আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ চট্টগ্রামের জনসমাবেশ জনসমুদ্রে রুপ নেওয়ার কথা জানিয়েছিল। তিনি চট্টগ্রামের সব উজেলার এবং নগরের ৪১ ওয়ার্ডেও নসব ইউনিটের নেতাকর্মীদের হাজির থাকতে নির্দেশ দেন।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামে আসবেন বলার পর থেকেই উৎসবের শেষ নেই। উনাকে কাছ থেকে দেখার জন্য সবাই উন্মুক হয়ে আছেন। চট্টগ্রামের উন্নয়নের ভার তিনি নিজের হাতে নিয়েছেন। এরই মধ্যেই আমাদের সমাবেশের মাঠ প্রস্তুতির কাজ শেষের পর্যায়ে রয়েছে। প্রতিটি সংসদীয় আসনের এমপি ও নেতারা নিজ নিজ অবস্থান থেকে জনগণকে আনার কাজে সমন্বয় করছে। এর সঙ্গে মহানগর আওয়ামী লীগ. যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা রাত দিন কাজ করে যাচ্ছেন।
এক প্রশ্নে তিনি বলেন, দীর্ঘ সময়ের পর প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামে সমাবেশে আসছেন। দলের প্রতিটি নেতাকর্মীরা দিনটির প্রহর গুনছে। আমাদের কাউকে পাল্লা দিয়ে মানুষ ডেকে আনতে হবে কেনো? এত সংখ্যাক মানুষকে কোথায় স্থান দিবে সেই পরিকল্পনাই করতে হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে দিক নির্দেশনা দিবেন। বিগত সময়ে সরকারের নেওয়া উন্নয়ন কর্মকা- তুলে ধরবেন।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর জনসমাবেশকে সামনে রেখে রোববার (২৭ নভেম্বর) নগরের বিভিন্ন স্থানে পথসভা শুরু করা হয়েছে। পথ সভায় অংশ নিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর আগমণের খবরে চট্টগ্রামের মানুষের মাঝে উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। পাড়ায় পাড়ায় প্রস্তুতি সভায় সাধারণ মানুষ সমাবেত হচ্ছে। ৪ ডিসেম্বর সমাবশে জনসসমুদ্রে পরিণত করা হবে।
নচ/চখ