chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

অস্ত্র মামলার রায় শুনে খুশিতে বসা থেকে দাঁড়িয়ে গেলেন আসামিরা

বিরল এক ঘটনা ঘটেছে  কক্সবাজার  আদালতের। হঠাৎ রায় শুনে আসামিরা  খুশি ।

 

আজ বুধবার দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত টেকনাফের ১০১ ইয়াবা ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত অস্ত্র ও মাদক মামলার রায় ঘোষণা করেন আদালত। এ সময় রায় শুনেই খুশিতে দাঁড়িয়ে উঠেন আদালতে উপস্থিত ১৮ আসামি।

জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে অস্ত্র মামলায় ১০১ জন আসামিকে বেকসুর খালাস এবং মাদক মামলায় ১০১ জন আসামির প্রত্যেককে ১ বছর ৬ মাস করে কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।

রায় ঘোষণার আগে আদালতের কাঠগড়ায় মামলার ১৮ আসামি বিমর্ষ ছিলেন। সবাই মেঝেতে বসা ছিলেন।

রায়ের পর আদালত থেকে কারাগারে নেওয়ার সময় আসামিদের হাসিমুখে দেখা গেছে। এ সময় কেউ কেউ নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানের সমালোচনা করেন।

১৮ আসামির মধ্যে আছেন টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য নুরুল হুদা। তিনি প্রিজন ভ্যানে ওঠার সময় বলেন, আমি পরিস্থিতির শিকার।

এ মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম জানান, দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে বিচারক রায় পাঠ শুরু করেন। রায় পাঠ শেষে ১০১ জনকে ইয়াবা মামলায় ১ বছর ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেন। এ সময় তাদের ২০ হাজার টাকা জরিমানা দেওয়ার নিদের্শ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে আদালত পুলিশের দায়ের করা অস্ত্র মামলায় সবাইকে খালাসের আদেশ দিয়েছেন। রায় ঘোষণাকালে ১৭ আসামিকে আদালতে উপস্থিত থাকলেও অনুপস্থিত ছিলেন ৮৪ জন।

এজাহারের বিবরণ মতে, ২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি টেকনাফ সৈকতের কাছের এলাকায় ইয়াবা ও অস্ত্রসহ একদল ইয়াবা কারবারি অবস্থান নেওয়ার খবরে পুলিশ অভিযান চালায়। ওই সময় পুলিশের কাছে ১০২ জন আত্মসমর্পণের ইচ্ছে প্রকাশ করেন। ওইদিনে টেকনাফ সদরের টেকনাফ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের উপস্থিতিতে ১০২ জন আত্মস্বীকৃত ইয়াবা কারবারি ও গডফাদার সাড়ে ৩ লাখ ইয়াবা, ৩০টি দেশীয় তৈরি বন্দুক ও ৭০ রাউন্ড গুলিসহ আত্মসমর্পণ করেন।

ওইদিনই আত্মসমর্পণকারী ১০২ জনকে আসামি করে টেকনাফ মডেল থানায় অস্ত্র ও মাদক আইনে মামলা দায়ের করা হয়। বাদী হয়ে মামলাটি করেন টেকনাফ থানার তৎকালীন পরিদর্শক (অপারেশন) শরীফ ইবনে আলম। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় পরিদর্শক এবিএমএস দোহাকে।

মামলা দায়েরের দিনই আদালতের মাধ্যমে সব আসামিকে গ্রেফতার দেখিয়ে কক্সবাজার জেলা কারাগারে পাঠান। ১০২ জন আসামির মধ্যে মামলার বিচারিক কার্যক্রম চলাকালে ২০১৯ সালের ৭ আগস্ট মোহাম্মদ রাসেল নামে এক আসামি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম তামান্ন ফারাহর আদালত ১০১ আসামির বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। পরবর্তীতে মামলাটি বিচারের জন্য জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়। একই বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল সব আসামির উপস্থিতিতে শুনানি শেষে মামলার চার্জ গঠন করেন। বিচার শেষে ১৫ নভেম্বর এ রায় ঘোষণার জন্য ২৩ নভেম্বর দিন ধার্য করেন।