chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

সরকারকে বিব্রত করতেই শরীফ মিথ্যাচার করছে

দুদকের আলোচিত চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা শরীফ উদ্দীনের একটি বেরসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরির খবরের মধ্যেই তার বিরুদ্ধে অত্যাচার ও মিথ্যাচারের প্রতিবাদ জানিয়েছেন কেজিসিএল সাবেক মহাব্যবস্থাপকসহ কয়েকজন ভুক্তভোগী। এসময় এক ভুক্তভোগীর কাছে মোবাইলে শরীফের পরোক্ষভাবে চাঁদা দাবির অডিও শোনানো হয়। তবে সাংবাদিকদের প্রশ্নের সদুত্তর দিতে না পেরেই মাঝ পথে শেষ হয়ে যায় সংবাদ সম্মেলন। তারা দাবি করেন, সরকারকে বিব্রত করতেই শরীফ নতুন করে মিথ্যাচার শুরু করেছে। 

বুধবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের এস রহমান হলে সংবাদ সম্মেলনে অনুষ্ঠিত হয়। এসময় ভুক্তভোগীরা শরীফ উদ্দীনের অঢেল সম্পত্তির তথ্য জানিয়েছে তার চাকরিচ্যুতির সুনির্দিষ্ট কারণ তুলে ধরেন।

জালিয়াতির মাধ্যমে আবাসিকে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার অভিযোগে গেল বছরের ৯ জুন কেজিডিসিএলের আওতাধীন ফৌজদারহাট ট্রান্সমিশন শাখার ব্যবস্থাপক মজিবুর রহমান, মহাব্যবস্থাপক (ইঞ্জিনিয়ার সার্ভিসেস) মো. সরওয়ার ও সাভেয়ার মো. দিদারুল আলমসহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের কারাভোগ করতে হয়। এমনকি কেজিডিসিএল কর্তৃপক্ষ মো. সরওয়ার হোসেনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে। ওই মামলা দুদকের তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন সংস্থাটির উপপরিচালক শরীফ হোসেন। কারাভোগ শেষে সরওয়ার হোসেন নিয়ম অনুযায়ী অবসরে যান।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছিল, আবাসিকে গ্যাস সংযোগ বন্ধ রয়েছে। নতুন গ্যাস সংযোগ দেওয়ার কোনো সুযোগ এই মুহূর্তে নেই। তবে গ্রাহকের অবস্থান পরিবর্তন হলে সেখানকার অবকাঠামো ও গ্যাসের প্রাপ্তি সাপেক্ষে সংযোগ স্থানান্তর করার একটি সুযোগ রয়েছে। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া আবেদন করে নুরজাহার সালামের ১২টি দ্বৈত চুলার সংযোগ অবৈধ উপায়ে মজিবুর রহমানকে (গ্রাহক সংকেত ১-ডি-৫১-৪৭১৫) স্থানান্তর করেছে কর্মকর্তারা।

ওই ঘটনায় কেজিডিসিএল এবং রাষ্ট্রের এক টাকাও ক্ষতি হয়নি দাবি করে সংবাদ সম্মেলনে আসেন প্রতিষ্ঠানটির সাবেক মহাব্যবস্থাপক (ইঞ্জিনিয়ার সার্ভিসেস) মো. সরওয়ার এবং টেকনিশয়ান মো. দিদারুল আলম।

তিনি বলেন, ২০১৭ সালের ২৫ জানুয়ারি কেজিডিসিএল কর্তৃপক্ষ শরীফ উদ্দীনের শশুড়ের বাড়িতে অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। তিনি জরিমানা না দিয়ে মওকুফের জন্য চাপ দিতে থাকে। এ অভিযানের পর থেকে ব্যক্তিগত ক্ষোভ থেকে আমাকে অবৈধ সংযোগের মতো মিথ্যা মামলায় জেল হাজতে পাঠিয়েছে। আমাকে আত্মসমর্থনের সুযোগ দেয়া হয়নি। অথচ অনিয়মের মিথ্যা মামলায় দেশের এক টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। আজকে তিনি বিভিন্ন গণমাধ্যমে নিজেকে সৎ হিসেবে উল্লেখ করে বক্তব্য দিচ্ছেন। দুর্নীতিবাজ, প্রভাবশালী ও সরকারের আমলাদের চাপে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে ব্যাখ্যা দিচ্ছে। আওয়ামী লীগ বিরোধীদের সহায়তায় নগরের কৈবল্যধাম এলাকায় এ ব্লকের ৭৬ নম্বর প্লট, তিন তলা ভবনসহ একটি জায়গা শশুরের নামে কিনেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে আর এফ বিল্ডার্সের এমডি দেলোয়ার হোসেন ষোলশহরের এলাকায় দু নম্বর গেইটে শরীফকে দুটি দোকান না দেওয়ায় মামলা করে হয়রানি করা হয়েছে বলে জানান। তিনি বলেন, আমার সম্পদ বিবরণীতে গড়মিল থাকার কারণে দুই বিঘা জমি জব্দ করা হয়েছিল। কিন্তু অনিয়ম হয়ে থাকলে তো ২০০ বিঘা জমি জব্দ করা হয়নি কেনো?

কেজিডিসিএলের সাবেক টেকনিয়াশন মো. দিদারুল আলম তার বিরুদ্ধে অনিয়মের বিষয়টি নিজেও জানানে বলে জানান। এদিকে শরীফ বরাবর দাবি করে এসছে দুদকের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের জানিয়েছে তিনি তদন্ত করেছেন।

মিথ্যা মামলা দায়ের করা হলে ওই সময় জেল থেকে জামিনের মুক্ত হওয়ার পর কেনো সংবাদ সম্মেলন করেনি এমন প্রশ্নে কেনো উত্তর দিতে পারেনি সাবেক মহাব্যবস্থাপক (ইঞ্জিনিয়ার সার্ভিসেস) মো. সরওয়ার। এছাড়াও সংস্থা হিসেবে দুদকের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন না করে শরীফের বিরুদ্ধে কেনো সংবাদ সম্মেলন করা হচ্ছে এ প্রশ্নের তিনি কিছু বলেননি।

আরকে/নচ/চখ

 

 

 

এই বিভাগের আরও খবর