chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

আনোয়ারার ৩০৫ নিঃস্ব পরিবারে জুটবে জমির দলিল ঘরের কাগজ

ভাড়া ঘরে নিজের জন্ম। সন্তানের জন্মও অন্যের ঘরে। দীর্ঘ ৪৫ বছর পর নিজের নামে পাবেন জমির দলিল ও ঘরের কাগজ। তাই উচ্ছ্বাস যেন কমছে না আনোয়ারা উপজেলার রোকেয়া বেগমের।

এমন উচ্ছ্বাস ও আনন্দ আনোয়ারা উপজেলার ৩০৫ ভূমিহীন পরিবারেও। আগামী বছরের প্রথম মাসে তাঁরা সবাই পেতে যাচ্ছেন মাথা গোঁজার ঠাঁই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে আনোয়ারার ঠাঁইহীন ৩০৫ পরিবারের স্থায়ী ঠাঁই হবে এসব ঘরে।

আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জোবায়ের আহমেদ বলেন, বটতলী ও হাজিগাঁও এলাকার খাস জমি দখল মুক্ত করে সেখানে গৃহহীন ও ভূমিহীন ৩০৫ পরিবারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। আগামী জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করে তাদের কাছে ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হবে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ঘর বরাদ্দ পাওয়া লোকজনরা প্রতিদিন হাজিগাঁও গুচ্ছগ্রামে গিয়ে ঘুরে আসছে। দেখে আসছে তাঁদের জন্য তৈরি করা ঘর।

নতুন বরাদ্দ হওয়া  ঘর ঘুরে ঘুরে দেখিয়ে আব্দুর রহমান নামের উপকারভোগী বললেন, আধা পাকা ঘরটি তাঁর খুব পছন্দ হয়েছে। থাকার কক্ষের সঙ্গে রান্নাঘর। পয়োনিষ্কাশনের ব্যবস্থাও ভালো। বিদ্যুৎ আছে। পানি আছে। পরিবার নিয়ে সেখানে খুব ভালোভাবে থাকতে পারবেন।

আনোয়ারা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জামিরুল ইসলাম চট্টলার খবরকে বলেন, তৃতীয় পর্যায়ের ২৩০টি প্রস্তুত হয়েছে। চতুর্থ পর্যায়ের আরও ৭৫ টি ঘর তৈরি করা হচ্ছে।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারদের আবাসন এলাকায় স্কুল, মসজিদ, মাদ্রাসা, খেলার মাঠ ও কমিউনিটি সেন্টারসহ নানাবিধ নাগরিক সুবিধার ব্যবস্থা করা হবে।প্রধানমন্ত্রীর উপহারে

এতে করে বদলে যাবে এসব পরিবারের জীবনযাত্রার মান।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, সরকারের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় সংসদ সদস্য ভূমি মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এর প্রচেষ্টায় আনোয়ারায় ৪২০ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে আবাসন সুবিধার আওতায় আনার উদ্যোগ নেয় উপজেলা প্রশাসন। কিন্তু খাস জমি না পাওয়ায় প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে মাত্র ৬৫টি ঘর নির্মাণ ও হস্থান্তর করা হয়। ভূমি সংকটের কারণে বাকি ঘর ফিরে যাওয়ার উপক্রম হলে ইউএনও শেখ জোবায়ের আহমেদ উপজেলার হাজিগাঁও এলাকায় পাহাড়ের পাদদেশে প্রভাবশালীদের দখলে থাকা সরকারি খাস জমি উদ্ধার করে উপহারের ঘর নির্মাণ করেন।

উপকারভোগীর তসলিমা আকতার বলেন, ‘অ্যার  যাইগা-জমি নাই। সরকার ঘর দের, জমি দের। জামাই পৌয়া লৌই সুখে থ্যাইককুম। অ্যাই খুব খুশি ঐই। (আমার জায়গা জমি নেই। সরকার ঘর দিচ্ছে, জমি দিচ্ছে। স্বামী সন্তান নিয়ে সুখে থাকব। আমি খুব খুশি হয়েছি)।

উচ্ছ্বাস ভরা কণ্ঠে উপকারভোগী জলিল উদ্দিন (৬০) বলেন, নিজের ঘরে থাকার স্বাদ দীর্ঘ দিনের। কিন্তু আমার কোন জায়গা জমি ছিল না। জীবনের ৬০টি বছর পরের বাড়িতে ভাড়ায় ছিলাম। আগামী জানুয়ারিতে সরকার আমাদের ঘরের চাবি, নিজের নামে দলিলপত্র দিবে। আর কষ্ট থাকবে না।

আনোয়ারা উপজেলার  ইউএনও শেখ জোবায়ের আহমেদ বলেন, স্থান নির্বাচনের ক্ষেত্রে মানুষের মৌলিক চাহিদা ও কর্মসংস্থানের বিষয়কে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারগুলোর দীর্ঘদিনের দুঃখ-কষ্ট লাঘব হবে।

নচ/চখ

 

এই বিভাগের আরও খবর