chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

শক্তি বাড়িয়ে উপকূলে আঘাত হানবে সিত্রাং

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে এখন বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার। ঝড়ো হাওয়া আকারে যা ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তবে উপকূল অতিক্রমের ঝড়টি তার শক্তি আরও বাড়াবে। এ সময় বাতাসের গতিবেগ হতে পারে ৯০ থেকে ৯৫ কিলোমিটার।

আগারগাঁও আবহাওয়া অফিস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান আবহাওয়াবিদ সানাউল হক মণ্ডল।

আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, সোমবার সকালে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে সিত্রাং ছিল ৫৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, আবহাওয়া সর্বশেষ বুলেটিন অনুযায়ী এটি এগিয়ে ২৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে।

একইভাবে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ছিল ৫৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, এখন আছে ২৪০ কি মি দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ছিল ৫২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, এখন আছে ২৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ছিল ৪৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণপশ্চিমে, এখন আছে ১৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে।

এটি আরও ঘনীভূত ও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আজ মধ্যরাত বা আগামীকাল ভোর নাগাদ খেপুপাড়ার কাছ দিয়ে বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

সানাউল হক মণ্ডল জানান, আজ মধ্যরাতেই আঘাত হানতে পারে উপকূলীয় অঞ্চলে। ঘূর্ণিঝড়ের সেন্টার পয়েন্ট অতিক্রম করতে পারে ভোর রাতের দিকে।

সিত্রাংয়ের প্রভাবে নরমাল জোয়ারের থেকে আরও ৭-৮ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া যদি ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ আরও বাড়লে বর্তমান মাঝারি থেকে সিবিআর সাইক্লোন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সুপার সাইক্লোন হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এই ঝড় দেশের ওপর দিয়ে অতিক্রমে সময় নেবে ৫-৬ ঘণ্টায়।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং চলাকালীন ও পরবর্তী সময়ে যেকোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলা, উদ্ধার, ত্রাণ ও চিকিৎসা সহায়তা প্রদানে প্রস্তুত রয়েছে কোস্ট গার্ড।

বাহিনীটির সব ঘাঁটি, জাহাজ, বোট, স্টেশন, আউটপোস্ট ও ডিজাস্টার রেসপন্স অ্যান্ড রেস্কিও টিম সব সময় প্রস্তুত থাকবেন। কোস্টগার্ডের যেকোনো সহায়তা পেতে ০১৭৬৯-৪৪০৯৯৯ এই নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে এবং উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী ও ফেনী এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোকে আগের মতোই ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

একইভাবে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে এবং উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোকে আগের মতো ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে আগামী ২৬ শে অক্টোবর পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

জলোচ্ছ্বাস : ঘূর্ণিঝড় টি অতিক্রম কালে বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, ঝালকাঠি, নোয়াখালী, ফেণী, চট্টগ্রাম এদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চর সমূহে স্বাভাবিক জোয়ার থেকে ৩ থেকে ৫ ফুট উচ্চ জলোচ্ছ্বাস দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে, যেহেতু সেইসময় অমাবস্যা থাকবে।

বৃষ্টি : ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে ইতিমধ্যে দেশের উপকূলীয় এলাকায় বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে, এবং সেই সঙ্গে দেশের অনেক এলাকায় বৃষ্টি শুরু হয়েছে।, সময়ের সাথে সাথে বৃষ্টি এবং বাতাস দুটোই বাড়তে পারে। এদিকে আজ সন্ধ্যা ৭ টা থেকে পরবর্তী ১২ ঘন্টার ভেতরে, সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, নোয়াখালী পটুয়াখালী, বরিশাল, ভোলা, লক্ষ্মীপুর, ফেণী, চট্টগ্রাম ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণ হতে পারে, এবং সেইসঙ্গে, নড়াইল, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরিয়তপুর, ফরিদপুর, মুন্সীগঞ্জ, ঢাকা, চাঁদপুর, কুমিল্লা, নরসিংদী, গাজীপুর, কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি, ময়মনসিংহ ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় ভারি বর্ষণ হতে পারে ও রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের অধিকাংশ এলাকা ব্যাতিত দেশের বাকি এলাকায় মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে।

পাহাড়ধ্বস : এই ভারিবৃষ্টির জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় পাহাড়ধ্বস হতে পারে।

চখ/আর এস

এই বিভাগের আরও খবর