chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

জন্ম বা মৃত্যুর ৪৫ দিন পর্যন্ত নিবন্ধন বিনামূল্যে করেছে সরকার; বিভাগীয় কমিশনার

চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মোঃ আশরাফ উদ্দিন বলেছেন, নাগরিক সেবা প্রদান ও গ্রহণের জন্য জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আবশ্যক। বর্তমান সরকার জন্ম বা মৃত্যুর ৪৫ দিন পর্যন্ত জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন তৈরির ফি বিনামূল্যে করে দিয়েছেন। আর এতে সাধারণ কর্মজীবী মানুষের কিছুটা হলেও উপকার হবে। সকলের নিবন্ধন সম্পন্ন হলে তাৎক্ষণিক যে কোনো সেবা প্রদান সহজ হবে। এজন্য সাধারণ মানুষকে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনে উৎসাহিত করতে হবে। পাশাপাশি ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সচিবদের সচেতন হতে হবে। শিশু জন্মের পরপরই জন্ম নিবন্ধন নিশ্চিত করতে হবে। এতে করে একজন শিশু রাষ্ট্রের সকল সুবিধা ভোগ করতে পারবে।

আজ ৬ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের সম্মেলন কক্ষে বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসন আয়োজিত জাতীয় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ‘নির্ভূল জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন করব, শুদ্ধ তথ্যভান্ডার গড়ব’।

তিনি বলেন, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সবার প্রয়োজন। দেশের একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে প্রতিটি মানুষের উচিত জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন করা। এগুলো একদিকে যেমন প্রয়োজনীয় আবার অপর দিকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজ। বাংলাদেশ প্রতিনিয়ত ডিজিটাল ও উন্নত হচ্ছে। উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে প্রয়োজন উন্নত তথ্যপ্রযুক্তি এবং উন্নত সেবা। আর এই উন্নত সেবা সব নাগরিকদের মাঝে পৌঁছে দিতে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন করা প্রয়োজন। বর্তমানে জাতীয় পরিচয়পত্র পেতে গেলে জন্মনিবন্ধন আবশ্যক। জন্মনিবন্ধন ব্যতীত কেউই জাতীয় পরিচয়পত্র বানাতে পারবেন না। আর জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকলে পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ব্যাংক অ্যাকাউন্টসহ বেশিরভাগ উন্নত সেবা গ্রহণ করা প্রায় অসম্ভব।

বিভাগীয় কমিশনার আরও বলেন, সাধারণ মানুষকে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনে উৎসাহিত করতে প্রতি বছর ৬ অক্টোবরকে ‘জাতীয় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন দিবস’ ঘোষণা করেছে সরকার। জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন ২০০৪-এর ৮ ধারা অনুযায়ী, কোনো শিশুর জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে জন্মনিবন্ধন ও কোনো ব্যক্তির মৃত্যুর ৪৫ দিনের মধ্যে মৃত্যু নিবন্ধন করা উচিৎ। এই বিষয়ে প্রত্যেক বাবা-মায়ের গুরুত্ব দিতে হবে।

সভায় অন্যান্য বক্তারা বলেন, প্রতিটি শিশুকে যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা আমাদের সকলের নৈতিক দায়িত্ব। শিশু জন্মের সাথে সাথে যাতে নাগরিকত্ব পায় সে জন্য সরকার জন্ম নিবন্ধন ব্যবস্থাকে আরো শক্তিশালী করেছে। পাশাপাশি মৃত্যু নিবন্ধনও বাধ্যতামুলক করেছে সরকার। জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদ-৭ অনুযায়ী একটি শিশু জন্মের পরই জন্ম নিবন্ধন করতে হবে। জাতীয়তা অর্জন, নামকরণ ও পিতা মাতার পরিচয় জানার এবং তাদের হাতে পালিত হওয়ার অধিকার শিশুর আছে।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের সভাপতিত্বে ও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক (স্থানীয় সরকার) মোঃ বদিউল আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত জাতীয় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন দিবসের আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মোঃ সাখ্ওায়াত উল্লাহ, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী ও জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী। সভায় মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে চট্টগ্রাম জেলায় জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন সংক্রান্ত বিষয়ে হালনাগাদ তথ্য উপস্থাপন করেন উপ-পরিচালক (স্থানীয় সরকার) মোঃ বদিউল আলম। রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুস সামাদ শিকদারসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও এনজিও সংস্থার প্রতিনিধিগণ উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন। চট্টগ্রাম বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটগণ এসময় উপস্থিত ছিলেন।

এই বিভাগের আরও খবর