নিখোঁজের ২৯ দিন পর উদ্ধার রহিমা বেগম
নিখোঁজের ২৯ দিন পর খুলনার রহিমা বেগমকে ফরিদপুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। আটকের পর থেকে তিনি ‘নির্বাক’রয়েছেন বলে জানিয়েছেন পুলিশ।
শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত দুইটার দিকে রহিমা বেগমকে ফরিদপুরের বোয়ালমারী থেকে উদ্ধার করে দৌলতপুর থানায় নিয়ে আসা হয়। তাঁকে বর্তমানে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়েছে।
খুলনা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে রহিমাকে উদ্ধারের বিষয়ে শনিবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে প্রেস ব্রিফিং করা হয়। মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) মোল্লা জাহাঙ্গীর হোসেন দৌলতপুর থানায় ব্রিফিংয়ে বলেন, রহিমা বেগম ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের কুদ্দুস মোল্লার বাড়িতে রয়েছেন এমনটা গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তাঁরা জানতে পারেন। বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হলে দৌলতপুর জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার আবদুর রহমান ও দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল রাত পৌনে ১১টার দিকে ওই বাড়িতে পৌঁছায়। পুলিশ সেখানে গিয়ে দেখতে পায়, রহিমা বেগম ওই বাড়িতে বসে দুজন নারীর সঙ্গে গল্প করছেন।
পুলিশ সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ করলেও রহিমা বেগম কোনো প্রশ্নের উত্তর দেননি বলে জানান, খুলনা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) জাহাঙ্গীর হোসেন তবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কুদ্দুসের ছেলে আলামিন, কুদ্দুসের স্ত্রী ও ভাইয়ের স্ত্রীকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলে জানান।
সূত্রে জানা যায়, বাড়ির মালিক কুদ্দুস বেশ কয়েক বছর আগে খুলনার সোনালী জুট মিলে চাকরি করতেন। তখন রহিমা বেগমের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। পরে তিনি বোয়ালমারীতে চলে যান।
খুলনা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ওই বাড়ির লোকজন পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, রহিমা বেগমকে তাঁরা প্রথমে চিনতে পারেননি। পরে চিনতে পারলে সাবেক বাড়িওয়ালা হিসেবে তাঁরা সেবাযত্ন করেন। রহিমা তাঁদের জানান, বেশ কয়েক দিন চট্টগ্রাম ও গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে ছিলেন। এরপর ১৭ সেপ্টেম্বর বোয়ালমারীতে কুদ্দুসের বাড়িতে যান। তখন তাঁর একটি ব্যাগে দুই প্যাকেট বিস্কুট, কিছু কাগজপত্র ও পরনের কিছু কাপড়চোপড় ছিল।
রহিমা আসলেই অপহরণ হয়েছিলেন নাকি স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে ছিলেন—এমন প্রশ্নের উত্তরে উপপুলিশ কমিশনার বলেন, উনি কোনো জবাবই দিচ্ছেন না। খাবারও খেতে চাইছেন না। ইশারা–ইঙ্গিতে কথা বলছেন। জবাব না দিলে তো কিছু বলা যাচ্ছে না। যেহেতু মামলাটি পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) তদন্ত করছে, তারাই বিস্তারিত উদ্ঘাটন করবে।
উল্লেখ্য যে, গত ২৭ আগস্ট রাত ১০টার দিকে খুলনার দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশা উত্তর বণিকপাড়া এলাকার বাসার উঠানের নলকূপে পানি আনতে যান রহিমা বেগম। এর পর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন রহিমা। তাঁর মেয়ে আদুরী আক্তার পরদিন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে থানায় অপহরণ মামলা করেন। এ মামলায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সন্তানেরা মায়ের সন্ধান চেয়ে ঢাকায় মানববন্ধনের পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে দৌড়ঝাঁপ করে আসছিলেন । এমন পরিস্থিতিতেই তাদের মাকে গতকাল রাতে ফরিদপুরের বোয়ালমারী থেকে উদ্ধার করা হয়।