চট্টগ্রামে ৪ ফুটওভারব্রিজে পতিতাদের ঘরবসতি
সাইফুদ্দিন মুহাম্মদ,বিশেষ প্রতিনিধিঃচট্টগ্রাম নগরীর চারটি ফুট ওভারব্রিজ পতিতাদের ঘরবসতিতে পরিণত হয়েছে। ফুট ওভারব্রিজগুলো দিয়ে রাস্তা পারাপার তো দূরের কথা কখনো কেউ ভুলে উঠে গেলে চোখ বন্ধ করে নিচে নেমে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই।
নগরের নিউ মার্কেটের অদূরে জলসা মার্কেট সংলগ্ন, স্টেশন রোড়স্থ রিয়াজউদ্দিন বাজারের সামনে, ইপিজেড ফুটওভার ব্রিজ ও কাস্টমস হাউজের সামনে এসব ওভারব্রিজ অবস্থিত।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, চট্টগ্রাম মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ জংশনে প্রায় আটটি ফুট ওভারব্রিজ রয়েছে। এর মধ্যে সিইপিজেড এলাকায় দু’টি, পাহাড়তলি রেলওয়ে এলাকায় একটি এবং কর্ণফুলী ব্রিজের পূর্ব পাশে ইউনুচ মার্কেট এলাকায় একটি ওভারব্রিজ রয়েছে। এই চারটি ওভারব্রিজ দিয়ে পথচারীরা যাতায়াত করলেও বাকি চারটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
দীর্ঘ দিন ধরে জলসা মার্কেট ও স্টেশন রোড়স্থ রিয়াজ উদ্দিন বাজারের সম্মুখস্থ ওভারব্রিজ দিয়ে লোকজন চলাচল করে না। একই অবস্থা ফকিরহাট ও কাস্টমস মোড়ের ফুট ওভারব্রিজের। বর্তমানে ওই চারটি ওভারব্রিজের ওপরে ভাসমান পতিতারা ঘরবসতি গড়ে তোলেছে। সন্ধ্যা নামতে পতিতাদের দখলে চলে যায় ওভরব্রিজগুলো।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, স্টেশন রোড ওভারব্রিজটি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সাইন বোর্ড দিয়ে উভয় দিকে ঢেকে দেয়া হয়েছে। ফলে ওভারব্রিজের ওপরে কী হচ্ছে দেখা যায় না। ওভারব্রিজে ওঠার সিঁড়িতে ময়লা ফেলে রাখা হয় সব সময়, যাতে পথচারীরা ওপরে উঠতে না পারে। ওভারব্রিজ বরাবর দুই পাশে সাইনবোর্ডের কারণে নিচে থেকে দেখা যায় না ওপরে কী হচ্ছে। ওভারব্রিজটির ওপরে কয়েকজন ভাসমান পতিতা কাপড়ের পার্টিশন দিয়ে অস্থায়ী ঘর তৈরি করেছে। ওখানে দিনদুপুরে পতিতাদের রঙ্গমঞ্চ বসে।
পতিতাদের পাশাপাশি খদ্দেরদের আড্ডার কারণে স্টেশন এলাকার ওই ওভারব্রিজ এলাকা দিয়ে হাঁটাচলায় রিয়াজ উদ্দিন বাজারের ব্যবসায়ী, ক্রেতা এবং যাত্রীদের বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। একই অবস্থা চট্টগ্রাম নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকা জলসা মার্কেটের সামনে ফুটওভারব্রিজের। পতিতারা সিঁড়ির ওপর দাঁড়িয়ে পথচারীদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করে। এ ওভারব্রিজে ছোট ছোট টঙ ঘর বানিয়ে কিছু মহিলা দেহ ব্যবসা করে। দিনের বেলায় পতিতারা ওভারব্রিজের ওপর অবস্থান নিলেও রাত বাড়ার সাথে সাথে তারা নিউ মার্কেট এলাকায় রাস্তার উভয় পাশে অবস্থান নিয়ে পথচারীদের উত্ত্যক্ত করে।
ইপিজেড এলাকার ফুট ওভারব্রিজ পতিতালয়ে পরিণত হয়েছে। রাতদিন তারা ওভারব্রিজে অবস্থান নেয়ায় পথচারীরা ওভারব্রিজের ওপর দিয়ে চলাচল করতে চান না। ওই ওভারব্রিজ দিয়ে দিনে হাজার গার্মেন্টস শ্রমিক চলাফেরা করলেও রাতে দেহ ব্যবসায়ীদের আনাগোনা বেড়ে যায়। এছাড়া চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের দক্ষিণ পাশের ওভারব্রিজটি দিনে পথচারীরা ব্যবহার করলেও রাতে চলে যায় পতিতাদের দখলে।
মানবাধিকার নেতা শফিউল আলম চৌধুরী বাবু বলেন, প্রশাসনের নিস্ক্রিয় মনোভাবের কারণে ফুটওভারগুলো পতিতা ও বখাটেদের আড্ডাখানায় পরিণত হয়েছে। ফলে পথচারীরা বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হতে হয়।