chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

চট্টগ্রামে চালকের অদক্ষতায় বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা

সাইফুদ্দিন মুহাম্মদঃ চট্টগ্রামে বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা। এতে ঘটছে প্রাণহানি। অনেকে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হয়ে হচ্ছেন পঙ্গু। গত এক সপ্তাহে চট্টগ্রামে বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন একসাথে চার জন এবং আহত প্রায় ১০ জন।

দুর্ঘটনার কারণ হচ্ছে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারানো। অদক্ষ চালকের কারণে এসব দুর্ঘটনা ঘটছে বলে মনে করছেন ট্রাফিক বিভাগ। তবে অদক্ষ চালকদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হলেও দুর্বল আইনের কারণে খুব সহজে তারা জামিনে বের হয়ে আবার গাড়ি চালায় বলে অভিযোগ রয়েছে।

গত ১৩ সেপ্টেম্বর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মিরসরাইয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়ানো ১৮/১৯ জনের ওপর উঠে যায় কার্ভাডভ্যান। এতে দুই সহোদরসহ ৪ জন মারা যান। আহত হন অন্তত ৭/৮ জন। আহতরা এখনো চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দূর্ঘটনার আগে একই স্থানে আরো দুটি গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সংঘর্ষ লাগে।

গত ২৯ জুলাই মিরসরাইয়ে বড়তাকিয়া বাজার এলাকার লেভেল সিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় একটি মাইক্রোবাসের ১১ জন আরোহী ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরো দুইজন মারা যান। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হলে ওই কমিটি জানিয়েছেন, চালকের অদক্ষতাই এ দূর্ঘটনার মূল কারণ। তারা বলেছেন, ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া আন্ত:নগর ট্রেন মহানগর প্রভাতীকে দেখেও মাইক্রোবাসটি দ্রুত লেভেল ক্রসিং পার হওয়ার চেষ্টা করছিলো। এতেই দূর্ঘটনা ঘটে।

এরআগে ২১ মার্চ বড়ধরনের আরেকটি দূর্ঘটনা ঘটে লোহাগাড়ার আধুনগরে। এতে ট্রাক ও প্রাইভেট কারের সংঘর্ষে ৫ জন নিহত হয়। ট্রাক চালকের অসর্তকতার কারণে এ দূর্ঘটনা বলে পরে পুলিশ প্রতিবেদন দেয়।

গত ১১ জুলাই মর্মান্তিক আরো একটি দূর্ঘটনা ঘটে পটিয়ার জলুয়ার দিঘী পাড়ে। এতে বাসচাপায় অটোরিকশার ৬ যাত্রী নিহত হয়। আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। পুলিশ বলেছেন, বাসটি পেছন থেকে অটোরিকশাকে ধাক্কা দেয়। একপর্যায়ে বাসটিও নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। এ সময় বাসচাপায় ঘটনাস্থলেই অটোরিকশার ওই পাঁচ যাত্রী মারা যান।

এছাড়া প্রতিদিন এভাবে চট্টগ্রামে ঘটছে দুর্ঘটনা। সব ক’টি দুর্ঘটনার কারণ খোঁজতে গিয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তারা যেসব রিপোর্ট দিয়েছেন, তাতে চালকের অসতর্কতা এবং অজ্ঞতাকে দায়ী করেছেন।
গত ১২ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) ট্রাফিক (দক্ষিণ) উপপুলিশ কমিশনার এনএম নাসিরুদ্দিন এক কর্মশালায় বলেছেন, সড়ক দুর্ঘটনায় কারও মৃত্যুবরণ বা পঙ্গুত্ব কখনও আমাদের কাম্য নয়। ওভারটেকিং, ওভারলোড ও ওভারস্পিড এবং চালকের অদক্ষতা সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ। নিরাপদ সড়ক উপহার দেওয়া আমাদের সকলের দায়িত্ব। প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব ও অদক্ষ চালক দ্বারা গাড়ি চালানোর কারণে সড়কে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে।

সিএমপি ট্রাফিক (দক্ষিণ) অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার মো. রইছ উদ্দিন বলেন, হাইওয়ের তুলনায় শহরে দুর্ঘটনা অনেকাংশে কম হলেও পুলিশের একার পক্ষে যানজট নিরসন, সড়ক দুর্ঘটনা রোধ ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। আবার দুর্ঘটনার জন্য শুধু গাড়ির চালক-হেলপারদের দায়ী করলেও হবে না। যিনি গাড়ির মালিক তাকে এবং পথচারীদেরকে এ ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে।

এই বিভাগের আরও খবর