chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় নারী প্রতিনিধিত্ব বাড়াতে হবে : স্পিকার

গণতন্ত্রকে সুসংহত ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সকল ক্ষেত্রে নারী প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি। তিনি বিষয়ভিত্তিক ও গ্লোবাল ইস্যুতে এবং জাতীয় উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় নারী সংসদ সদস্যগণ বিশেষ ভূমিকা রাখছেন বলেও উল্লেখ করেন।

আজ মঙ্গলবার পার্লামেন্ট মেম্বার্স ক্লাব মিলনায়তনে ‘জাতীয় উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় নারী সংসদ সদস্যদের ভূমিকা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেমের সভাপতিত্বে সভায় বক্তৃতা করেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি, সংসদ সদস্য জাকিয়া পারভীন খানম, সৈয়দা রুবিনা আক্তার, জাকিয়া তাবাসসুম, লুৎফুনন্নেছা খান, শামসুন্নাহার ও রওশন জাহান সাথী এবং মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু ও যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাসুদা রেহানা বেগম।

 

সভায় স্পিকার বলেন, ‘জাতির পিতার নেতৃত্বে ১৯৭২ সালের সংবিধানে সকল শ্রেণীর নারীদের রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টির দূরদর্শিতাসম্পন্ন সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তাদের সরাসরি নির্বাচনে কোন বাধা নেই। এজন্য নারীদের নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে। এর পেছনে থাকা প্রতিবন্ধকতা নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে, কাজ করতে হবে। ‘ যতক্ষণ রাজনীতিতে নারীর ৩৩ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব ও ৫০:৫০ অংশগ্রহণ না হচ্ছে ততক্ষণ সংরক্ষিত আসন রাখার কথা উল্লেখ করেন তিনি।

 

তিনি আরো বলেন, ‘নারী সমাজের দাবি বাস্তবায়নে সরকার কাজ করছে। অনেক অর্জনও আছে। সরকার জেন্ডার সমতা নিশ্চিত ও নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে কাজ করছে। নারীদের জীবনে থাকা প্রতিবন্ধকতা দূর করে আগামী প্রজন্মের জন্য সমতাপূর্ণ দেশ গঠনে গণতন্ত্র অপরিহার্য। আমরা এমন গণতন্ত্র চাই, যা নারীর অগ্রগতির জন্য সহায়ক হবে। ‘ তিনি এসময় নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের জন্য গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নিশ্চিতের পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর উপর জোর দেন।

 

সাবেক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, ‘নারীরা আগের চেয়ে অনেক এগিয়েছে। তবে কাজের জন্য নারীদের আরো দক্ষ হতে হবে। দক্ষ ও যোগ্য নারীকে সঠিক জায়গায় কাজের সুযোগ দিলে তারা যোগ্যতা প্রমাণ করতে পারবেন। ‘

 

তিনি আরো বলেন, ‘সংসদে নারীর অংশগ্রহণ অবশ্যই বৃদ্ধি করতে হবে। এ লক্ষ্যে সরকার প্রধান কাজ করে যাচ্ছেন। সংসদে নারীদের তিনি ক্ষমতায়িত করেছেন। বর্তমানে ৫ টি স্ট্যান্ডিং কমিটিতে সভাপতির দায়িত্ব নারীদের দেওয়া হয়েছে। প্রচলিত পারিবারিক আইন অনুযায়ীও নারীকে তার প্রাপ্য আগে নিশ্চিত করার আহ্বান জানান তিনি। ‘

 

ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, ‘সমতা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন গুরুত্বপূর্ণ, এর সাথে নারী আন্দোলনের একটা সম্পর্ক আছে। নারী জনপ্রতিনিধিদের কাছে নারী সমাজের প্রত্যাশা রয়েছে। পুরুষ নির্মিত সমাজে নারীদের প্রত্যেককে সহযোগিতামূলক মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে। নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে নারী জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্ব নিতে হবে। ‘

 

সংবিধানের ভিত্তিতে নারী-পুরুষের সমানাধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রচলিত সকল আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন এবং নারীর উত্তরাধিকার আইন ও অভিন্ন পারিবারিক আইন বাস্তবায়নে সরকারসহ সকল সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

 

সভায় উত্থাপিত মূল প্রবন্ধে বলা হয়, সরকারের নানামুখী ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে শান্তি মিশন, সেনাবাহিনী, পুলিশবাহিনী, বিচারবিভাগ, কূটনৈতিক মিশন, প্রশাসনসহ সকল ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণ পর্যায়ে নারীর অধিক সংখ্যক কার্যকর উপস্থিতি দৃশ্যমান হয়েছে। রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান শীর্ষে হলেও দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় নারীদের যুক্ত করার ক্ষেত্রে নানা চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এসকল চ্যালেঞ্জ সমূহের মধ্যে নারীর প্রতি সহিংসতার মাত্রা বৃদ্ধি, সাম্প্রদায়িক সহিংসতা, নির্বাচনকালীন সহিংসতা, রাজনৈতিক সহিংসতা ও নারী বিদ্বেষী প্রচার প্রচারণা উল্লেখযোগ্য। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে জাতীয় উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় নারীদের সম্পৃক্ত করে উন্নয়নকে স্থায়ী করতে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।

এই বিভাগের আরও খবর