সাগরে ১৬টি বোট ডাকাতির পর ধরা, পুরো জলদস্যু টিম
দীর্ঘ সময় চট্টগ্রামের সাগরে জলদস্যুতা কিছুটা হ্রাস পেলেও সাম্প্রতিক সময়ে তা আবারো মাথাচড়া দিয়ে উঠেছে।
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলা বড়ঘোনা এলাকার মেম্বার আনছারের নির্দেশে তার ছেলে আনোয়ার নতুন গ্রুপ তৈরি করে সাগরে ফের জলদস্যুতা শুরু করে।
আনোয়ার অল্প সময়ে সাদ্দাম নামে অপর এক ব্যক্তির সহায়তায় তিনটি শর্ট গান এবং বিভিন্ন দেশীয় তৈরি অস্ত্র সংগ্রহ করে দলবল নিয়ে বঙ্গোপসাগরে ডাকাতিতে নেমে পড়ে।
নব্য জলদস্যু গ্রুপটি প্রথম দু দফায় সফলতাও পায়। এক এক করে তারা ১৬ টি জেলে নৌকায় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে জেলেদের জিম্মি করে তাদের কাছ থেকে মাছ ও মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে বেশ লাভবানও হয়েছেন।
তবে এ জলদস্যু গ্রুপটি সাগরে বেশিদিন রাজত্ব করার আগেই র্যাবের চৌকস টিমের জালে ধরা পড়ে পুরো টিম। আর গ্রেফতারের পরই প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে উপরোক্ত তথ্যগুলো র্যাবের কাছে স্বীকার করে জলদস্যুরা।
তারা জানায়, গেল ২৭ আগষ্ট চট্টগ্রামের অন্তর্ভুক্ত সাগর এলাকায় তারা প্রথমবার ৯টি মাছ ধরার বোটে ডাকাতি করে বেশ সফলতা পায়। এরপর দ্বিতীয় দফায় আরো ৭টি বোটে তারা ডাকতি করে।
আজ শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ সংবাদ সম্মেলনে জানান, গত ২৭ আগষ্ট থেকে চট্টগ্রামের অন্তর্ভুক্ত সাগর এলাকায় ১৬টি বোটে ডাকাতি সংঘটিত হলে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণভাবে গ্রহন করে তদন্ত শুরু করে।
গত শুক্রবার ও আজ শনিবার পর্যন্ত প্রায় ৪৮ ঘন্টা গভীর সমুদ্রে এবং বাঁশখালীতে একটানা অভিযান চালানো হয়। র্যাবের ২টি চৌকষ আভিযানিক দল ও র্যাব ফোর্সেস সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার একটি আভিযানিক দলের সমন্বয়ে যৌথ এ অভিযানে বিপুল পরিমান অস্ত্রসহ ১২ জলদস্যুকে আটক করতে সক্ষম হয়।
আটককৃতরা হলেন- আনোয়ার, লিয়াকত, মনির, আবুল খায়ের, নবীর হোসেন, নেজামউদ্দিন, হুমায়ুন, সাহেদ, সাদ্দাম, আতিক, এমরান ও আমানউল্লাহ।
তাদের হেফাজত থেকে ১টি বোট, ৩টি ওয়ান শুটারগান, ১টি চাইনিজ কুড়াল, ১৬টি দা ও ছুরি, ১টি বাইনোকুলার, ২টি হ্যান্ড মাইক, ৭০ টি মোবাইল উদ্ধার করা হয়।
আটককৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা র্যাবকে জানায়, বেশি মাছের লোভের কারণে তারা ডাকাতিতে নামে। মূলত তারা দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে সাগরে মাছ ধরতে না পেরে হতাশ হয়ে পড়েন।
এক পর্যায়ে ফিশিং বোট মালিক আনছার মেম্বারের তাদের বোট ডাকাতি করে হলেও তার দলের লোকজনকে মাছ নিয়ে আসতে বলেন। উদ্দেশ্য ছিল অল্প পরিশ্রমে অধিক মুনাফা লাভ করা। পরে সাদ্দামের সহায়তায় আনছার মেম্বারের ছেলে আনোয়ার নব্য এ জলদস্যু বাহিনী তৈরি করে সাগরে ডাকাতি শুরু করে। তারা দুইবারে ১৬টি বোট ডাকাতি করে।
আটক আনোয়ার (আনছার মেম্বারের ছেলে, মূলহোতা) এর নামে ৩ টিসহ প্রত্যেকেরই বিরুদ্ধে বাঁশখালী থানায় জলদস্যূতা, সস্ত্রাসী, ডাকাতি, দুর্ধষ চাঁদাবাজী, হত্যাচেষ্টা এবং অপহরণসহ একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানান র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারি পরিচালক (মিডিয়া) মো. নুরুল আবছার।
তিনি জানান,আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নগরের পতেঙ্গা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
চখ/আর এস