chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

ঠাণ্ডা মাথার খুনি জিয়াউর রহমান: তথ্যমন্ত্রী

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, জিয়াউর রহমান ছিলেন একজন ঠাণ্ডা মাথার খুনি, সকালবেলা নাস্তা করতে করতে ফাঁসির আদেশে তিনি সই করতেন।

১৯৭৭ সালে হত্যার শিকার বিমান ও সেনাবাহিনীর অফিসার ও জওয়ানদের বোবা-কান্না, বিএনপি ও জিয়ার মানবাধিকার লঙ্ঘন জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন থেকে শুরু করে আমরা বিশ্বাঙ্গনে নিয়ে যাব। যারা মানবাধিকারের কথা বলে এদেশে প্রপাগান্ডা ছড়ায় তাদের স্বরূপ উন্মোচন করা হবে।

তিনি বলেন, আজকে দাবি উঠেছে একটি শক্তিশালী কমিশন গঠন করে জিয়াউর রহমান সেনা ও বিমান বাহিনীর যেসব অফিসার এবং জওয়ানদের হত্যা করেছিল সেই সত্য উন্মোচন করে জাতির কাছে জানানো। আমি এই দাবির সাথে একাত্মতা পোষণ করছি।

শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের গুম-খুনের রাজনীতির কালো অধ্যায় নিয়ে দীপ্ত টেলিভিশন নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘গণফাঁসি ৭৭’ প্রদর্শনী ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

‘মায়ের কান্না’ ও দীপ্ত টেলিভিশনের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় সম্মানিত আলোচক ছিলেন চট্টগ্রাম-১৪ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দীন চৌধুরী মানিক, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) গোলাম হেলাল মোর্শেদ খান বীরবিক্রম, দীপ্ত টেলিভিশনের সিইও এবং ‘গণফাঁসি ৭৭’ প্রামাণ্যচিত্রের পরিচালক ফুয়াদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাফ্ফর আহমদ, দীপ্ত টিভির সিইও ফুয়াদ চৌধুরী, মায়ের কান্না সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক মো. কামরুজ্জামান মিঞা লেলিনসহ ১৯৭৭ সালে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান কর্তৃক গুমের শিকার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আজকে এখানে যারা বক্তব্য রেখেছেন তারা জানেন না তাদের বাবা ও স্বামীর কবর কোথায়। কখন ফাঁসি হয়েছে, কিভাবে হত্যা করা হয়েছে। এই জবাব খালেদা জিয়া, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতাদের কাছে চাই।

আজকে দাবি উঠেছে, জিয়াউর রহমান কিভাবে ঠাণ্ডা মাথায় সেনাবাহিনীর অফিসার এবং জওয়ানদের হত্যা করেছিল, কি নৃশংসভাবে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে দিনের পর দিন, একটি উচ্চতর কমিশন গঠন করে এই সত্য উন্মোচন করে জাতির কাছে জানানো। আমি এই দাবির সাথে একাত্মতা পোষণ করছি।

তিনি বলেন, যে অজানা কান্নাগুলো হারিয়ে গিয়েছিল, যে কথাগুলো জাতি জানত না, যারা দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে বোবা-কান্না নিয়ে বুকের মধ্যে কান্না চেপে রেখে দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে পড়েছিল, যাদের অব্যক্ত বেদনার কথা মানুষের সামনে বলতে পারেনি, যাদের কান্না নিজের পরিবারও অনেক ক্ষেত্রে শুনেনি, আজকে তাদেরকে জড়ো করে জিয়াউর রহমানের নির্মমতা ও নিষ্ঠুরতার কাহিনী জাতির সামনে উপস্থাপন করেছে দীপ্ত টেলিভিশন, সেজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমান ছিলেন একজন ঠাণ্ডা মাথার খুনি, সকালবেলা নাস্তা করতে করতে ফাঁসির আদেশে তিনি সই করতেন, এটি তার এডিসি’র বক্তব্য। একসাথে একুশ পর্যন্ত ফাঁসির আদেশে সই করেছে কোনো কোনো দিন। এমনও ঘটেছে, ফাঁসি হয়ে গেছে, কিন্তু রায় হয়েছে ফাঁসির তিনমাস পর।

আইনের কোনো যুক্তি ওখানে শোনা হতো না। কখন যে বিচার হয়েছে কেউ জানতো না। পরিবার জানে না। হঠাৎ মধ্য রাতে ঘুম থেকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হলো। কোথায় কেন নিয়ে যাচ্ছে – এমন প্রশ্নে বলা হতো আপনার ফাঁসি হবে। এই কথাগুলো দেশবাসীর জানা ছিল না।

তিনি বলেন, আজকে মানবাধিকারের কথা বলে নয়াপল্টনের অফিস এবং প্রেস ক্লাবের সামনে বিএনপির তত্ত্বাবধানে মির্জা ফখরুলসহ বিএনপি নেতারা বক্তৃতা করেন।

৪৫ বছর ধরে জিয়াউর রহমানের নির্মম হত্যাযজ্ঞের শিকার পরিবারগুলোর কান্নার জবাব বিএনপি নেতৃবৃন্দের কাছে চাই। এই পরিবারগুলোর যে বোবা-কান্না সেটির জবাব, এই মানবাধিকার লঙ্ঘনের জবাব বিএনপি ও তাদের নেতৃবৃন্দের কাছে চাই।

ড. হাছান বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের অন্যতম কুশীলব হচ্ছেন জিয়াউর রহমান। তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সাথে ওঁৎপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। ক্ষমতাকে নিষ্কণ্ঠক করার জন্য সেনাবাহিনীর কয়েক হাজার অফিসার এবং জওয়ানকে হত্যা করেছেন।

আমাদের দলের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গুম ও খুন করেছেন, কারাগারে নিক্ষেপ করেছেন। সারাদেশে দিনের পর দিন মার্শাল ল দিয়ে দেশ শাসন করেছেন।

তিনি বলেন, ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে মানুষের ওপর পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করে হত্যার যে দৃশ্য তা দেখার নয়, রাজনীতির নামে বিএনপি এমন নৃশংসতা চালিয়েছে।

এসবের জন্য বেগম খালেদা জিয়া ও মির্জা ফখরুলসহ বিএনপির নেতারা দায়ী। এসব কি মানবাধিকার লঙ্ঘন নয় ? আজকে তারা মানবাধিকারের কথা বলে। চট্টগ্রামের নেতা মৌলভী সৈয়দ জিয়ার হাতে খুন হয়েছেন।

জিয়াউর রহমানের চেয়ে তার স্ত্রী খালেদা জিয়াও কম যাননি উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ২১ আগস্ট প্রকাশ্য দিবালোকে ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে জননেত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং পুরো আওয়ামী লীগের নেতৃত্বকে হত্যা করার অপচেষ্টা করেছে। ২২ জন নেতাকর্মীসহ ২৪ জন নিহত হলেন, ৫শ’ জন আহত হয়েছেন।

আমি নিজেও সেদিন আহত ছিলাম। আমার শরীরে এখনো ৪০ টা স্প্রিন্টার আছে। এ ঘটনার পর আমাদের নেতাকর্মীরা যাতে আহতদের সাহায্য করতে না পারে সেজন্য পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে, টিয়ার গ্যাস ছুড়েছে। আলামত হিসেবে গ্রেনেড সংরক্ষণ করার অপরাধে তৎকালীন সেনাবাহিনীর অফিসার মেজর শামসসহ কয়েকজনকে চাকুরিচ্যূত করেছে।

চখ/আর এস

এই বিভাগের আরও খবর