chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

বঙ্গবন্ধুকে মুছে ফেলা যায়নি: শিক্ষামন্ত্রী

ডেস্ক নিউজ: শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনীতি ছিল শোষিতের গণতন্ত্রের পক্ষে। স্বাধীন বাংলাদেশ সাম্রাজ্যবাদী ও পরাজিত শক্তি মেনে নিতে পারেনি তাই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে মুছে ফেলা যায়নি, বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলা নয়, আজ সারা বিশ্বময়।

রোববার (২৮ আগস্ট) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতি (এপিইউবি) ভার্চুয়াল এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর রাজনীতির বিপরীত ধারা সামরিক স্বৈরাচার, অপরাজনীতি, ধর্মকে ক্ষুদ্র ও হীনস্বার্থে ব্যবহার করার রাজনীতি। রাজনীতি একটি ইতিবাচক বিষয় কিন্তু রাজনীতির এই ভিন্ন ধারায় আদর্শের কিছু খুঁজে পাইনি। আওয়ামী লীগ যে আদর্শের রাজনীতি করে, তা উদার মানবতাবাদী, অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি। সেই রাজনীতির বিরোধিতা করা ভিন্ন ধারা রাজনীতির মূল উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য। অর্থাৎ পুরোটাই নেতিবাচক। একটি আদর্শের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান। তাদের নিজস্ব কোনো আদর্শিক অবস্থান খুঁজে পাওয়া যায় না। তারা নিজেদের আদর্শকে সামনে আনছে না। কারণ মানুষ হত্যা করা, ষড়যন্ত্র করা, ক্যু-করা, আগ্নিসন্ত্রাস করা এগুলো কোনো আদর্শ হতে পারে না। এগুলো রাজনীতির উপাদান হতে পারে না।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু এই অপরাজনীতির বিপক্ষে দাঁড়িয়ে মানুষের অধিকারের পক্ষে, অসাম্প্রদায়িক গণতন্ত্রের পক্ষে রাজনীতি করেছেন। সর্বভারতীয় রাজনীতিতে কিংবদন্তি নেতাদের বঙ্গবন্ধু দেখেছেন। সেই পরিবেশের মধ্য থেকে টুঙ্গি পাড়ার খোকা আমাদের জাতির জন্য আলোকবর্তিকা হয়ে এসেছেন। দেশভাগের ঠিক আগে আগে তার রাজনৈতিক দীক্ষাগুরু হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এবং শরত বোস, তাদের একটি প্রস্তাব ছিল, স্বাধীন যুক্ত বাংলার, সেটি হয়নি।

দীপু মনি বলেন, যখন পাকিস্তান তৈরি হলো, পাকিস্তান কাঠামোর মধ্যে বাঙালির অধিকার কখনই বাস্তবায়িত হবে না, এটি বঙ্গবন্ধু একেবারে গোড়াতেই বুঝেছিলেন। বাঙালির স্বাধীন রাষ্ট্রের চিন্তা গোঁড়া থেকেই তার মনের মধ্যে ছিল। বাঙালির স্বাধীন রাষ্ট্রের চেহারা কেমন হবে সেটির রূপরেখা আমরা বঙ্গবন্ধুর মধ্যে দেখতে পাই।

‘বঙ্গবন্ধুকে কেন হত্যা করা হলো? তখন বিশ্ব দুইভাগে বিভক্ত। বঙ্গবন্ধু নিজেই বলেছিলেন বিশ্ব আজ দুইভাগে বিভক্ত। একদিকে শোষক আরেকদিকে শোষিত। বঙ্গবন্ধু শোষিতের গণতন্ত্রের পক্ষে ছিলেন। তিনি শোষিতের গণতন্ত্রের কথা বলেছিলেন। তিনি সেই সময়ের সাম্রাজ্যবাদী শক্তির সব প্রচেষ্টাকে নষ্ট করে দিয়ে বাঙালিকে দিয়ে সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছিলেন। সেটি সাম্রাজ্যবাদীরা মেনে নিতে পারেনি।’

মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর যদি তার সাফল্যের জায়গায় পৌঁছে যান, তাহলে সাম্রাজ্যবাদীদের নাক কাটা যায়, তাদের পরাজয় হয়। সেটি তারা মেনে নিতে পারেনি। তখন যেভাবে বিভিন্ন দেশে জাতীয়তাবাদী নেতাদের হত্যা বা ক্ষমতাচ্যুত করা হয়েছিল তাদের সবাই কী ধরনের নেতা ছিলেন, তারা নিজ দেশকে কেমন দেখতে চেয়েছিলেন, নিজেদের দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন এবং ওইসব দেশে নেতাদের হত্যা করে সামরিক স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। সেইসব দেশের সম্পদগুলো প্রায় চিরদিনের মতোই বহুজাতিক কোম্পানির হাতে চলে গিয়েছিল। তা থেকেই আমরা বুঝতে পারি কেন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল। তারা চেয়েছিল প্রতিশোধ নিতে। বাংলাদেশের ওপর তাদের ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করতে।

এপিইউবি সভাপতি শেখ কবির হোসেনের সভাপতিত্বে ও কাজী আনিস আহমেদ সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন- পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. দীল আফরোজা বেগম, বাংলাদেশ অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিলের দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. গোলাম শাহি আলম এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও সংশ্লিষ্টরা।

চট্টলার খবর/মুক্তা

 

 

এই বিভাগের আরও খবর