chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

১৪ বছরে পা জোড়া থেকে আলাদা সেই মণি-মুক্তা

ডেস্ক নিউজঃ জোড়া লাগানো অবস্থা থেকে আলাদা হওয়া শিশু মণি-মুক্তার কথা মনে আছে নিশ্চয়ই। দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার শতগ্রাম ইউনিয়নের পালপাড়া গ্রামের জয় প্রকাশ পাল ও কৃষ্ণা রানী পাল দম্পতির সন্তান তারা। জন্মের পর যাদের অভিশপ্ত জীবনের ফসল বলা হতো, সেই দুই শিশু আজ সোমবার ১৪ বছরে পা দিচ্ছে। 

 

মণি-মুক্তা দুজনই এখন স্থানীয় ঝাড়বাড়ী দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। গত দুই বছর করোনা পরিস্থিতির কারণে ঘরোয়া পরিবেশে তাদের জন্মদিন উদযাপন করা হয়েছে। তবে এ বছর বিদ্যালয়ের শিক্ষক, মণি-মুক্তার বন্ধুবান্ধবসহ প্রতিবেশী ও গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে কেক কেটে জন্মদিন উদযাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন তাদের বাবা জয় প্রকাশ পাল।

 

জয় প্রকাশ পাল জানান, মণি ও মুক্তা সুস্থ এবং ভালো আছে। লেখাপড়ার পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে নাচ শিখছে। উপজেলায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে বেশ সুনাম কুড়িয়েছে তারা। জন্মদিনে দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়ে মণি-মুক্তা জানায়, তারা চিকিৎসক হয়ে মানুষের সেবা করতে চায়। দেশবাসীর দোয়া এবং সহযোগিতা পেলে অবশ্যই স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে তারা।

 

পার্বতীপুর ল্যাম্ব হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ২০০৯ সালের ২২ আগস্ট জোড়া লাগা অবস্থায় মণি-মুক্তার জন্ম দেন কৃষ্ণা রানী পাল। পরে রংপুরের চিকিৎসকরা ঢাকা শিশু হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে যমজ দুই বোনকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আলাদা করার পরামর্শ দেন। তাঁদের পরামর্শে ২০১০ সালের ৩০ জানুয়ারি ঢাকা শিশু হাসপাতালে মণি-মুক্তাকে ভর্তি করা হয়। ওই বছর ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা শিশু হাসপাতালে শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. এ আর খানের সফল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মণি-মুক্তা আলাদা হয়। বাংলাদেশের চিকিৎসাসেবায় সৃষ্টি হয় এক নতুন ইতিহাস।

 

মণি-মুক্তার বাবা জয় প্রকাশ পাল বলেন, ‘সে সময় গ্রামের মানুষ এটাকে অভিশপ্ত জীবনের ফসল বলে প্রচার করতে থাকে। সমাজের নানা কুসংস্কারে প্রায় একঘরে হয়ে পড়ি। সমাজের নানা অপবাদে জোড়া লাগা সন্তান নিয়ে গ্রামে আসিনি। ’তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন চিকিৎসকের দ্বারে ঘুরতে থাকি তাদের স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাওয়ার জন্য। আমাদের স্বপ্ন বাস্তব হয় ডা. এ আর খানের জন্য। ’মণি-মুক্তার মা কৃষ্ণা রানী পাল বলেন, ‘আমরা সব কষ্ট ভুলে ওদের চিকিৎসক হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। ’

ইহ/চখ

এই বিভাগের আরও খবর