chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

চট্টগ্রামে ডাকাতদের হাতে অত্যাধুনিক মারণাস্ত্র একে-৪৭

সাইফুদ্দিন মুহাম্মদ,বিশেষ প্রতিনিধিঃ চট্টগ্রামে ডাকাতদের হাতে মিলছে কালাশনিকভ সিরিজের অত্যাধুনিক মারণাস্ত্র একে-৪৭ রাইফেল। খুন, অপহরণ, চাঁদাবাজি এবং আধিপত্য বিস্তারের জন্যই এসব অস্ত্রের মজুদ গড়ে তোলে সন্ত্রাসী গ্রুপগুলো। তা বিভিন্ন দেশে সেনাবাহিনীতে সবচেয়ে ব্যবহূত একে-৪৭ আগ্নেয়াস্ত্রটি চট্টগ্রামে ডাকাতির মতো ঘটনায় ব্যবহার হচ্ছে।

গত মঙ্গলবার চট্টগ্রামের রাউজানের নোয়াপাড়া থেকে জেলা পুলিশ ৩ ডাকাতকে গ্রেফতার করে। তাদের কাছে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন অস্ত্রের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি অত্যাধুনিক দুটি একে-২২ রাইফেল উদ্ধার করে। এতে জনগণের পাশাপাশি প্রশাসনও উৎকণ্ঠিত।

চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার এসএম রাশিদুল হক বলেন, দীর্ঘ সময় পালাতক থাকা এসব সন্ত্রাসী এখন সংগঠিত হয়ে ডাকাতিসহ অপরাধ কর্মের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। পুলিশ তাদের অবস্থান সনাক্ত করে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করতে সমর্থ হয়। তাদের কাছ থেকে একে-৪৭ ছাড়াও ইতালির তৈরি একটি পিস্তল, একটি থ্রি নট থ্রি রাইফেল, একটি একনলা বন্দুক এবং একটি এলজি উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতার করা ডাকাতরা হছেন- দক্ষিণ রাউজানের নোয়াপাড়া ইউনিয়নের রাজাপাড়ার গোলাম হোসেনের ছেলে মো. নুরুল আবছার (৪৩), একই ইউনিয়নের আবুল কাশেমের ছেলে কামরুল হাসান টিটু (৫৫) ও হাটহাজারীর কুয়াইশ এলাকার কামাল উদ্দিনের ছেলে গিয়াসউদ্দিন বাবলু ওরফে সাদ্দাম (৩০)।

পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার রশিদুল হক জানান, ‘বিদেশী এই অস্ত্রগুলো তাদের হাতে কিভাবে এলো সেটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এদের পেছনে অন্য কারও সংশ্লিষ্টতা আছে কি-না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এরআগে ২০২১ সালের ৭ জুলাই বায়েজিদ বোস্তামী থানা পুলিশ সন্ত্রাসী ম্যাক্সনের একটি একে-৪৭ রাইফেল, ২৭ রাউন্ড গুলি; একটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করে।

একই বছর ১৩ সেপ্টেম্বর পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতে সেনাবাহিনীর অভিযানে সন্ত্রাসীদের সাথে গুলিবিনিময় শেষে দুটি একে-৪৭ রাইফেল, দুটি ম্যাগাজিন ও ১৩ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়।

অস্ত্র বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, একে-৪৭ ও একে-২২ ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র সচরাচর আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারাই ব্যবহার করতে পারেন। সাম্প্রতিক সময়ে সন্ত্রাসী ও ডাকাতরা এমন অস্ত্র ব্যবহার ভাবিয়ে তুলেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে। এ ধরনের অস্ত্র যেন চট্টগ্রামে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য সতর্ক রয়েছে পুলিশ প্রশাসন।

আকারে ছোট এ অস্ত্রটি সহজেই বহন করতে পারে বলে এটি বহনের সময় খুব সহজে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখকে ফাঁকি দেয়া সম্ভব।
ইন্টারনেট গেটে দেখা যায়, কালাশনিকভ যে স্বয়ংক্রিয় রাইফেলটি উদ্ভাবন করেন, তা বিশ্বের সবচেয়ে ব্যবহূত একটি আগ্নেয়াস্ত্র। তাঁর নামেই এটির নামকরণ হয়েছিল। এর নকশাও খুবই সাদামাটা আর এটি তৈরি করতে খরচও খুব কম।এ ছাড়া অস্ত্রটির রক্ষণাবেক্ষণও সহজ। বিশ্বে বর্তমানে ১০ কোটিরও বেশি কালাশনিকভ রাইফেল ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। একে-৪৭ রাইফেলটিতে মাত্র আটটি নড়াচড়া করানো সম্ভব এমন অংশ রয়েছে। এই রাইফেলটির অংশগুলো খুলে মাত্র ৩০ সেকেন্ডেই তা আবারও জোড়া লাগানো সম্ভব। অস্ত্রটি বিভিন্ন প্রতিকূল পরিবেশেও ব্যবহার করা যায়। ২০০৪ সালে বিশ্বকে বদলে দিয়েছে এমন ৫০টি পণ্যের তালিকা প্রকাশ করেছিল প্লে বয় ম্যাগাজিন, যেখানে স্থান করে নিয়েছিল একে-৪৭। ধ্রুপদি নকশার জন্য লন্ডনের ডিজাইন মিউজিয়াম ২০১১ সালে যেসব পণ্য নির্বাচন করেছিল তার একটি ছিল একে-৪৭।

এই বিভাগের আরও খবর