chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

দক্ষিণ চট্টগ্রামে পাহাড়ে পাহাড়ে পেয়ারা বন্যা

সাইফুদ্দিন মুহাম্মদ, বিশেষ প্রতিনিধি : দক্ষিণ চট্টগ্রামের পটিয়া, চন্দনাইশ ও বোয়ালখালীতে যেখানে সেখানেই পেয়ারা বাগান। দেশের বেশি ভাগ পেয়ারা ফলন হয় এসব এলাকায়। প্রতিবছর পেয়ারা বাজারকে কেন্দ্র করে প্রায় শত কোটি টাকার বাণিজ্য হয় । এবারও জমে উঠেছে পেয়ারা বাজার। চলছে জমজমাট বিকিকিনি ।

পটিয়া ও চন্দনাইশ কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, প্রতিবছর প্রায় ৩ হাজার একর জমিতে পেয়ারা চাষ হয় । এতে প্রায় ২০ হাজার ছোট-বড় বাগান বয়েছে । বোয়ালখালী উপজেলার রত্তনপুর-করলেডঙ্গা এলাকা থেকে শুরু কনর পটিয়া উপেজলা হয়ে চন্দনাইশের দোহাজারী পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে পেয়ারা চাষ হচ্ছে । তারমধ্যে চন্দনাইশের এলাহাবাদ , লট এলাহাবাদ, ছৈয়দাবাদ, জোয়ারা,লালুটিয়া, জামিরজুরি, পটিয়া উপজেলার খরনা, কচুয়াই, উত্তর শ্রীমাই, হাইদগাঁও, কেলিশহর, রত্তনপুর, বোয়ালখালী উপজেলা করলডেঙ্গা, শ্রীনগরে প্রচুর পেয়ারা বাগান রয়েছে। যেখানে বাণিজ্যিক ভাবে পেয়ারার চাষ হয়। এছাড়া দক্ষিণ চট্টগ্রামের ঘরে ঘরে রয়েছে পেয়ারা গাছ।

সংশ্লিষ্ট এলাকার কৃষি অফিস সূত্র জানা যায়, প্রতি বছর বাগান মালিকরা প্রায় ৫০ কোটি টাকা আয় হয়। এর সাথে পরিবহন, শ্রমিক, আড়তদাররাও প্রচুর আয় করেন এখাত থেকে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশে ২৩টি স্পটে প্রতিদিন পেয়ারার বাজার বসছে। পটিয়ার কমলমুন্সিহাট, খরনা রাস্তার মাথা, খরনা রেলস্টেশন সংলগ্ন হাট, পটিয়ার থানা হাট, কামালবাজার, মুন্সেফ বাজার, শান্তির হাট, কেলিশহর দারগা হাট, হাইদগাঁও, থ্রিপুরা, দিঘি হাট, চন্দনাইশের রৌশনহাট, বাগিচা হাট, গাছবাড়িয়া কলেজ বাজার, বাদামতল, দোহাজারি পেয়ারা বাজার, সাতকানিয়া কেরানি হাট প্রসিদ্ধ। এ সময় প্রতিটি হাট-বাজার অর্ধলাখ টাকার নিলাম ডাক হয়। এ ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছে প্রায় ২০ হাজার মানুষের জীবন ও জীবিকা। প্রতিদিন কয়েকশ পেয়ারা বোঝাই ট্রাক, ভ্যান দক্ষিণ চট্টগ্রাম থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে। দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় এসব পেয়ারার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

পেয়ারা ব্যবসায়ী আহমদ নূর বলেন, দক্ষিণ জেলায় দুই জাতের পেয়ারা চাষ হয়। তারমধ্যে কাজী পেয়ারা ও কাঞ্চন পেয়ারা প্রসিদ্ধ । এছাড়া সাহেব পেয়ারা ও মাথা পেয়ারাও রয়েছে। গুণগত মানের দিক দিয়ে এসব পেয়ারার সুনাম রয়েছে দেশব্যাপী।পেয়ারার ওজন সর্বোচ্চ ১ কেজি ও সর্বনিন্ম ২৫ গ্রাম পর্যস্ত হয়ে থাকে। প্রকৃতিগত কারণে পেয়ারাগুলোর স্বাদ সুমিষ্ট ও ঘ্রাণ মোহনীয় এবং দেখতে সুন্দর।

পেয়ারা চাষী আবুল কাশেম, শফি ও জাহাঙ্গীর আলম জানান, আগে পেয়ারা চাষে প্রচুর উপার্জন হতো । এখন দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাওয়ায় পেয়ারা চড়া দামে বিক্রি করেও পোষায় না।
তারা আরও বলেন, দক্ষিণ চট্টগ্রামে পেয়ারা ভিত্তিক একটি ফ্রুটস প্রিজারভেশন প্লান কমপ্লেক্স করা গেলে মাল্টি জুস এন্ড জেলীস্‌ জাতীয় কারখানা গড়ে তোলা সম্ভব হতো। এতে পেয়ারা চাষিরা উপকৃত হতো।

 

আইএইচ/চখ

এই বিভাগের আরও খবর