পেশাদার মোবাইল চোর চক্রের ৬ সদস্য গ্রেপ্তার
ডেস্ক নিউজ: চট্টগ্রামে পেশাদার মোবাইল চোর চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার(ডিবি) সদস্যরা।
শুক্রবার (১২ আগস্ট) বিকেলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) উত্তর বিভাগের কার্যলায়ে এক সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা উত্তর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ আলী হোসেন এসব কথা জানিয়েছেন।
গ্রেফতারকৃত ৬ জন হলেন- মো. খোরশেদ আলম (৩২), মো. কামাল (৩২), মো. সুরুজ মিয়া (৩২), জয় চৌধুরী (২৫), মো. বাবু (৩২) ও মো. তানভীর হাসান (২৫)।
এই চক্রের সদস্যরা ৩ ধাপে মোবাইল চুরি, আইএমআইএ নম্বর পরিবর্তন এবং চোরাই সেসব মোবাইল আবার মার্কেটে বিক্রির কাজ সম্পন্ন করে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে ডিবি পুলিশ। এই চক্রের কাছ থেকে ১৫৬টি চোরাই মোবাইল, ৭টি ল্যাপটপ, আইএমইএই নম্বর পরিবর্তনের কাজে ব্যবহৃত ৮টি ডিভাইস, ২টি ফ্লাশিং ডিভাইস উদ্ধার করেছে ডিবি পুলিশের উত্তর বিভাগ।
সংবাদ সম্মলনে উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ আলী হোসেন বলেন, ‘বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে নগরের পুরাতন রেলস্টেশন থেকে খোরশেদ ও কামালকে ৪টি মোবাইলসহ গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায় চোরাই মোবাইলগুলো রিয়াজুদ্দিন বাজারের একটি দোকানে বিক্রি করে দেয় তারা।’
পরে খোরশেদ ও কামালের তথ্যের ভিত্তিতে নগরের রিয়াজউদ্দীন বাজার আব্দুল লতিফ মার্কেটের ষষ্ঠ তলা থেকে সুরুজ মিয়া, জয় চৌধুরী, মো.বাবুকে গ্রেফতার করে ডিবি। ষষ্ঠ তলার ১৫৪ নম্বর রুম থেকে ১৬টি চোরাই মোবাইল উদ্ধার করা হয়।
চোরাই মোবাইলগুলো আব্দুল লতিফ মার্কেট থেকে চলে যায় দেওয়ান বাজারে। সেখান থেকে আইএমইআই পরিবর্তন করে সেগুলো আবার বিক্রয়ের জন্য বিভিন্ন মার্কেটে পৌঁছে দেয়ার কাজ করে সুরুজ, জয় ও বাবু। আর দেওয়ান বাজারে আইএমইআই চেঞ্জ করার কাজ করে মোঃ তানভীর হাসান। যিনি নগরের একটি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে ডিপ্লোমা পাস বর্তমানে বিএসসি পড়ছেন।
উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ আলী হোসেন বলেন, ‘নগরের দেওয়ান বাজার চোরাই মোবাইলসমূহ আইএমইআই পরিবর্তন করে মো. তানভীর হাসান। আইএমইআই পরিবর্তন করে মোবাইলসমূহ মার্কেটে বিক্রি করে। তানভীরের কাছ থেকে ১৩৬টি মোবাইল,আইএমইএই নম্বর পরিবর্তনের কাজে ব্যবহৃত ৮টি ডিভাইস, ২টি ফ্লাশিং ডিভাইস ও ৭টি ল্যাপটপ উদ্ধারসহ তাকে গ্রেফতার করা হয়।’
গোয়েন্দা কর্মকর্তা মুহাম্মদ আলী হোসেন বলেন, ‘তানভীরকে যখন গ্রেপ্তার করি তখনো মোবাইলের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তনের কাজ করছিল তানভীর। তার বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে ল্যাপটপ ওপেন থাকলে মাত্র ৩-৫ সেকেন্ডের মধ্যেই আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করে ফেলে। যদি ল্যাপটপ ওপেন না থাকে তাহলে ১৫-২০ মিনিট সময় লাগে। এছাড়া যেকোনও আন্ড্রয়েড মোবাইলের লক খুলে আবার বিক্রি করতো। তানভীর গত ৩-৪ বছর যাবত আইএমইএই নম্বর পরিবর্তনের কাজ করে। মাঝখানে কিছুদিন আইএমইএই নম্বর পরিবর্তনের কাজ বন্ধ রেখেছিল। পুনরায় টাকার লোভে আইএমইএই নম্বর পরিবর্তনের কাজে জড়িয়ে পড়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘অনেকগুলো মোবাইল আছে যেগুলোর আইএমইআই নম্বর চেঞ্জ করার আগেই আমরা জব্দ করেছি। সেগুলো সহজেই মালিকের কাছে ফিরিয়ে দেয়া যাবে। যদি প্রকৃত মালিক পাওয়া যায়।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ডিবি গোয়েন্দা উত্তর বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার উপ-পুলিশ কমিশনার মো. জহিরুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার মো. কামরুল হাসান ও পরিদর্শক মোক্তার আহমেদ।