chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

শোক দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আলোচনা সভা

ডেস্ক নিউজঃপ্রতিমন্ত্রী মর্যাদাপ্রাপ্ত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে আমরা মহান স্বাধীনতা অর্জন করেছি। যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা মেনে নিতে পারেনি তারাই ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করেছে। স্বাধীনতা বিরোধী খুনী জিয়া-মোস্তাকসহ রাজাকার-আল বদরেরা ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলতে চেয়েছিল। ইতিহাসের এ বর্বরতম হত্যাকান্ডের মধ্যে দিয়ে বাঙ্গালী জাতির ইতিহাসে এক কলঙ্কময় অধ্যায় যুক্ত হয়েছিল। কাগজে, পাথরে নাম লিখেলে তা ছিঁড়ে যায়, মুছে যায়, কিন্তু বাঙ্গালীর হৃদয়ে লেখা ‘শেখ মুজিবের নাম’ কখনো মুছে ফেলা যাবেনা। জাতির পিতা ইতিহাস সৃষ্টি করেনা, তিনি নিজেই ইতিহাস। নতুন প্রজন্মকে মহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাসে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। মহান মুক্তিযুদ্ধ ও জাতির পিতার আদর্শ-উদ্দেশ্য বুকে ধারণ করে তাঁরই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের মহাসড়কে সবাইকে সামিল হতে হবে।

আজ ৯ আগস্ট মঙ্গলবার বিকেলে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলা ইউনিট কমান্ডের যৌথ উদ্যোগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে নগরীর আন্দরকিল্লাস্থ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন চত্ত¡রে আয়োজিত ৫ম দিনের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সাহাবউদ্দিন মজুমদার রচিত ‘বাঙালা হতে বাংলাদেশ’ বিষয়ক মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক আলোকচিত্র প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন তিনি।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে বাংলাদেশ অনেক আগেই উন্নয়নের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যেত। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীরা তা হতে দেয়নি। তাঁরই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর পিতার সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছেন। আমাদের দেশ তলাবিহীন ও মিছকিনের দেশ নয়। জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ উন্নয়নের রোল মডেল। ৭৫’র ১৫ আগস্ট দেশবিরোধী পরাজিত শক্তি বঙ্গবন্ধুকে যেভাবে হত্যা করে দেশের রূপ পাল্টে দিয়েছে ঠিক বর্তমানে রাজাকার-আলবদরের দল বিএনপি-জামাত চক্র দেশের দৃশ্যনীয় উন্নয়ন কর্মকান্ড বাধাগ্রস্ত করতে বন্ধুবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকেও একই কায়দায় হত্যার জন্য আবার নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। তাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ সজাগ থাকতে হবে।

অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা সাবেক নির্বাচন কমিশনার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আবদুল মোবারক বলেন, বর্তমান সরকারের শাসনামলে যুদ্ধাপরাধী ও বঙ্গবন্ধুর খুনীদের উপযুক্ত বিচার হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর খুনী যারা এখনো বিদেশে পলাতক রয়েছে তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে। দেশের স্বাধীনতা বিরোধী ও বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারের হত্যার মদদদাতাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনতে হবে। শোককে শক্তিতে রূপান্তরের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের মহাসড়কে সামিল হতে হবে।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধু একমাত্র নেতা যিনি সমগ্র বাঙ্গালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে পেরেছিলেন। তিনি ছিলেন অসাম্প্রদায়িক। আজ তাঁরই সুযোগ্য কন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও উদ্দেশ্য হৃদয়ে ধারণ করতে হবে। সমস্ত ভেদাভেদ ভূলে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ২০৪১ সালে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র রুখে দিতে মহান মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল শক্তিকে সজাগ থাকতে হবে।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে জানার কোন শেষ নেই। তিনি অত্যন্ত দুরদর্শী নেতা ছিলেন। দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠাই তিনি আজীবন যুদ্ধ করে গেছেন। যে ব্যক্তি আজীবন দেশের স্বাধীনতা ও এদেশের মানুষের জন্য ত্যাগ করে গেছেন তাঁেকই সপরিবারে নিষ্ঠুরতম হত্যাকান্ডের শিকার হতে হয়েছে। এ বর্বরতম হত্যাকান্ডের পর ষড়যন্ত্র থেমে নেই। বঙ্গবন্ধুকে যারা হত্যা করেছে তারাই আজ ইতিহাস বিকৃত করছে। নতুন প্রজন্মের কাছে মহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানাতে হবে। সমস্ত ভেদাভেদ ভূলে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র রুখে দিতে মহান মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সকল শক্তিকে সজাগ থাকতে হবে।

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিট কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদের সভাপতিত্বে ও জেলা সংসদের সহকারী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম আলাউদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত শোক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রতিমন্ত্রী মর্যাদাপ্রাপ্ত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ রেজাউল করিম চৌধুরী। প্রধান বক্তা ছিলেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আবদুল মোবারক। বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ বদিউল আলম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিটের ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদুল হক চৌধুরী সৈয়দ। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন মহানগর ইউনিটের সহকারী কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সাধন চন্দ্র বিশ্বাস, মিরসরাই কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা কবির আহমদ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড চট্টগ্রাম জেলা কমিটির আহবায়ক ইঞ্জিনিয়ার মশিউজ্জামান সিদ্দিকী পাভেল, মহানগর কমিটির সদস্য সচিব কাজী মুহাম্মদ রাজীশ ইমরান, যুগ্ম আহবায়ক মোঃ সাজ্জাদ হোসেন ও সদস্য আশরাফুল হক চৌধুরী।

আগামীকাল ১০ আগস্ট অনুষ্ঠানের শেষ দিন বিকেল ৪টায় অনুষ্ঠিতব্য আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি থাকবেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান খান এমপি। প্রধান বক্তা থাকবেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোছলেম উদ্দিন আহমদ এমপি। বিশেষ অতিথি থাকবেন সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদের যুগ্ম আহবায়ক  বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব উদ্দিন আহমদ বীর বিক্রম, চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়, সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সদস্য সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা ওসমান আলী ও বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা এ বি এম সুলতান আহমদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিট কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আহমদ।

চখ/জুইম

এই বিভাগের আরও খবর