নিজস্ব প্রতিবদক: আমার ভাইকে নৃশংসভাবে খুন করার পরও প্রতিনিয়তই পরিবারের সবাইকে হত্যার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে বলে জানান টেকনাফে খুন হওয়া লবণচাষী ও সমাজকর্মী নুরুল হক ভুট্টোর ভাই মো. নুরুল ইসলাম নুরু।
বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও পরিবারের সদস্যদের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে প্রশাসনের সহায়তা কামনা করেন তিনি। এসময় তিনি বলেন, ফেসবুক লাইভে এসে মামলার ৫ নম্বর আসামি তৌকির আহমদ আমাদের হত্যার হুমকি দিয়েছে।
আসামিরা হলেন- একরাম প্রকাশ একরাম ডাকাত (৩৫), আব্দুল আমিন (৩২), হাজী ফজল আহমদ (৬৫), আলী আহম্মদ (৬০), আবু বকর প্রকাশ ভক্কো (৩০), রহীমুল্লাহ (২৮), আব্দুল খালেক (২৮), মো. আবদুল্লাহ (৪০), বশির আহমদ (৪৫), সাইফুল ইসলাম, আব্দুর রহমান (৩৫), আব্দুর রাজ্জাক (৩৮), মোহাম্মদ রিদুয়ান (২৮), তৌকির আহমদ (৩০), নুরুল আলম(৪০), মো. সাদ্দাম (৩০), ফয়সালসহ অজ্ঞাতনামা ৮-১০ জন।
নুরুল ইসলাম নুরু ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাবরাং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নূর হোসেনের বাড়িতে ১৫ মে একটি সালিশি বৈঠকে যোগ দিয়ে ফেরার পথে বড় ভাই নুরুল হক ভুট্টোকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৮ নম্বর ওয়ার্ডে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের মেম্বার নির্বাচনের বিরোধকে কেন্দ্র করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত টেকনাফের চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ী একরামের নেতৃত্বে আমার ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। আমার ভাই জীবন বাঁচাতে দৌড়ে গিয়ে মসজিদে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দিলেও হামলাকারীরা চাইনিজ কুড়াল দিয়ে মসজিদের দরজা কেটে টেনে হিঁচড়ে বের করে কুপিয়ে হত্যা করে। হত্যাকারীরা আমার ভাইয়ের ডান পা কেটে কাঁধে নিয়ে পৈশাচিকভাবে বিজয় উল্লাস করতে করতে চলে যায়। আমার ভাইকে দাফন করা হয় এক পা ছাড়া।
আমার ভাইয়ের পরিচ্ছন্ন ইমেজ ছিল যার ফলশ্রুতিতে নির্বাচনে চাচাতো ভাই বিপুল ভোটে জয়ী হয়। তখন থেকেই নুরুল হক ভুট্টোর ওপর ক্ষোভ হয়েছিল একরাম ও তার বাহিনীর।স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালদের আহ্বানে ২০২০ সালে যে ১০২ জন ইয়াবা ব্যবসায়ী আত্মসমর্পণ করেছিল তাদের মধ্যে একরাম ছিল ২ নম্বরে। আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করলেও বাস্তবে একরামের মাদক ব্যবসা ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম এখনো চলছে।
তিনি বলেন, সামাজিকভাবে একরামের বিভিন্ন অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার অপরাধে আমার ভাই ও আমার পরিবারকে তার শিকার হতে হয়েছে। একরাম ও তার অনুগত সন্ত্রাসীদের নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার আমরা। এই অবস্থায় হত্যাকাণ্ডের আসামিরা গ্রেপ্তার না হওয়ায় ও তাদের হুমকিতে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় আছি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহত ভুট্টোর ভাই নুরুল ইসলাম নুরু। উপস্থিত ছিলেন নিহতের মা আবেদা খাতুন, স্ত্রী নাজনীম সুলতানা,কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন সরোয়ার কাবেরী, বড় ভাইয়ের স্ত্রী লাইলা বেগম, ছোট ভাই নুরুল আবছার খোকন ।
আইএইচ/মআ/চখ