chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

বিমানমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয়ে চাকরি দেয়ার প্রতারণা

ডেস্ক নিউজ: বাংলাদেশ বিমানে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রায় শতাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া মমতাজ বেগম (৪০)নামে  এক নারীকে আকবর শাহ থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই নারীর কাছ থেকে বিমানমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয়ে অভিনব পন্থায় প্রতারণার তথ্য উদঘাটন করেছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।

সোমবার (২৫ জুলাই) দুপুরে  নন্দন আবাসিক এলাকা থেকে ওই নারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) মোহাম্মদ আলী হোসেন।

চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার মাইটভাঙ্গা ইউনিয়নের শিবেরহাট গ্রামের ইব্রাহিম খলিলের স্ত্রী গ্রেফতার মমতাজ বেগম। তিনি নগরের নন্দন আবাসিক এলাকার ১০৩ নম্বর ভবনে ভাড়া থাকতেন বলে জানা যায়।

সিএমপির উপ পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা-উত্তর) মোহাম্মদ আলী হোসেন বলেন, ‘গত দুই বছর ধরে কখনো বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পরিচালক, কখনো বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রীর আত্মীয়, কখনো সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে বিমানে চাকরি দেওয়ার কথা বলে মমতাজ শতাধিক চাকরি প্রত্যাশীর কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এ ধরনের কয়েকটি লিখিত অভিযোগ আমাদের কাছে জমা পড়ে। আমরা তদন্তে নেমে মমতাজের অবস্থান শনাক্ত করে তাকে গ্রেফতার করি। তাকে ডিবি কার্যালয়ে আনার পর থেকে গেটে ভুক্তভোগীদের ভিড় জমে যায়। তারা সবাই মমতাজের প্রতারণার শিকার হয়েছেন।তবে মমতাজ একাই এই প্রতারণার সঙ্গে যুক্ত নন বলে আমাদের ধারণা। সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য হয়ে সম্ভবত সে কাজ করে। তার সঙ্গে বাংলাদেশ বিমানের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত কি না সেটা অনুসন্ধান চলছে।’

এছাড়াও জানা যায়, দেশের বিভিন্ন বিমানবন্দর এবং বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসে এয়ার হোস্টেজসহ বিভিন্ন পদে লোভনীয় চাকরির অফার দিতেন মমতাজ। বিশ্বাস জন্মানোর জন্য টাকা নেওয়ার আগে তাদের চাকরিতে যোগদানের ফরম, অঙ্গীকারনামা, পরিচয় পত্র এবং বিমানের নির্ধারিত পোশাক-ব্যাচ সরবরাহ করা হত।এরপর বিমানে চড়িয়ে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিয়ে যেত প্রশিক্ষণের উদ্দেশে। সেখানে অজ্ঞাত কয়েকজন ব্যক্তিকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ও বিমান মন্ত্রণালয়ে কর্মরত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ প্রত্যাশীদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হত। চাকরি প্রত্যাশীরা যখন ভাবতেন তাদের চাকরি নিশ্চিত, তখন তারা প্রতারণার আসল ফাঁদে পা দিতেন। মমতাজ তাদের একেকজনের কাছ থেকে আড়াই লাখ থেকে সর্বোচ্চ ২১ লাখ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়েছেন বলে আমরা তথ্য পেয়েছি। কয়েকজনের কাছ থেকে একসঙ্গে টাকা আদায়ের পর মোবাইল বন্ধ করে দিতেন কিংবা সিম পাল্টে ফেলতেন। একইভাবে বাসাও পরিবর্তন করে ফেলেন। নিরীহ চাকরি প্রত্যাশীদের মনে বিশ্বাস জন্মানোর আরেকটি কারণ হচ্ছে, তিনি সবসময় ভিআইপি স্টাইলে বিলাসবহুল জীবনযাপন করতেন। দেখে মনে হতো, তিনি আসলেই উচ্চপদস্থ কেউ।

নগর গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, প্রতারণার অভিযোগে মমতাজের বিরুদ্ধে নগরের বন্দর থানায় দায়ের হওয়া দু’টি মামলা আদালতে বিচারাধীন আছে। এসব মামলায় ২০২০ সালে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছিল। কয়েক মাসের মধ্যে জামিনে বেরিয়ে মমতাজ বেগম আবারও প্রতারণা শুরু করেন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে সন্দ্বীপ থানায়ও দু’টি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা আছে বলে জানা যায়।

আইএইচ/চখ

এই বিভাগের আরও খবর