chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

‘সংস্কৃতি খাতে বরাদ্দ বাড়ার দাবী নয়, এটা আমদের অধিকার’

নিলা চাকমা:  ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেটে সংস্কৃতি খাতে ৬৩৭ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে৷ পরিচালনা খাতে দেওয়া হয়েছে ৩৯০ কোটি টাকা এবং উন্নয়ন খাতে ২৪৭ কোটি টাকা। গত বছর সংস্কৃতি খাতে বরাদ্দ ছিল ৫৮৭ কোটি টাকা। যা পরবর্তীতে সংশোধন করে ৫৭৮ কোটি টাকা করা হয়। গতবারের তুলনায় এবার বরাদ্দ বেড়েছে ৫৯ কোটি টাকা। তবে প্রস্তাবিত এ বাজেট নিয়ে চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিকর্মীরা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।  

কেন্দ্রীয় কর্মীদের সংস্কৃতি খাতে জাতীয় বাজেটের ন্যূনতম ১ শতাংশ বরাদ্দের দাবীর সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম বাবু চট্টলার খবরকে বলেন, সবে মাত্র প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের ধাক্কা সামলিয়ে ওঠেছি। এ সময়টাতে আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখে পড়েছিলো সাংস্কৃতিকর্মীরা। সংগঠন ও শিল্পীদের ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য বাজেটের ন্যূনতম ১ শতাংশ বরাদ্দের দাবী আমাদের। পার্বত্য অঞ্চলসহ চট্টগ্রামে বছরব্যাপী যেসব উৎসব হয়ে থাকে সেখানে সার্বিক সহযোগিতা খুব প্রয়োজন। সুতরাং আমরা মনে করি চট্টগ্রামে আনাচে কানাচে সাংস্কৃতিক সংগঠন আরও বাড়ানো হোক। সেই সাথে সরকারের অনুদানও সংগঠনগুলোতে বাড়ানো হোক। যেসব সাংস্কৃতিককর্মীরা আর্থিকভাবে অসচ্ছল তাদের সরকারি সহায়তা দিয়ে মঞ্চে ফেরাতে হবে। তাহলে ভালো ভালো কাজ হবে।

তিনি আরও বলেন, জাতীয় পর্যায়ের সবগুলো অনুষ্ঠান ঢাকা কেন্দ্রিক হয়ে থাকে। সেসব কিছু অনুষ্ঠান যদি চট্টগ্রামে আনা হয় আমেদের শিল্পীরা অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে, সেই সাথে আর্থিকভাবেও উপকৃত হবে। শেষে চট্টগ্রাম মুসলিম ইনস্টিটিউটের কাজ অতি দ্রত শেষ করার দাবী জানান তিনি।

সাংস্কৃতিককর্মী মো. খালেদ হেলাল দুঃখ প্রকাশ করে চট্টলার খবরকে বলেন, প্রতি বছরই বাজেটের বরাদ্দ চট্টগ্রাম নয় পুরো বাংলাদেশের সংস্কৃতিকর্মীদের খুশি করতে ব্যর্থ। পিছিয়ে পড়া সংস্কৃতি খাতে সরকারের কোন ভ্রক্ষেপ নেই। উচ্চ মহলে যারা রয়েছেন তারাও সরকারকে বলার প্রয়োজন বোধ করেনা। এভাবে দিন দিন পিছিয়ে পড়ছে আমাদের খাতটি। এতে ভালো কাজ হচ্ছে না, দক্ষ কর্মীরা কাজ করতে অনীহা প্রকাশ করছে। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা বাড়িয়ে অতি দ্রত এ সমস্যা সমাধানের দাবী করেন।

সেই সাথে সংস্কৃতি খাতে জাতীয় বাজেটের ন্যূনতম ১ শতাংশ বরাদ্দের জোর দাবী জানান তিনি।

নাট্যকর্মী সাবিরা সুলতানা বীণা বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি সমাজ নষ্টের পথে হাঁটছে। স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে সংস্কৃতি চর্চা আজ কোথাও নেই, এ অধঃপতনে সরকারের বাজেটও অনেকাংশে দায়ী। আমদের সময় স্কুলের রুটিনেই ছিলো গান, নাচ, খেলাধুলা এবং স্কুল পরিষ্কার করার আলাদা আলাদা সময়সূচি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকেই বোধের জায়গাগুলো তৈরী করতে হবে, তার জন্য দরকার পড়বে বাজেটের। সংস্কৃতি মানে গান-নাচ নয়, সংস্কৃতি মানে জীবনধারা। সে জীবনধারা উন্নয়নে দরকার বাজেটের।

বরাদ্দ বাড়ার দাবীর প্রসঙ্গে বলেন,  এটা আমাদের দাবী নয়, সাংস্কৃতিকর্মীদের অধিকার। আমরা যারা এতটা বছর ধরে কাজ  করে সংস্কৃতির জায়গাটা টিকিয়ে রেখেছি। তবে অনেক কিছু হারিয়ে গেছে, যাত্রার আলো নিভে গেছে, থিয়েটার কিংবা বিভিন্ন সংগঠনগলো নিভে না যাওয়ার আগে এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে।

নুর/মআ/চখ

এই বিভাগের আরও খবর